কাহিনি
طسٓمٓ
তা-সীন-মীম,
تِلْكَ ءَايَـٰتُ ٱلْكِتَـٰبِ ٱلْمُبِينِ
এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
نَتْلُوا۟ عَلَيْكَ مِن نَّبَإِ مُوسَىٰ وَفِرْعَوْنَ بِٱلْحَقِّ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আমি মূসা ও ফিরআউনের কাহিনী হতে কিছু তোমার কাছে সত্যিকারভাবে বিবৃত করছি বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে।
إِنَّ فِرْعَوْنَ عَلَا فِى ٱلْأَرْضِ وَجَعَلَ أَهْلَهَا شِيَعًا يَسْتَضْعِفُ طَآئِفَةً مِّنْهُمْ يُذَبِّحُ أَبْنَآءَهُمْ وَيَسْتَحْىِۦ نِسَآءَهُمْ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلْمُفْسِدِينَ
বস্তুতঃ ফেরাউন দেশে উদ্ধত হয়ে গিয়েছিল আর সেখানকার অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করে তাদের একটি শ্রেণীকে দুর্বল করে রেখেছিল, তাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত আর তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখত; সে ছিল ফাসাদ সৃষ্টিকারী।
وَنُرِيدُ أَن نَّمُنَّ عَلَى ٱلَّذِينَ ٱسْتُضْعِفُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَئِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ ٱلْوَٰرِثِينَ
দেশে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল আমি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার ইচ্ছে করলাম, আর তাদেরকে নেতা ও উত্তরাধিকারী করার (ইচ্ছে করলাম)।
وَنُمَكِّنَ لَهُمْ فِى ٱلْأَرْضِ وَنُرِىَ فِرْعَوْنَ وَهَـٰمَـٰنَ وَجُنُودَهُمَا مِنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَحْذَرُونَ
আর (ইচ্ছে করলাম) তাদেরকে দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে, আর ফেরাউন, হামান ও তাদের সৈন্য বাহিনীকে দেখিয়ে দিতে যা তারা তাদের (অর্থাৎ মূসার সম্প্রদায়ের) থেকে আশঙ্কা করত।
وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰٓ أُمِّ مُوسَىٰٓ أَنْ أَرْضِعِيهِ ۖ فَإِذَا خِفْتِ عَلَيْهِ فَأَلْقِيهِ فِى ٱلْيَمِّ وَلَا تَخَافِى وَلَا تَحْزَنِىٓ ۖ إِنَّا رَآدُّوهُ إِلَيْكِ وَجَاعِلُوهُ مِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ
আমি মূসার মায়ের প্রতি ওয়াহী করলাম যে, তাকে স্তন্য পান করাতে থাক। যখন তুমি তার সম্পর্কে আশঙ্কা করবে, তখন তুমি তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে, আর তুমি ভয় করবে না, দুঃখও করবে না, আমি তাকে অবশ্যই তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব আর তাকে রসূলদের একজন করব।
فَٱلْتَقَطَهُۥٓ ءَالُ فِرْعَوْنَ لِيَكُونَ لَهُمْ عَدُوًّا وَحَزَنًا ۗ إِنَّ فِرْعَوْنَ وَهَـٰمَـٰنَ وَجُنُودَهُمَا كَانُوا۟ خَـٰطِـِٔينَ
অতঃপর ফেরাউনের লোকজন তাকে উঠিয়ে নিল যাতে সে তাদের জন্য শত্রু হতে ও দুঃখের কারণ হতে পারে। ফেরাউন, হামান ও তাদের বাহিনীর লোকেরা তো ছিল অপরাধী।
وَقَالَتِ ٱمْرَأَتُ فِرْعَوْنَ قُرَّتُ عَيْنٍ لِّى وَلَكَ ۖ لَا تَقْتُلُوهُ عَسَىٰٓ أَن يَنفَعَنَآ أَوْ نَتَّخِذَهُۥ وَلَدًا وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
