Adh-Dhariyat

বিক্ষেপকারী বাতাস

0:00 / 0:00

وَٱلذَّٰرِيَـٰتِ ذَرْوًا

শপথ সেই বাতাসের যা ধূলাবালি উড়ায়,

فَٱلْحَـٰمِلَـٰتِ وِقْرًا

আর যা উঠিয়ে নেয় আর বহন করে ভারী বোঝা,

فَٱلْجَـٰرِيَـٰتِ يُسْرًا

আর যা ধীর ও শান্ত গতিতে বয়ে চলে

فَٱلْمُقَسِّمَـٰتِ أَمْرًا

আর যারা কর্ম বণ্টন করে,

إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَصَادِقٌ

তোমাদেরকে যার ও‘য়াদা দেয়া হয়েছে তা অবশ্যই সত্য।

وَإِنَّ ٱلدِّينَ لَوَٰقِعٌ

কর্মফল দিবস অবশ্যই আসবে।

وَٱلسَّمَآءِ ذَاتِ ٱلْحُبُكِ

বহু পথ বিশিষ্ট আকাশের শপথ।

إِنَّكُمْ لَفِى قَوْلٍ مُّخْتَلِفٍ

(পরকাল সম্পর্কে) তোমরা অবশ্যই রয়েছ মতভেদের মধ্যে।

يُؤْفَكُ عَنْهُ مَنْ أُفِكَ

যারা সেই (সত্য) মানতে ভুল করে তারাই গুমরাহ।

قُتِلَ ٱلْخَرَّٰصُونَ

অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক,

ٱلَّذِينَ هُمْ فِى غَمْرَةٍ سَاهُونَ

যারা অজ্ঞতা ও উদাসীনতার মধ্যে রয়েছে।

يَسْـَٔلُونَ أَيَّانَ يَوْمُ ٱلدِّينِ

তারা জিজ্ঞেস করে- ‘প্রতিফল দিবস কবে হবে?’

يَوْمَ هُمْ عَلَى ٱلنَّارِ يُفْتَنُونَ

(তা হবে সেদিন) যেদিন তাদেরকে আগুনে শাস্তি দেয়া হবে।

ذُوقُوا۟ فِتْنَتَكُمْ هَـٰذَا ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تَسْتَعْجِلُونَ

(তাদেরকে বলা হবে) তোমরা তোমাদের (কৃতকর্মের) শাস্তি ভোগ কর, এটা হচ্ছে তাই যার জন্য তোমরা তাড়াহুড়া করছিলে।

إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّـٰتٍ وَعُيُونٍ

মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাত আর ঝর্ণাধারার মাঝে।

ءَاخِذِينَ مَآ ءَاتَىٰهُمْ رَبُّهُمْ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَبْلَ ذَٰلِكَ مُحْسِنِينَ

তাদের প্রতিপালক যা তাদেরকে দিবেন তা তারা ভোগ করবে, কারণ তারা পূর্বে (দুনিয়ার জীবনে) ছিল সৎকর্মশীল,

كَانُوا۟ قَلِيلًا مِّنَ ٱلَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ

তারা রাত্রিকালে খুব কমই শয়ন করত।

وَبِٱلْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ

আর তারা রাত্রির শেষ প্রহরে ক্ষমা প্রার্থনা করত।

وَفِىٓ أَمْوَٰلِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّآئِلِ وَٱلْمَحْرُومِ

এবং তাদের ধন-মালে আছে যাঞ্ঝাকারী ও বঞ্চিতদের অধিকার (যা তারা আদায় করত)।

وَفِى ٱلْأَرْضِ ءَايَـٰتٌ لِّلْمُوقِنِينَ

নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য পৃথিবীতে আছে নিদর্শন,

وَفِىٓ أَنفُسِكُمْ ۚ أَفَلَا تُبْصِرُونَ

আর (নিদর্শন আছে) তোমাদের মাঝেও, তোমরা কি দেখ না?

وَفِى ٱلسَّمَآءِ رِزْقُكُمْ وَمَا تُوعَدُونَ

এবং আকাশে আছে তোমাদের রিযক আর আছে যার ও‘য়াদা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে।

فَوَرَبِّ ٱلسَّمَآءِ وَٱلْأَرْضِ إِنَّهُۥ لَحَقٌّ مِّثْلَ مَآ أَنَّكُمْ تَنطِقُونَ

আকাশ ও যমীনের প্রতিপালকের শপথ! এ সব অবশ্যই সত্য, এমনই দৃঢ় সত্য যেমন তোমরা (যে কথাবার্তা) বলে থাক (সেই কথাবার্তা বলার ব্যাপারটা যেমন নিঃসন্দেহে সত্য)।

هَلْ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ضَيْفِ إِبْرَٰهِيمَ ٱلْمُكْرَمِينَ

তোমার কাছে ইবরাহীমের সম্মানিত মেহমানদের খবর পৌঁছেছে কি?

