Al-Haqqah

নিশ্চিত সত্য

0:00 / 0:00

ٱلْحَآقَّةُ

নিশ্চিত সংঘটিতব্য বিষয়,

مَا ٱلْحَآقَّةُ

কী সেই নিশ্চিত সংঘটিতব্য বিষয়?

وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلْحَآقَّةُ

আর তুমি কি জান কী সেই নিশ্চিত সংঘটিতব্য বিষয়?

كَذَّبَتْ ثَمُودُ وَعَادٌۢ بِٱلْقَارِعَةِ

‘আদ ও সামূদ জাতি সেই আকস্মিকভাবে সংঘটিতব্য মহাবিপদকে মিথ্যে বলেছিল।

فَأَمَّا ثَمُودُ فَأُهْلِكُوا۟ بِٱلطَّاغِيَةِ

অতঃপর সামূদ জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয় দিয়ে।

وَأَمَّا عَادٌ فَأُهْلِكُوا۟ بِرِيحٍ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍ

আর ‘আদকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া দিয়ে।

سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍ وَثَمَـٰنِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًا فَتَرَى ٱلْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَىٰ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍ

যা তাদের উপর প্রবাহিত হয়েছিল সাত রাত আট দিন বিরামহীনভাবে, তুমি দেখতে তারা পড়ে আছে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত, যেন তারা পুরাতন শুকনো খেজুর গাছের কান্ড।

فَهَلْ تَرَىٰ لَهُم مِّنۢ بَاقِيَةٍ

তুমি তাদের কাউকে রক্ষা পেয়ে বেঁচে থাকতে দেখছ কি?

وَجَآءَ فِرْعَوْنُ وَمَن قَبْلَهُۥ وَٱلْمُؤْتَفِكَـٰتُ بِٱلْخَاطِئَةِ

ফেরাউন আর তার পূর্ববর্তীরা আর উল্টে দেয়া জনপদবাসীরা গুরুতর পাপে লিপ্ত ছিল।

فَعَصَوْا۟ رَسُولَ رَبِّهِمْ فَأَخَذَهُمْ أَخْذَةً رَّابِيَةً

তারা তাদের প্রতিপালকের রসূলকে অমান্য করেছিল, তখন তিনি তাদেরকে পাকড়াও করলেন- অত্যন্ত কঠিন পাকড়াও।

إِنَّا لَمَّا طَغَا ٱلْمَآءُ حَمَلْنَـٰكُمْ فِى ٱلْجَارِيَةِ

(নূহের বানের) পানি যখন কূল ছাপিয়ে সীমা ছাড়িয়ে গেল, তখন আমি তোমাদেরকে চলন্ত নৌযানে আরোহণ করালাম।

لِنَجْعَلَهَا لَكُمْ تَذْكِرَةً وَتَعِيَهَآ أُذُنٌ وَٰعِيَةٌ

যেন এ ঘটনাটিকে আমি তোমাদের জন্য শিক্ষাপ্রদ-স্মারক করে রাখি আর সংরক্ষণকারী কান তা সংরক্ষণ করে।

فَإِذَا نُفِخَ فِى ٱلصُّورِ نَفْخَةٌ وَٰحِدَةٌ

অতঃপর যখন সিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে- মাত্র একটি ফুঁৎকার।

وَحُمِلَتِ ٱلْأَرْضُ وَٱلْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةً وَٰحِدَةً

পৃথিবী আর পর্বতমালা উৎক্ষিপ্ত হবে আর একই আঘাতে তাদেরকে চূর্ণ বিচূর্ণ করা হবে।

فَيَوْمَئِذٍ وَقَعَتِ ٱلْوَاقِعَةُ

সেদিন ঘটবে সেই সংঘটিতব্য (মহা) ঘটনা।

وَٱنشَقَّتِ ٱلسَّمَآءُ فَهِىَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ

আকাশ হয়ে যাবে দীর্ণ বিদীর্ণ আর সেদিন তা হবে বাঁধন-হারা-বিক্ষিপ্ত।

وَٱلْمَلَكُ عَلَىٰٓ أَرْجَآئِهَا ۚ وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَـٰنِيَةٌ

ফেরেশতারা থাকবে আকাশের আশে পাশে। আটজন ফেরেশতা সেদিন তোমার প্রতিপালকের ‘আরশ নিজেদের ঊর্ধ্বে বহন করবে।

يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَىٰ مِنكُمْ خَافِيَةٌ

সেদিন তোমাদেরকে (বিচারের জন্য) হাজির করা হবে আর তোমাদের কোন কাজই- যা তোমরা গোপন কর- গোপন থাকবে না।

فَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَـٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقْرَءُوا۟ كِتَـٰبِيَهْ

তখন যাকে তার ‘আমালনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে সে বলবে, ‘এই যে আমার ‘আমালানামা পড়ে দেখ,

إِنِّى ظَنَنتُ أَنِّى مُلَـٰقٍ حِسَابِيَهْ

আমি জানতাম যে, আমাকে আমার হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।’

فَهُوَ فِى عِيشَةٍ رَّاضِيَةٍ

অতঃপর সে আনন্দময় জীবন যাপন করবে,

فِى جَنَّةٍ عَالِيَةٍ

উচ্চতম মর্যাদার জান্নাতে,

قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ

তার ফলসমূহ (ঝুলে থাকবে) নীচে-নাগালের মধ্যে।

كُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ هَنِيٓـًٔۢا بِمَآ أَسْلَفْتُمْ فِى ٱلْأَيَّامِ ٱلْخَالِيَةِ