ফেরাঊনের স্ত্রী বলল- ‘এ শিশু আমার ও তোমার চক্ষু শীতলকারী, তাকে হত্যা কর না, সে আমাদের উপকারে লাগতে পারে অথবা তাকে আমরা পুত্র হিসেবেও গ্রহণ করতে পারি আর তারা কিছুই বুঝতে পারল না (তাদের এ কাজের পরিণাম কী)।
وَأَصْبَحَ فُؤَادُ أُمِّ مُوسَىٰ فَـٰرِغًا ۖ إِن كَادَتْ لَتُبْدِى بِهِۦ لَوْلَآ أَن رَّبَطْنَا عَلَىٰ قَلْبِهَا لِتَكُونَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
মূসার মায়ের অন্তর বিচলিত হয়ে উঠল। সে তো তার পরিচয় প্রকাশ করেই ফেলত যদি না আমি তার চিত্তকে দৃঢ় করতাম যাতে সে আস্থাশীল হয়।
وَقَالَتْ لِأُخْتِهِۦ قُصِّيهِ ۖ فَبَصُرَتْ بِهِۦ عَن جُنُبٍ وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ
মূসার মা মূসার বোনকে বলল- ‘তার পিছনে পিছনে যাও।’ সে দূর থেকে তাকে দেখছিল কিন্তু তারা টের পায়নি।
۞ وَحَرَّمْنَا عَلَيْهِ ٱلْمَرَاضِعَ مِن قَبْلُ فَقَالَتْ هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰٓ أَهْلِ بَيْتٍ يَكْفُلُونَهُۥ لَكُمْ وَهُمْ لَهُۥ نَـٰصِحُونَ
আগে থেকে আমি তাকে ধাত্রী-স্তন্য পান থেকে বিরত রেখেছিলাম। মূসার বোন বলল- ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একটা পরিবারের খোঁজ দেব যারা তাকে তোমাদের পক্ষে লালন পালন করবে আর তারা হবে তার হিতাকাঙ্ক্ষী।’
فَرَدَدْنَـٰهُ إِلَىٰٓ أُمِّهِۦ كَىْ تَقَرَّ عَيْنُهَا وَلَا تَحْزَنَ وَلِتَعْلَمَ أَنَّ وَعْدَ ٱللَّهِ حَقٌّ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
এভাবে আমি তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে আনলাম যাতে তার চোখ জুড়ায়, সে দুঃখ না করে আর জানতে পারে যে, আল্লাহর ও‘য়াদা সত্য; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।
وَلَمَّا بَلَغَ أَشُدَّهُۥ وَٱسْتَوَىٰٓ ءَاتَيْنَـٰهُ حُكْمًا وَعِلْمًا ۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ
মূসা যখন যৌবনে পদার্পণ করল আর পূর্ণ পরিণত হল, তখন আমি তাকে হিকমত ও জ্ঞান দান করলাম; আমি সৎকর্মশীলদেরকে এভাবেই পুরস্কৃত করে থাকি।
وَدَخَلَ ٱلْمَدِينَةَ عَلَىٰ حِينِ غَفْلَةٍ مِّنْ أَهْلِهَا فَوَجَدَ فِيهَا رَجُلَيْنِ يَقْتَتِلَانِ هَـٰذَا مِن شِيعَتِهِۦ وَهَـٰذَا مِنْ عَدُوِّهِۦ ۖ فَٱسْتَغَـٰثَهُ ٱلَّذِى مِن شِيعَتِهِۦ عَلَى ٱلَّذِى مِنْ عَدُوِّهِۦ فَوَكَزَهُۥ مُوسَىٰ فَقَضَىٰ عَلَيْهِ ۖ قَالَ هَـٰذَا مِنْ عَمَلِ ٱلشَّيْطَـٰنِ ۖ إِنَّهُۥ عَدُوٌّ مُّضِلٌّ مُّبِينٌ
সে শহরে প্রবেশ করল যখন সেখানের লোকেরা অসতর্ক অবস্থায় ছিল। তখন সে দু’জন লোককে সংঘর্ষরত অবস্থায় পেল। একজন তার দলের, অপরজন তার শত্রুদলের। তখন তার দলের লোকটি তার শত্রুদলের লোকটির বিরুদ্ধে তার কাছে সাহায্যের আবেদন জানালো। তখন মূসা তাকে ঘুসি মারল এবং হত্যা করে ফেলল। মূসা বলল- ‘এটা শয়ত্বানের কাজ। সে নিশ্চয় প্রকাশ্য শত্রু, গুমরাহকারী।’
قَالَ رَبِّ إِنِّى ظَلَمْتُ نَفْسِى فَٱغْفِرْ لِى فَغَفَرَ لَهُۥٓ ۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
