Al-Muddaththir

পোশাক পরিহিত

0:00 / 0:00

يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمُدَّثِّرُ

ওহে বস্ত্র আবৃত (ব্যক্তি)!

قُمْ فَأَنذِرْ

ওঠ, সতর্ক কর।

وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ

আর তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।

وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ

তোমার পোশাক পরিচ্ছদ পবিত্র রাখ।

وَٱلرُّجْزَ فَٱهْجُرْ

(যাবতীয়) অপবিত্রতা থেকে দূরে থাক।

وَلَا تَمْنُن تَسْتَكْثِرُ

(কারো প্রতি) অনুগ্রহ করো না অধিক পাওয়ার উদ্দেশ্যে।

وَلِرَبِّكَ فَٱصْبِرْ

তোমার প্রতিপালকের (সন্তুষ্টির) জন্য ধৈর্য ধর।

فَإِذَا نُقِرَ فِى ٱلنَّاقُورِ

যেদিন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে,

فَذَٰلِكَ يَوْمَئِذٍ يَوْمٌ عَسِيرٌ

সেদিনটি হবে বড়ই কঠিন দিন,

عَلَى ٱلْكَـٰفِرِينَ غَيْرُ يَسِيرٍ

(যা) কাফিরদের জন্য মোটেই সহজ নয়।

ذَرْنِى وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًا

ছেড়ে দাও আমাকে (তার সঙ্গে বুঝাপড়া করার জন্য) যাকে আমি এককভাবে সৃষ্টি করেছি।

وَجَعَلْتُ لَهُۥ مَالًا مَّمْدُودًا

আর তাকে (ওয়ালীদ বিন মুগীরাহকে) দিয়েছি অঢেল ধন-সম্পদ,

وَبَنِينَ شُهُودًا

আর অনেক ছেলে যারা সব সময় তার কাছেই থাকে।

وَمَهَّدتُّ لَهُۥ تَمْهِيدًا

এবং তার জীবনকে করেছি সচ্ছল ও সুগম।

ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ

এর পরও সে লোভ করে যে, আমি তাকে আরো দেই।

كَلَّآ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ لِـَٔايَـٰتِنَا عَنِيدًا

কক্ষনো না, সে ছিল আমার নিদর্শনের বিরুদ্ধাচারী।

سَأُرْهِقُهُۥ صَعُودًا

শীঘ্রই আমি তাকে উঠাব শাস্তির পাহাড়ে (অর্থাৎ তাকে দিব বিপদের উপর বিপদ)।

إِنَّهُۥ فَكَّرَ وَقَدَّرَ

সে চিন্তা ভাবনা করল এবং সিদ্ধান্ত নিল,

فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ

ধ্বংস হোক সে, কীভাবে সে (কুরআনের অলৌকিকতা স্বীকার করার পরও কেবল অহমিকার বশবর্তী হয়ে নবুওয়াতকে অস্বীকার করার) সিদ্ধান্ত নিল!

ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ

আবারো ধ্বংস হোক সে, সে সিদ্ধান্ত নিল কীভাবে!

ثُمَّ نَظَرَ

তারপর সে তাকালো।

ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ

তারপর ভ্রু কুঁচকালো আর মুখ বাঁকালো।

ثُمَّ أَدْبَرَ وَٱسْتَكْبَرَ

তারপর সে পিছনে ফিরল আর অহংকার করল।

فَقَالَ إِنْ هَـٰذَآ إِلَّا سِحْرٌ يُؤْثَرُ

তারপর বলল- ‘এ তো যাদু ছাড়া আর কিছু নয়, এতো পূর্বে থেকেই চলে আসছে।

إِنْ هَـٰذَآ إِلَّا قَوْلُ ٱلْبَشَرِ

এটা তো মানুষের কথা মাত্র।’

سَأُصْلِيهِ سَقَرَ

শীঘ্রই আমি তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করব।

وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا سَقَرُ

তুমি কি জান জাহান্নামের আগুন কী?

لَا تُبْقِى وَلَا تَذَرُ

তা কাউকে জীবিতও রাখবে না, আর মৃত অবস্থায়ও ছেড়ে দেবে না।

لَوَّاحَةٌ لِّلْبَشَرِ

চামড়া ঝলসে দেবে।

عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ

সেখানে নিয়োজিত আছে ঊনিশ জন ফেরেশতা।

وَمَا جَعَلْنَآ أَصْحَـٰبَ ٱلنَّارِ إِلَّا مَلَـٰٓئِكَةً ۙ وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلَّا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِيَسْتَيْقِنَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ وَيَزْدَادَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِيمَـٰنًا ۙ وَلَا يَرْتَابَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْمُؤْمِنُونَ ۙ وَلِيَقُولَ ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَٱلْكَـٰفِرُونَ مَاذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِهَـٰذَا مَثَلًا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ ٱللَّهُ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِى مَن يَشَآءُ ۚ وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ ۚ وَمَا هِىَ إِلَّا ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ

আমিই কেবল ফেরেশতাদেরকে জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক করেছি। আর তাদের (এই) সংখ্যাকে কাফিরদের জন্য একটা পরীক্ষা বানিয়ে দিয়েছি (কেননা তারা এ কথা বিশ্বাসই করতে পারবে না যে মাত্র ঊনিশ জন ফেরেশতা বিশাল জাহান্নামের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবে) আর যেন কিতাবধারীগণ তা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে আর ঈমানদারদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবধারীগণ ও ঈমানদারগণ যেন কোন রকম সন্দেহের মধ্যে না থাকে। যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা আর কাফিররা যাতে বলে উঠে, ‘‘ এ ধরণের কথা দিয়ে আল্লাহ কী বোঝাতে চেয়েছেন?’’ এভাবে আল্লাহ যাকে চান গুমরাহ করেন আর যাকে চান সঠিক পথে পরিচালিত করেন। তোমার প্রতিপালকের বাহিনী (কারা এবং এর স্যখ্যা কত সে) সম্পর্কে তিনি ছাড়া কেউ জানে না। (জাহান্নামের) এ (বর্ণনা দেয়া হল) কেবল মানুষের নসীহত লাভের জন্য।

كَلَّا وَٱلْقَمَرِ

(এটা) কক্ষনো (ভিত্তিহীন) না, চাঁদের কসম,

وَٱلَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ

রাতের কসম যখন তার অবসান হয়,

وَٱلصُّبْحِ إِذَآ أَسْفَرَ

প্রভাতের কসম- যখন তা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে,

إِنَّهَا لَإِحْدَى ٱلْكُبَرِ

এই জাহান্নাম বড় বড় বিপদগুলোর একটি,

نَذِيرًا لِّلْبَشَرِ

মানুষের জন্য সতর্ককারী,

لِمَن شَآءَ مِنكُمْ أَن يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ

তোমাদের মধ্যে যে (কল্যাণের পথে) এগিয়ে যেতে চায় অথবা পেছনে পড়ে থাকতে চায় তার জন্য

كُلُّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ

প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ।

إِلَّآ أَصْحَـٰبَ ٱلْيَمِينِ

কিন্তু ডান পাশের লোকেরা নয়।

فِى جَنَّـٰتٍ يَتَسَآءَلُونَ

তারা থাকবে জান্নাতে। তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেস করবে

عَنِ ٱلْمُجْرِمِينَ

অপরাধীদের সম্পর্কে

مَا سَلَكَكُمْ فِى سَقَرَ

‘কিসে তোমাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে গেছে?

قَالُوا۟ لَمْ نَكُ مِنَ ٱلْمُصَلِّينَ

তারা বলবে, ‘আমরা নামায আদায়কারী লোকেদের মধ্যে শামিল ছিলাম না,

وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ ٱلْمِسْكِينَ

আর মিসকীনদেরকে খাবার খাওয়াতাম না,

وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ ٱلْخَآئِضِينَ

আর আমরা (সত্য পথের পথিকদের) সমালোচনা করতাম সমালোচনাকারীদের সঙ্গে (থেকে)।

وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ ٱلدِّينِ

আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।

حَتَّىٰٓ أَتَىٰنَا ٱلْيَقِينُ

আমাদের নিকট নিশ্চিত বিশ্বাস (অর্থাৎ মৃত্যু) না আসা পর্যন্ত।’

فَمَا تَنفَعُهُمْ شَفَـٰعَةُ ٱلشَّـٰفِعِينَ

তখন সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন কাজে আসবে না।

فَمَا لَهُمْ عَنِ ٱلتَّذْكِرَةِ مُعْرِضِينَ

তাদের হয়েছে কী যে তারা উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে?

كَأَنَّهُمْ حُمُرٌ مُّسْتَنفِرَةٌ

তারা যেন ভয়ে সন্ত্রস্ত গাধা,

فَرَّتْ مِن قَسْوَرَةٍۭ

সিংহের সামনে থেকে পালাচ্ছে।

بَلْ يُرِيدُ كُلُّ ٱمْرِئٍ مِّنْهُمْ أَن يُؤْتَىٰ صُحُفًا مُّنَشَّرَةً

বস্তুতঃ তাদের প্রত্যেকেই চায়, তাকে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) খোলা চিঠি দেয়া হোক (এই মর্মে যে, তোমরা এই নবীকে মেনে নাও)।

كَلَّا ۖ بَل لَّا يَخَافُونَ ٱلْـَٔاخِرَةَ

না, তা কক্ষনো হতে পারে না, বরং (কথা এই যে) তারা আখিরাতকে ভয় করে না।

كَلَّآ إِنَّهُۥ تَذْكِرَةٌ

না, তা হতে পারে না, এটা (অর্থাৎ কুরআন সকলের জন্য) উপদেশবাণী।

فَمَن شَآءَ ذَكَرَهُۥ

এক্ষনে যার ইচ্ছে তাত্থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুক।

وَمَا يَذْكُرُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ ۚ هُوَ أَهْلُ ٱلتَّقْوَىٰ وَأَهْلُ ٱلْمَغْفِرَةِ

আল্লাহর ইচ্ছে ব্যতীত কেউ উপদেশ গ্রহণ করবে না, তিনিই ভয়ের যোগ্য, তিনিই ক্ষমা করার অধিকারী।