Al-Qalam

কলম

0:00 / 0:00

نٓ ۚ وَٱلْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُونَ

নূন, কলমের শপথ আর লেখকেরা যা লেখে তার শপথ।

مَآ أَنتَ بِنِعْمَةِ رَبِّكَ بِمَجْنُونٍ

তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি পাগল নও।

وَإِنَّ لَكَ لَأَجْرًا غَيْرَ مَمْنُونٍ

তোমার জন্য অবশ্যই আছে অফুরন্ত পুরস্কার,

وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٍ

নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের উচ্চমার্গে উন্নীত।

فَسَتُبْصِرُ وَيُبْصِرُونَ

শীঘ্রই তুমি দেখতে পাবে আর তারাও দেখবে,

بِأَييِّكُمُ ٱلْمَفْتُونُ

তোমাদের মধ্যে কে পাগলামিতে আক্রান্ত।

إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِۦ وَهُوَ أَعْلَمُ بِٱلْمُهْتَدِينَ

তোমার প্রতিপালক বেশি জানেন কে তাঁর পথ থেকে গুমরাহ হয়ে গেছে, আর সঠিক পথপ্রাপ্তদেরকেও তিনি ভাল করে জানেন।

فَلَا تُطِعِ ٱلْمُكَذِّبِينَ

কাজেই তুমি মিথ্যাবাদীদের কথা মান্য কর না।

وَدُّوا۟ لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ

তারা চায় যে, তুমি যদি নমনীয় হও, তবে তারাও নমনীয় হবে,

وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَّهِينٍ

তুমি তার অনুসরণ কর না, যে বেশি বেশি কসম খায় আর যে (বার বার মিথ্যা কসম খাওয়ার কারণে মানুষের কাছে) লাঞ্ছিত।

هَمَّازٍ مَّشَّآءٍۭ بِنَمِيمٍ

যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের কাছে লাগিয়ে ফিরে,

مَّنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ

যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সীমালঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ,

عُتُلٍّۭ بَعْدَ ذَٰلِكَ زَنِيمٍ

কঠোর স্বভাব, তার উপরে আবার কুখ্যাত।

أَن كَانَ ذَا مَالٍ وَبَنِينَ

কারণ সে সম্পদ আর (অনেক) সন্তানাদির অধিকারী।

إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِ ءَايَـٰتُنَا قَالَ أَسَـٰطِيرُ ٱلْأَوَّلِينَ

তার কাছে যখন আমার আয়াত পাঠ করা হয় তখন সে বলে, ‘‘এতো আগে কালের লোকেদের কিসসা কাহিনী মাত্র।

سَنَسِمُهُۥ عَلَى ٱلْخُرْطُومِ

আমি তার শুঁড়ের উপর দাগ দিয়ে দিব (অর্থাৎ তাকে লাঞ্ছিত করব)।

إِنَّا بَلَوْنَـٰهُمْ كَمَا بَلَوْنَآ أَصْحَـٰبَ ٱلْجَنَّةِ إِذْ أَقْسَمُوا۟ لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ

আমি এদেরকে (অর্থাৎ মক্কাবাসীদেরকে) পরীক্ষা করেছি যেমন আমি বাগানের মালিকদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম। যখন তারা কসম করে বলেছিল যে, তারা সকাল বেলায় অবশ্যই বাগানের ফল সংগ্রহ করে নেবে।

وَلَا يَسْتَثْنُونَ

তারা ‘ইনশাআল্লাহ’ বলেনি।

فَطَافَ عَلَيْهَا طَآئِفٌ مِّن رَّبِّكَ وَهُمْ نَآئِمُونَ

অতঃপর তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে বাগানে এক বিপদ এসে পড়ল যখন তারা ছিল নিদ্রিত।