সে বলল- ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি নিজের আত্মার উপর যুলম করেছি, অতএব আমাকে ক্ষমা কর।’ অতঃপর আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন, অবশ্যই তিনি ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।
قَالَ رَبِّ بِمَآ أَنْعَمْتَ عَلَىَّ فَلَنْ أَكُونَ ظَهِيرًا لِّلْمُجْرِمِينَ
মূসা বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি যেহেতু আমার উপর অনুগ্রহ করেছ, কাজেই আমি কক্ষনো পাপীদের সাহায্যকারী হব না।’
فَأَصْبَحَ فِى ٱلْمَدِينَةِ خَآئِفًا يَتَرَقَّبُ فَإِذَا ٱلَّذِى ٱسْتَنصَرَهُۥ بِٱلْأَمْسِ يَسْتَصْرِخُهُۥ ۚ قَالَ لَهُۥ مُوسَىٰٓ إِنَّكَ لَغَوِىٌّ مُّبِينٌ
শহরে তার সকাল হল ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায়। হঠাৎ সে শুনল যে লোকটি গতকাল তার কাছে সাহায্য চেয়েছিল (আবার) সে সাহায্যের জন্য চীৎকার করছে। মূসা তাকে বলল- ‘তুমি প্রকাশ্যই একজন বেওকুফ লোক।
فَلَمَّآ أَنْ أَرَادَ أَن يَبْطِشَ بِٱلَّذِى هُوَ عَدُوٌّ لَّهُمَا قَالَ يَـٰمُوسَىٰٓ أَتُرِيدُ أَن تَقْتُلَنِى كَمَا قَتَلْتَ نَفْسًۢا بِٱلْأَمْسِ ۖ إِن تُرِيدُ إِلَّآ أَن تَكُونَ جَبَّارًا فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا تُرِيدُ أَن تَكُونَ مِنَ ٱلْمُصْلِحِينَ
অতঃপর মূসা যখন উভয়ের শত্রুকে ধরতে উদ্যত হল, তখন সে বলল- ‘ওহে মূসা! তুমি কি আমাকে হত্যা করতে চাও যেভাবে গতকাল একটা লোককে হত্যা করেছ, তুমি তো পৃথিবীতে স্বেচ্ছাচারী হতে চাচ্ছ, সংশোধনকারীদের মধ্যে গণ্য হতে চাচ্ছ না।’
وَجَآءَ رَجُلٌ مِّنْ أَقْصَا ٱلْمَدِينَةِ يَسْعَىٰ قَالَ يَـٰمُوسَىٰٓ إِنَّ ٱلْمَلَأَ يَأْتَمِرُونَ بِكَ لِيَقْتُلُوكَ فَٱخْرُجْ إِنِّى لَكَ مِنَ ٱلنَّـٰصِحِينَ
নগরের প্রান্ত হতে এক লোক ছুটে আসল। সে বলল- ‘হে মূসা! পারিষদগণ তোমাকে হত্যার পরামর্শ করছে, কাজেই তুমি বাইরে চলে যাও, আমি তোমার হিতাকাঙ্ক্ষী।
فَخَرَجَ مِنْهَا خَآئِفًا يَتَرَقَّبُ ۖ قَالَ رَبِّ نَجِّنِى مِنَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّـٰلِمِينَ
তখন মূসা ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল সতর্কতার সঙ্গে। সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে যালিম গোষ্ঠী হতে রক্ষা কর।’
وَلَمَّا تَوَجَّهَ تِلْقَآءَ مَدْيَنَ قَالَ عَسَىٰ رَبِّىٓ أَن يَهْدِيَنِى سَوَآءَ ٱلسَّبِيلِ
যখন সে মাদইয়ান অভিমুখী হল, সে বলল- ‘আশা করি আমার পালনকর্তা আমাকে সরল সোজা পথ দেখাবেন।’
وَلَمَّا وَرَدَ مَآءَ مَدْيَنَ وَجَدَ عَلَيْهِ أُمَّةً مِّنَ ٱلنَّاسِ يَسْقُونَ وَوَجَدَ مِن دُونِهِمُ ٱمْرَأَتَيْنِ تَذُودَانِ ۖ قَالَ مَا خَطْبُكُمَا ۖ قَالَتَا لَا نَسْقِى حَتَّىٰ يُصْدِرَ ٱلرِّعَآءُ ۖ وَأَبُونَا شَيْخٌ كَبِيرٌ
যখন সে মাদইয়ানের কূপের কাছে পৌঁছল, সে একদল লোককে দেখল (তাদের জন্তুগুলোকে) পানি পান করাতে, তাদের ছাড়া আরো দু’জন স্ত্রীলোককে দেখল (নিজেদের পশুগুলোকে) আগলে রাখতে। মূসা জিজ্ঞেস করল- ‘তোমাদের দু’জনের ব্যাপার কী?’ তারা বলল- ‘আমরা আমাদের জন্তুগুলোকে পান করাতে পারি না যতক্ষণ না রাখালেরা (তাদের পশুগুলোকে) সরিয়ে না নেয় (পানি পান করানোর পর), আর আমাদের পিতা খুবই বয়োবৃদ্ধ।