(তাদেরকে বলা হবে) পরিপূর্ণ তৃপ্তির সঙ্গে খাও এবং পান কর বিগত দিনে তোমরা যা (নেক ‘আমাল) করেছিলে তার প্রতিদান স্বরূপ।

وَأَمَّا مَنْ أُوتِىَ كِتَـٰبَهُۥ بِشِمَالِهِۦ فَيَقُولُ يَـٰلَيْتَنِى لَمْ أُوتَ كِتَـٰبِيَهْ

কিন্তু যার ‘আমালনামা বাম হাতে দেয়া হবে সে বলবে, ‘হায়! আমাকে যদি আমার ‘আমালনামা না দেয়া হত,

وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ

আর আমার হিসাব কী তা যদি আমি না-ই জানতাম,

يَـٰلَيْتَهَا كَانَتِ ٱلْقَاضِيَةَ

‘হায়! (দুনিয়ার) মৃত্যুই যদি আমার শেষ (অবস্থা) হত!

مَآ أَغْنَىٰ عَنِّى مَالِيَهْ ۜ

আমার ধন-সম্পদ আমার কোন কাজে আসল না,

هَلَكَ عَنِّى سُلْطَـٰنِيَهْ

আমার (সব) ক্ষমতা আধিপত্য নিঃশেষ হয়ে গেছে,

خُذُوهُ فَغُلُّوهُ

(তখন নির্দেশ আসবে) ধর ওকে, ওর গলায় ফাঁস লাগিয়ে দাও,

ثُمَّ ٱلْجَحِيمَ صَلُّوهُ

তারপর ছুড়ে ফেল ওকে জাহান্নামে,

ثُمَّ فِى سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَٱسْلُكُوهُ

তারপর ওকে শিকল দিয়ে বাঁধ- সত্তর হাত দীর্ঘ এক শিকলে,

إِنَّهُۥ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِٱللَّهِ ٱلْعَظِيمِ

সে মহান আল্লাহর উপর ঈমান আনেনি,

وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلْمِسْكِينِ

আর না সে মিসকীনকে খাবার খাওয়াতে উৎসাহ দিত,

فَلَيْسَ لَهُ ٱلْيَوْمَ هَـٰهُنَا حَمِيمٌ

কাজেই আজ এখানে তার কোন বন্ধু নেই,

وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِينٍ

ক্ষত হতে পড়া পুঁজ ছাড়া কোন খাদ্য নেই,

لَّا يَأْكُلُهُۥٓ إِلَّا ٱلْخَـٰطِـُٔونَ

যা অপরাধীরা ছাড়া অন্য কেউ খায় না।

فَلَآ أُقْسِمُ بِمَا تُبْصِرُونَ

আমি কসম করছি সে সব জিনিসের যা তোমরা দেখতে পাও,

وَمَا لَا تُبْصِرُونَ

আর (সে সব জিনিসেরও) যা তোমরা দেখতে পাও না

إِنَّهُۥ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ

যে, অবশ্যই এ কুরআন এক মহা সম্মানিত রসূল [জিবরীল (আঃ)]-এর (বহন করে আনা) বাণী।

وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ ۚ قَلِيلًا مَّا تُؤْمِنُونَ

তা কোন কবির কথা নয়, (কবির কথা তো) তোমরা বিশ্বাস করো না,

وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ ۚ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ

এটা কোন গণকের কথাও নয়, (গণকের কথায় তো) তোমরা নসীহত লাভ করো না।

تَنزِيلٌ مِّن رَّبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

এটা বিশ্ব জগতের প্রতিপালকের নিকট থেকে অবতীর্ণ,

وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ ٱلْأَقَاوِيلِ

নবী যদি কোন কথা নিজে রচনা করে আমার নামে চালিয়ে দিত,

لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِٱلْيَمِينِ

আমি অবশ্যই তার ডান হাত ধরে তাকে পাকড়াও করতাম,

ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ ٱلْوَتِينَ

তারপর অবশ্যই কেটে দিতাম তার হৃৎপিন্ডের শিরা,

فَمَا مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَـٰجِزِينَ

অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে, (আমার গোস্বা থেকে তাকে রক্ষা করার জন্য) বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

وَإِنَّهُۥ لَتَذْكِرَةٌ لِّلْمُتَّقِينَ

মুত্তাক্বীদের জন্য এ কুরআন অবশ্যই এক উপদেশ,

وَإِنَّا لَنَعْلَمُ أَنَّ مِنكُم مُّكَذِّبِينَ

আমি অবশ্যই জানি যে, তোমাদের মধ্যে কতক লোক (কুরআনকে) অস্বীকার করবে।

وَإِنَّهُۥ لَحَسْرَةٌ عَلَى ٱلْكَـٰفِرِينَ

আর এ কুরআন কাফিরদের জন্য অবশ্যই দুঃখ ও হতাশার কারণ হবে (যখন কুরআনে বর্ণিত শাস্তি তাদেরকে ঘিরে ধরবে)।

وَإِنَّهُۥ لَحَقُّ ٱلْيَقِينِ

এটা একেবারে নিশ্চিত সত্য।

فَسَبِّحْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلْعَظِيمِ

অতএব তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা কর।