فَأَصْبَحَتْ كَٱلصَّرِيمِ

যার ফলে তা হয়ে গেল বিবর্ণ কাটা ফসলের মত।

فَتَنَادَوْا۟ مُصْبِحِينَ

সকালে একে অপরকে ডেকে বলল,

أَنِ ٱغْدُوا۟ عَلَىٰ حَرْثِكُمْ إِن كُنتُمْ صَـٰرِمِينَ

‘তোমরা যদি ফল সংগ্রহ করতে চাও তবে সকাল সকাল ক্ষেতে চল।

فَٱنطَلَقُوا۟ وَهُمْ يَتَخَـٰفَتُونَ

তারা চুপি চুপি কথা বলতে বলতে চলল।

أَن لَّا يَدْخُلَنَّهَا ٱلْيَوْمَ عَلَيْكُم مِّسْكِينٌ

‘আজ যেন সেখানে তোমাদের কাছে মিসকীনরা অবশ্যই ঢুকতে না পারে।’

وَغَدَوْا۟ عَلَىٰ حَرْدٍ قَـٰدِرِينَ

তারা এক (অন্যায়) সিদ্ধান্তে সংকল্পবদ্ধ হয়ে সকাল করল।

فَلَمَّا رَأَوْهَا قَالُوٓا۟ إِنَّا لَضَآلُّونَ

অতঃপর তারা যখন বাগানটি দেখল তখন তারা বলল, ‘‘আমরা অবশ্যই পথ হারিয়ে ফেলেছি,

بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ

(অতঃপর ব্যাপারটি বুঝতে পারার পর তারা বলে উঠল) বরং আমরা তো কপাল পোড়া।’’

قَالَ أَوْسَطُهُمْ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ لَوْلَا تُسَبِّحُونَ

তাদের মধ্যেকার সবচেয়ে ভাল লোকটি বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছ না কেন?’

قَالُوا۟ سُبْحَـٰنَ رَبِّنَآ إِنَّا كُنَّا ظَـٰلِمِينَ

তারা বলল, ‘আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি, আমরা সীমালঙ্ঘনকারীই ছিলাম।’

فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَلَـٰوَمُونَ

অতঃপর তারা একে অপরের দিকে এগিয়ে গিয়ে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করতে লাগল।

قَالُوا۟ يَـٰوَيْلَنَآ إِنَّا كُنَّا طَـٰغِينَ

তারা বলল, ‘দুর্ভোগ আমাদের, আমরা ছিলাম সীমালঙ্ঘনকারী,

عَسَىٰ رَبُّنَآ أَن يُبْدِلَنَا خَيْرًا مِّنْهَآ إِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا رَٰغِبُونَ

সম্ভবতঃ আমাদের প্রতিপালক এর পরিবর্তে আমাদেরকে উত্তম (বাগান) দিবেন, আমরা আমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হলাম।’

كَذَٰلِكَ ٱلْعَذَابُ ۖ وَلَعَذَابُ ٱلْـَٔاخِرَةِ أَكْبَرُ ۚ لَوْ كَانُوا۟ يَعْلَمُونَ

‘আযাব এ রকমই হয়ে থাকে। আর আখিরাতের ‘আযাব তো সবচেয়ে কঠিন। যদি তারা জানত!

إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّـٰتِ ٱلنَّعِيمِ

মুত্তাক্বীদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট আছে নি‘মাতে পরিপূর্ণ জান্নাত।

أَفَنَجْعَلُ ٱلْمُسْلِمِينَ كَٱلْمُجْرِمِينَ

আমি কি আত্মসমর্পণকারীদেরকে অপরাধীদের মত গণ্য করব?

مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ

তোমাদের কী হয়েছে, তোমরা কেমনভাবে বিচার করে সিদ্ধান্ত দিচ্ছ?

أَمْ لَكُمْ كِتَـٰبٌ فِيهِ تَدْرُسُونَ

তোমাদের কাছে কি (আল্লাহর নাযিলকৃত) কোন কিতাব আছে যা পড়ে তোমরা জানতে পার যে,

إِنَّ لَكُمْ فِيهِ لَمَا تَخَيَّرُونَ

তোমাদের জন্য সেখানে তাই আছে যা তোমরা পছন্দ কর?

أَمْ لَكُمْ أَيْمَـٰنٌ عَلَيْنَا بَـٰلِغَةٌ إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۙ إِنَّ لَكُمْ لَمَا تَحْكُمُونَ

অথবা তোমাদের জন্য আমার উপর কি ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ কোন দায়বদ্ধতা আছে যে, তোমরা যা দাবী করবে তাই পাবে?