فَسَقَىٰ لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّىٰٓ إِلَى ٱلظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّى لِمَآ أَنزَلْتَ إِلَىَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
তখন মূসা তাদের জন্য পশুগুলোকে পানি পান করিয়ে দিল, অতঃপর পেছন ফিরে ছায়ায় গিয়ে বসল, অতঃপর বলল- ‘হে আমার পালনকর্তা! তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই করবে আমি তো তারই ভিখারী।’
فَجَآءَتْهُ إِحْدَىٰهُمَا تَمْشِى عَلَى ٱسْتِحْيَآءٍ قَالَتْ إِنَّ أَبِى يَدْعُوكَ لِيَجْزِيَكَ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا ۚ فَلَمَّا جَآءَهُۥ وَقَصَّ عَلَيْهِ ٱلْقَصَصَ قَالَ لَا تَخَفْ ۖ نَجَوْتَ مِنَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّـٰلِمِينَ
তখন নারীদ্বয়ের একজন তার কাছে সলজ্জ পদে আসল। সে বলল- ‘আমার পিতা তোমাকে ডাকছে তুমি আমাদের জন্য (জন্তুগুলোকে) পানি পান করিয়েছ তোমাকে তার প্রতিদান দেয়ার জন্য। যখন মূসা তার কাছে গেল আর তার কাছে সকল ঘটনা বিবৃত করল, সে বলল- তুমি ভয় করো না, ‘তুমি যালিম গোষ্ঠীর থেকে রেহাই পেয়ে গেছ।’
قَالَتْ إِحْدَىٰهُمَا يَـٰٓأَبَتِ ٱسْتَـْٔجِرْهُ ۖ إِنَّ خَيْرَ مَنِ ٱسْتَـْٔجَرْتَ ٱلْقَوِىُّ ٱلْأَمِينُ
স্ত্রীলোক দু’টির একজন বলল- ‘হে পিতা! পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তাকে নিযুক্ত করুন, আপনি যাদেরকে মজুর নিযুক্ত করবেন তাদের মধ্যে উত্তম যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত।’
قَالَ إِنِّىٓ أُرِيدُ أَنْ أُنكِحَكَ إِحْدَى ٱبْنَتَىَّ هَـٰتَيْنِ عَلَىٰٓ أَن تَأْجُرَنِى ثَمَـٰنِىَ حِجَجٍ ۖ فَإِنْ أَتْمَمْتَ عَشْرًا فَمِنْ عِندِكَ ۖ وَمَآ أُرِيدُ أَنْ أَشُقَّ عَلَيْكَ ۚ سَتَجِدُنِىٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ
সে বলল- ‘আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনের সঙ্গে তোমার বিয়ে দেয়ার আমি ইচ্ছে করেছি এই শর্তে যে, তুমি আট বছর আমার কাজ করে দেবে, আর যদি দশ বছর পূর্ণ কর সেটা তোমার ইচ্ছেধীন, আমি তোমাকে কষ্টে ফেলতে চাই না, আল্লাহ ইচ্ছে করলে তুমি আমাকে সৎকর্মপরায়ণ পাবে।’
قَالَ ذَٰلِكَ بَيْنِى وَبَيْنَكَ ۖ أَيَّمَا ٱلْأَجَلَيْنِ قَضَيْتُ فَلَا عُدْوَٰنَ عَلَىَّ ۖ وَٱللَّهُ عَلَىٰ مَا نَقُولُ وَكِيلٌ
মূসা বলল- আমার ও আপনার মধ্যে এই চুক্তি রইল, আমি দু’টি মেয়াদের যেটিই পূর্ণ করি না কেন, আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করা হবে না, আমরা যে কথা বলছি, আল্লাহ তার সাক্ষী।
۞ فَلَمَّا قَضَىٰ مُوسَى ٱلْأَجَلَ وَسَارَ بِأَهْلِهِۦٓ ءَانَسَ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ نَارًا قَالَ لِأَهْلِهِ ٱمْكُثُوٓا۟ إِنِّىٓ ءَانَسْتُ نَارًا لَّعَلِّىٓ ءَاتِيكُم مِّنْهَا بِخَبَرٍ أَوْ جَذْوَةٍ مِّنَ ٱلنَّارِ لَعَلَّكُمْ تَصْطَلُونَ