إِذْ دَخَلُوا۟ عَلَيْهِ فَقَالُوا۟ سَلَـٰمًا ۖ قَالَ سَلَـٰمٌ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ

যখন তারা তার সামনে উপস্থিত হল তখন বলল, ‘সালাম’। সে উত্তর দিল- ‘সালাম’। (ইবরাহীম মনে মনে ভাবল এদেরকে তো দেখছি) অপরিচিত লোক।

فَرَاغَ إِلَىٰٓ أَهْلِهِۦ فَجَآءَ بِعِجْلٍ سَمِينٍ

তখন সে তাড়াতাড়ি তার ঘরের লোকেদের নিকট চলে গেল এবং একটি মোটাতাজা (ভাজা) বাছুর নিয়ে আসল।

فَقَرَّبَهُۥٓ إِلَيْهِمْ قَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ

অতঃপর সেটিকে তাদের সামনে রেখে দিল এবং বলল- ‘তোমরা খাচ্ছ না কেন?’

فَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةً ۖ قَالُوا۟ لَا تَخَفْ ۖ وَبَشَّرُوهُ بِغُلَـٰمٍ عَلِيمٍ

(যখন তারা খেল না) তখন সে তাদের ব্যাপারে মনে ভয় পেয়ে গেল। তারা বলল- ‘তুমি ভয় পেও না’, অতঃপর তারা তাকে এক জ্ঞানবান পুত্রের সুসংবাদ দিল।

فَأَقْبَلَتِ ٱمْرَأَتُهُۥ فِى صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَقَالَتْ عَجُوزٌ عَقِيمٌ

তখন তার স্ত্রী চিৎকার করতে করতে এগিয়ে আসল। সে নিজের কপালে আঘাত করে বলল ‘(আমি) এক বৃদ্ধা, বন্ধ্যা’ (আমার কীভাবে সন্তান হবে?)

قَالُوا۟ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ ۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْحَكِيمُ ٱلْعَلِيمُ

তারা বলল- ‘‘তোমার প্রতিপালক এ রকমই বলেছেন, তিনি মহা প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ"।

۞ قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا ٱلْمُرْسَلُونَ

ইবরাহীম বলল- ‘ওহে আল্লাহর দূতগণ (ফেরেশতারা)! তোমাদের কাজ কী (এখন)?’

قَالُوٓا۟ إِنَّآ أُرْسِلْنَآ إِلَىٰ قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ

তারা বলল- ‘আমাদেরকে এক অপরাধী জাতির কাছে পাঠানো হয়েছে'।

لِنُرْسِلَ عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن طِينٍ

যেন তাদের উপর মাটির পাথর বর্ষণ করি

مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ لِلْمُسْرِفِينَ

যা তোমার প্রতিপালকের নিকট চিহ্নিত হয়ে আছে সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য।

فَأَخْرَجْنَا مَن كَانَ فِيهَا مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ

সেখানে যারা মু’মিন ছিল আমি তাদেরকে বের করে এনেছিলাম,

فَمَا وَجَدْنَا فِيهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِّنَ ٱلْمُسْلِمِينَ

আমি সেখানে মুসলিমদের একটি পরিবার ছাড়া আর পাইনি।

وَتَرَكْنَا فِيهَآ ءَايَةً لِّلَّذِينَ يَخَافُونَ ٱلْعَذَابَ ٱلْأَلِيمَ

আর তাদের জন্য সেখানে একটা নিদর্শন রেখে দিলাম যারা অত্যন্ত পীড়াদায়ক ‘আযাবের ভয় করে।

وَفِى مُوسَىٰٓ إِذْ أَرْسَلْنَـٰهُ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ بِسُلْطَـٰنٍ مُّبِينٍ

আর মূসার ঘটনাতেও (নিদর্শন আছে) যখন আমি তাকে স্পষ্ট প্রমাণসহ ফেরাউনের কাছে পাঠিয়েছিলাম,

فَتَوَلَّىٰ بِرُكْنِهِۦ وَقَالَ سَـٰحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ

তখন সে তার ক্ষমতার দাপটে মুখ ফিরিয়ে নিল আর বলল- ‘এ লোক একটা যাদুকর না হয় পাগল।’

فَأَخَذْنَـٰهُ وَجُنُودَهُۥ فَنَبَذْنَـٰهُمْ فِى ٱلْيَمِّ وَهُوَ مُلِيمٌ

শেষে আমি তাকে আর তার সৈন্য সামন্তকে পাকড়াও করলাম আর তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। সে ছিল ধিকৃত নিন্দিত।

وَفِى عَادٍ إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ ٱلرِّيحَ ٱلْعَقِيمَ