سَلْهُمْ أَيُّهُم بِذَٰلِكَ زَعِيمٌ

তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর (আল্লাহ যে তাদের সঙ্গে প্রতিশ্রুতিতে দায়বদ্ধ) এ ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি জামিনদার (গ্যারান্টর)?

أَمْ لَهُمْ شُرَكَآءُ فَلْيَأْتُوا۟ بِشُرَكَآئِهِمْ إِن كَانُوا۟ صَـٰدِقِينَ

অথবা তাদের কি শরীক উপাস্য আছে, থাকলে তাদের শরীক উপাস্যদেরকে হাজির করুক- তারা যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে।

يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى ٱلسُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ

যেদিন (ক্বিয়ামতে) পায়ের গোছা (হাঁটুর নিম্নভাগ) উন্মোচিত হবে আর তাদেরকে ডাকা হবে সেজদা করার জন্য, কিন্তু তারা সেজদা করতে সক্ষম হবে না।

خَـٰشِعَةً أَبْصَـٰرُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ ۖ وَقَدْ كَانُوا۟ يُدْعَوْنَ إِلَى ٱلسُّجُودِ وَهُمْ سَـٰلِمُونَ

তাদের দৃষ্টি হবে অবনত, অপমান লাঞ্ছনা তাদের উপর চেপে বসবে। (দুনিয়াতে) তারা যখন সুস্থ ও নিরাপদ ছিল তখনও তাদেরকে সেজদা করার জন্য ডাকা হত (কিন্তু তারা সেজদা করত না)

فَذَرْنِى وَمَن يُكَذِّبُ بِهَـٰذَا ٱلْحَدِيثِ ۖ سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ

কাজেই ছেড়ে দাও আমাকে আর তাদেরকে যারা এ বাণীকে অস্বীকার করেছে। আমি তাদেরকে ক্রমে ক্রমে আস্তে আস্তে এমনভাবে ধরে টান দিব যে, তারা একটু টেরও পাবে না।

وَأُمْلِى لَهُمْ ۚ إِنَّ كَيْدِى مَتِينٌ

আমি তাদেরকে (লম্বা) সময় দেই, আমার কৌশল বড়ই মজবুত।

أَمْ تَسْـَٔلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ

তুমি কি তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছ যে, দেনার দায়ভার বহন করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে?

أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ

নাকি তাদের কাছে গায়বের খবর আছে যা তা তারা লিখে রাখে।

فَٱصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُن كَصَاحِبِ ٱلْحُوتِ إِذْ نَادَىٰ وَهُوَ مَكْظُومٌ

কাজেই তুমি তোমার প্রতিপালকের হুকুমের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা কর, আর মাছওয়ালা [ইউনুস (আঃ)] এর মত (অধৈর্য) হয়ো না। স্মরণ কর যখন সে (তার প্রতিপালককে ডাক দিয়েছিল চিন্তায় দুঃখে আচ্ছন্ন হয়ে।

لَّوْلَآ أَن تَدَٰرَكَهُۥ نِعْمَةٌ مِّن رَّبِّهِۦ لَنُبِذَ بِٱلْعَرَآءِ وَهُوَ مَذْمُومٌ

তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ যদি তার কাছে না পৌঁছত, তাহলে সে লাঞ্ছিত অবস্থায় ধুঁধুঁ বালুকাময় তীরে নিক্ষিপ্ত হত।

فَٱجْتَبَـٰهُ رَبُّهُۥ فَجَعَلَهُۥ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ

এভাবে তার প্রতিপালক তাকে বেছে নিলেন আর তাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করলেন।

وَإِن يَكَادُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَـٰرِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا۟ ٱلذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُۥ لَمَجْنُونٌ

কাফিররা যখন কুরআন শুনে তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছড়ে ফেলবে। আর তারা বলে, ‘‘সে তো অবশ্যই পাগল।’’

وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَـٰلَمِينَ

অথচ এ কুরআন বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ছাড়া অন্য কিছুই নয়।