অতঃপর মূসা যখন মেয়াদ পূর্ণ ক’রে তার পরিবার নিয়ে যাত্রা করল, তখন সে তূর পর্বতের দিকে আগুন দেখতে পেল। সে তার পরিবারবর্গকে বলল- ‘তোমরা অপেক্ষা কর, আমি আগুন দেখেছি, আমি তোমাদের জন্য সেখান থেকে খবর আনতে পারি কিংবা জ্বলন্ত কাষ্ঠখন্ড আনতে পারি যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার।’
فَلَمَّآ أَتَىٰهَا نُودِىَ مِن شَـٰطِئِ ٱلْوَادِ ٱلْأَيْمَنِ فِى ٱلْبُقْعَةِ ٱلْمُبَـٰرَكَةِ مِنَ ٱلشَّجَرَةِ أَن يَـٰمُوسَىٰٓ إِنِّىٓ أَنَا ٱللَّهُ رَبُّ ٱلْعَـٰلَمِينَ
মূসা যখন আগুনের কাছে পৌঁছল তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান দিকে বৃক্ষ থেকে তাকে আহবান দিয়ে বলা হল- ‘হে মূসা! আমিই আল্লাহ, জগতসমূহের পালনকর্তা।’
وَأَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَلَمَّا رَءَاهَا تَهْتَزُّ كَأَنَّهَا جَآنٌّ وَلَّىٰ مُدْبِرًا وَلَمْ يُعَقِّبْ ۚ يَـٰمُوسَىٰٓ أَقْبِلْ وَلَا تَخَفْ ۖ إِنَّكَ مِنَ ٱلْـَٔامِنِينَ
আর (বলা হল) ‘তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর।’ অতঃপর যখন সে সেটাকে দেখল ছুটাছুটি করতে যেন ওটা একটা সাপ, তখন পেছনের দিকে দৌড় দিল, ফিরেও তাকাল না। (তখন তাকে বলা হল) ‘ওহে মূসা! সামনে এসো, ভয় করো না, তুমি নিরাপদ।’
ٱسْلُكْ يَدَكَ فِى جَيْبِكَ تَخْرُجْ بَيْضَآءَ مِنْ غَيْرِ سُوٓءٍ وَٱضْمُمْ إِلَيْكَ جَنَاحَكَ مِنَ ٱلرَّهْبِ ۖ فَذَٰنِكَ بُرْهَـٰنَانِ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَإِي۟هِۦٓ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ قَوْمًا فَـٰسِقِينَ
তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, তা দোষমুক্ত জ্যোতির্ময় হয়ে বেরিয়ে আসবে, ভয় থেকে রক্ষার্থে তোমার হাত তোমার উপর চেপে ধর। এ দু’টি হল ফেরাউন ও তার পারিষদবর্গের জন্য তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রমাণ, নিশ্চয় তারা পাপাচারী সম্প্রদায়।’
قَالَ رَبِّ إِنِّى قَتَلْتُ مِنْهُمْ نَفْسًا فَأَخَافُ أَن يَقْتُلُونِ
মূসা বলল- ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তাদের একজনকে হত্যা করেছি, কাজেই আমি আশঙ্কা করছি তারা আমাকে হত্যা করবে।’
وَأَخِى هَـٰرُونُ هُوَ أَفْصَحُ مِنِّى لِسَانًا فَأَرْسِلْهُ مَعِىَ رِدْءًا يُصَدِّقُنِىٓ ۖ إِنِّىٓ أَخَافُ أَن يُكَذِّبُونِ
আর আমার ভাই হারূন আমার চেয়ে প্রাঞ্জলভাষী, কাজেই তাকে তুমি সাহায্যকারীরূপে আমার সঙ্গে প্রেরণ কর, সে আমাকে সমর্থন জানাবে। আমি আশঙ্কা করছি তারা আমাকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করবে।’
قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَكَ بِأَخِيكَ وَنَجْعَلُ لَكُمَا سُلْطَـٰنًا فَلَا يَصِلُونَ إِلَيْكُمَا ۚ بِـَٔايَـٰتِنَآ أَنتُمَا وَمَنِ ٱتَّبَعَكُمَا ٱلْغَـٰلِبُونَ
আল্লাহ বললেন- ‘আমি তোমার ভ্রাতার মাধ্যমে তোমার হাতকে শক্তিশালী করব এবং তোমাদেরকে প্রমাণপঞ্জি দান করব, যার ফলে তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতেই পারবে না। আমার নিদর্শন বলে তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরাই বিজয়ী থাকবে।