আর ‘আদ-এর ঘটনাতেও (নিদর্শন আছে)। আমি তাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম অকল্যাণের বাতাস।

مَا تَذَرُ مِن شَىْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا جَعَلَتْهُ كَٱلرَّمِيمِ

তা যা কিছুর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল তাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ ও ধ্বংসস্তুপে পরিণত না করে ছাড়েনি।

وَفِى ثَمُودَ إِذْ قِيلَ لَهُمْ تَمَتَّعُوا۟ حَتَّىٰ حِينٍ

আর সামূদের ঘটনাতেও (নিদর্শন আছে) যখন তাদেরকে বলা হয়েছিল, ‘একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভোগ করে লও।’

فَعَتَوْا۟ عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ فَأَخَذَتْهُمُ ٱلصَّـٰعِقَةُ وَهُمْ يَنظُرُونَ

কিন্তু তারা ধৃষ্টতার সঙ্গে তাদের প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করল। ফলে বজ্রাঘাত তাদেরকে পাকড়াও করল যা তারা চেয়ে চেয়ে দেখছিল।

فَمَا ٱسْتَطَـٰعُوا۟ مِن قِيَامٍ وَمَا كَانُوا۟ مُنتَصِرِينَ

তারা (পায়ের ভরে) উঠে দাঁড়াতেও পারল না আর আত্মরক্ষা করতেও পারল না।

وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَوْمًا فَـٰسِقِينَ

ইতোপূর্বে আমি নূহের জাতিকে ধ্বংস করেছিলাম, তারা ছিল এক পাপাচারী জাতি।

وَٱلسَّمَآءَ بَنَيْنَـٰهَا بِأَيْي۟دٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ

আমি নিজ হাত দ্বারা আসমান সৃষ্টি করেছি আর আমি অবশ্যই মহা প্রশস্তকারী।

وَٱلْأَرْضَ فَرَشْنَـٰهَا فَنِعْمَ ٱلْمَـٰهِدُونَ

আর যমীন- তাকে আমিই বিছিয়েছি, আমি কতই না সুন্দর (সমতল) প্রসারণকারী!

وَمِن كُلِّ شَىْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ

আমি প্রত্যেকটি বস্তু সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।

فَفِرُّوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِ ۖ إِنِّى لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ

অতএব দৌড়াও আল্লাহর দিকে, আমি তোমাদের জন্য তাঁর পক্ষ হতে স্পষ্ট সতর্ককারী।

وَلَا تَجْعَلُوا۟ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ ۖ إِنِّى لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ

তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহ স্থির করো না, আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী।

كَذَٰلِكَ مَآ أَتَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا قَالُوا۟ سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ

এভাবে যখনই তাদের আগের লোকেদের মধ্যে কোন রসূল এসেছে, তখনই তারা বলেছে- ‘সে যাদুকর না হয় উন্মাদ।’

أَتَوَاصَوْا۟ بِهِۦ ۚ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ

তারা কি বংশ পরম্পরায় এরই অসিয়ত (অর্থাৎ অন্তিম সবক) দিয়ে আসছে, বরং তারা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি।

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَآ أَنتَ بِمَلُومٍ

কাজেই তুমি তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে লও, তার জন্য তুমি তিরস্কৃত হবে না।

وَذَكِّرْ فَإِنَّ ٱلذِّكْرَىٰ تَنفَعُ ٱلْمُؤْمِنِينَ

আর তুমি উপদেশ দিতে থাক, কেননা উপদেশ মু’মিনদের উপকার করবে।

وَمَا خَلَقْتُ ٱلْجِنَّ وَٱلْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ

আমি জ্বিন ও মানবকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র এ কারণে যে, তারা আমারই ‘ইবাদাত করবে।

مَآ أُرِيدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍ وَمَآ أُرِيدُ أَن يُطْعِمُونِ

আমি তাদের থেকে রিযক চাই না, আর আমি এও চাই না যে, তারা আমাকে খাওয়াবে।

إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلْقُوَّةِ ٱلْمَتِينُ

আল্লাহই তো রিযকদাতা, মহা শক্তিধর, প্রবল পরাক্রান্ত।

فَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ ذَنُوبًا مِّثْلَ ذَنُوبِ أَصْحَـٰبِهِمْ فَلَا يَسْتَعْجِلُونِ

কাজেই যারা যুলম করেছে তাদের প্রাপ্য তাই যে প্রাপ্য পূর্বে ছিল তাদের মত লোকেদের; কাজেই (নিজেদের প্রাপ্য পাওয়ার জন্য) তারা যেন তাড়াহুড়া না করে।

فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ مِن يَوْمِهِمُ ٱلَّذِى يُوعَدُونَ

কাফিরদের জন্য ধ্বংস (নেমে আসবে) তাদের সেদিনের যেদিনের ভয় তাদেরকে দেখানো হয়েছে।