فَلَمَّا جَآءَهُم مُّوسَىٰ بِـَٔايَـٰتِنَا بَيِّنَـٰتٍ قَالُوا۟ مَا هَـٰذَآ إِلَّا سِحْرٌ مُّفْتَرًى وَمَا سَمِعْنَا بِهَـٰذَا فِىٓ ءَابَآئِنَا ٱلْأَوَّلِينَ
মূসা যখন তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে আসল, তারা বলল- এতো অলীক যাদু মাত্র, আমাদের পূর্বপুরুষদের যামানায় এ সবের কথা তো শুনিনি।
وَقَالَ مُوسَىٰ رَبِّىٓ أَعْلَمُ بِمَن جَآءَ بِٱلْهُدَىٰ مِنْ عِندِهِۦ وَمَن تَكُونُ لَهُۥ عَـٰقِبَةُ ٱلدَّارِ ۖ إِنَّهُۥ لَا يُفْلِحُ ٱلظَّـٰلِمُونَ
মূসা বলল- ‘আমার প্রতিপালক বেশ ভাল ক’রেই জানেন কে তাঁর নিকট থেকে পথ নির্দেশ নিয়ে এসেছে এবং কার পরিণাম আখিরাতে শুভ হবে। যালিমরা কক্ষনো সাফল্য লাভ করবে না।’
وَقَالَ فِرْعَوْنُ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَأُ مَا عَلِمْتُ لَكُم مِّنْ إِلَـٰهٍ غَيْرِى فَأَوْقِدْ لِى يَـٰهَـٰمَـٰنُ عَلَى ٱلطِّينِ فَٱجْعَل لِّى صَرْحًا لَّعَلِّىٓ أَطَّلِعُ إِلَىٰٓ إِلَـٰهِ مُوسَىٰ وَإِنِّى لَأَظُنُّهُۥ مِنَ ٱلْكَـٰذِبِينَ
ফিরআউন বলল- ‘হে পারিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ আছে বলে আমি জানি না। কাজেই ওহে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও, অতঃপর আমার জন্য একটি প্রাসাদ নির্মাণ কর যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পারি, আমার নিশ্চিত ধারণা যে, সে একজন মিথ্যেবাদী।’
وَٱسْتَكْبَرَ هُوَ وَجُنُودُهُۥ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَظَنُّوٓا۟ أَنَّهُمْ إِلَيْنَا لَا يُرْجَعُونَ
ফেরাউন ও তার বাহিনী অকারণে পৃথিবীতে অহংকার করেছিল আর তারা ভেবেছিল যে, তাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না।
فَأَخَذْنَـٰهُ وَجُنُودَهُۥ فَنَبَذْنَـٰهُمْ فِى ٱلْيَمِّ ۖ فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلظَّـٰلِمِينَ
কাজেই আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম, অতঃপর তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। এখন দেখ, যালিমদের পরিণতি কী হয়েছিল।
وَجَعَلْنَـٰهُمْ أَئِمَّةً يَدْعُونَ إِلَى ٱلنَّارِ ۖ وَيَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ لَا يُنصَرُونَ
আমি তাদেরকে নেতা করেছিলাম। তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করত, ক্বিয়ামতের দিন তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।
وَأَتْبَعْنَـٰهُمْ فِى هَـٰذِهِ ٱلدُّنْيَا لَعْنَةً ۖ وَيَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ هُم مِّنَ ٱلْمَقْبُوحِينَ
এ পৃথিবীতে তাদের পেছনে আমি লাগিয়ে দিয়েছি অভিসম্পাত আর ক্বিয়ামতের দিন তারা হবে দুর্দশাগ্রস্ত
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا مُوسَى ٱلْكِتَـٰبَ مِنۢ بَعْدِ مَآ أَهْلَكْنَا ٱلْقُرُونَ ٱلْأُولَىٰ بَصَآئِرَ لِلنَّاسِ وَهُدًى وَرَحْمَةً لَّعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
আমি পূর্ববর্তী অনেক মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার পর মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম- মানুষের জন্য আলোকবর্তিকা, সত্যপথের নির্দেশ ও রহমতস্বরূপ যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
وَمَا كُنتَ بِجَانِبِ ٱلْغَرْبِىِّ إِذْ قَضَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَى ٱلْأَمْرَ وَمَا كُنتَ مِنَ ٱلشَّـٰهِدِينَ
মূসাকে যখন আমি নির্দেশনামা দিয়েছিলাম তখন তুমি (তূওয়া উপত্যকার) পশ্চিম প্রান্তে ছিলে না, আর ছিলে না তুমি প্রত্যক্ষদর্শী।
وَلَـٰكِنَّآ أَنشَأْنَا قُرُونًا فَتَطَاوَلَ عَلَيْهِمُ ٱلْعُمُرُ ۚ وَمَا كُنتَ ثَاوِيًا فِىٓ أَهْلِ مَدْيَنَ تَتْلُوا۟ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتِنَا وَلَـٰكِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ
কিন্তু আমি অনেক মানবগোষ্ঠী সৃষ্টি করেছিলাম, অতঃপর তাদের অনেক যুগ গত হয়ে গেছে। তুমি মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিলে না তাদের কাছে আমার আয়াত আবৃত্তি করার জন্য, কিন্তু (তাদের মাঝে) রসূল প্রেরণকারী আমিই ছিলাম।
وَمَا كُنتَ بِجَانِبِ ٱلطُّورِ إِذْ نَادَيْنَا وَلَـٰكِن رَّحْمَةً مِّن رَّبِّكَ لِتُنذِرَ قَوْمًا مَّآ أَتَىٰهُم مِّن نَّذِيرٍ مِّن قَبْلِكَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
আমি যখন (মূসাকে) ডাক দিয়েছিলাম তখন তুমি তূর পর্বতের পাশে ছিলে না। কিন্তু (তোমাকে পাঠানো হয়েছে) তোমার প্রতিপালকের রহমতস্বরূপ যাতে তুমি এমন একটি সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পার যাদের কাছে তোমার পূর্বে সতর্ককারী পাঠানো হয়নি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
وَلَوْلَآ أَن تُصِيبَهُم مُّصِيبَةٌۢ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَيَقُولُوا۟ رَبَّنَا لَوْلَآ أَرْسَلْتَ إِلَيْنَا رَسُولًا فَنَتَّبِعَ ءَايَـٰتِكَ وَنَكُونَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ
রসূল না পাঠালে তাদের কৃতকর্মের কারণে কোন বিপদ হলে তারা বলত- ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের কাছে রসূল পাঠালে না কেন, পাঠালে তোমার আয়াতসমূহের অনুসরণ করতাম আর আমরা মু’মিন হয়ে যেতাম।’
فَلَمَّا جَآءَهُمُ ٱلْحَقُّ مِنْ عِندِنَا قَالُوا۟ لَوْلَآ أُوتِىَ مِثْلَ مَآ أُوتِىَ مُوسَىٰٓ ۚ أَوَلَمْ يَكْفُرُوا۟ بِمَآ أُوتِىَ مُوسَىٰ مِن قَبْلُ ۖ قَالُوا۟ سِحْرَانِ تَظَـٰهَرَا وَقَالُوٓا۟ إِنَّا بِكُلٍّ كَـٰفِرُونَ
অতঃপর আমার নিকট থেকে তাদের কাছে যখন সত্য আসল তখন তারা বলল- ‘মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তাকে কেন সেরূপ দেয়া হল না? ইতোপূর্বে মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তারা কি তা অস্বীকার করেনি?’ তারা বলেছিল- ‘দু’টোই যাদু, একটা আরেকটার সহায়তাকারী। আর তারা বলেছিল আমরা (তাওরাত ও কুরআন) সবই প্রত্যাখ্যান করি।’
قُلْ فَأْتُوا۟ بِكِتَـٰبٍ مِّنْ عِندِ ٱللَّهِ هُوَ أَهْدَىٰ مِنْهُمَآ أَتَّبِعْهُ إِن كُنتُمْ صَـٰدِقِينَ
বল, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে আল্লাহর নিকট হতে এমন কিতাব নিয়ে এসো যা সত্যপথ নির্দেশ করার ব্যাপারে এ দু’ (কিতাব) হতে অধিক উৎকৃষ্ট, আমি সে কিতাবের অনুসরণ করব।
فَإِن لَّمْ يَسْتَجِيبُوا۟ لَكَ فَٱعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَآءَهُمْ ۚ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ ٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ بِغَيْرِ هُدًى مِّنَ ٱللَّهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ
অতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয় তাহলে জেনে রেখ, তারা শুধু তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর পথ নির্দেশ ছাড়াই যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে? আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না।
۞ وَلَقَدْ وَصَّلْنَا لَهُمُ ٱلْقَوْلَ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ
আমি তাদের কাছে ক্রমাগত বাণী পৌঁছে দিয়েছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
ٱلَّذِينَ ءَاتَيْنَـٰهُمُ ٱلْكِتَـٰبَ مِن قَبْلِهِۦ هُم بِهِۦ يُؤْمِنُونَ
এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা (অর্থাৎ তাদের কতক লোক) তাতে বিশ্বাস করে।
وَإِذَا يُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ قَالُوٓا۟ ءَامَنَّا بِهِۦٓ إِنَّهُ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّنَآ إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلِهِۦ مُسْلِمِينَ
তাদের নিকট যখন তা আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে- আমরা এতে বিশ্বাস করি, এ সত্য আমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে (আগত), এর পূর্বেই আমরা আত্মসমর্পণকারী ছিলাম।
أُو۟لَـٰٓئِكَ يُؤْتَوْنَ أَجْرَهُم مَّرَّتَيْنِ بِمَا صَبَرُوا۟ وَيَدْرَءُونَ بِٱلْحَسَنَةِ ٱلسَّيِّئَةَ وَمِمَّا رَزَقْنَـٰهُمْ يُنفِقُونَ
তাদেরকে তাদের পারিশ্রমিক দু’বার দেয়া হবে যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছে এবং তারা ভাল দিয়ে মন্দের প্রতিহত করে আর আমি তাদেরকে যে রিযক দিয়েছি তাত্থেকে তারা ব্যয় করে।
وَإِذَا سَمِعُوا۟ ٱللَّغْوَ أَعْرَضُوا۟ عَنْهُ وَقَالُوا۟ لَنَآ أَعْمَـٰلُنَا وَلَكُمْ أَعْمَـٰلُكُمْ سَلَـٰمٌ عَلَيْكُمْ لَا نَبْتَغِى ٱلْجَـٰهِلِينَ
তারা যখন নিরর্থক কথাবার্তা শুনে তখন তাত্থেকে ফিরে থাকে আর বলে- আমাদের কাজের ফল আমরা পাব, তোমাদের কাজের ফল তোমরা পাবে, তোমাদের প্রতি সালাম, অজ্ঞদের সাথে আমাদের কোন প্রয়োজন নেই।
إِنَّكَ لَا تَهْدِى مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ يَهْدِى مَن يَشَآءُ ۚ وَهُوَ أَعْلَمُ بِٱلْمُهْتَدِينَ
তুমি যাকে ভালবাস তাকে সৎপথ দেখাতে পারবে না, বরং আল্লাহ্ই যাকে চান সৎ পথে পরিচালিত করেন, সৎপথপ্রাপ্তদের তিনি ভাল করেই জানেন।
وَقَالُوٓا۟ إِن نَّتَّبِعِ ٱلْهُدَىٰ مَعَكَ نُتَخَطَّفْ مِنْ أَرْضِنَآ ۚ أَوَلَمْ نُمَكِّن لَّهُمْ حَرَمًا ءَامِنًا يُجْبَىٰٓ إِلَيْهِ ثَمَرَٰتُ كُلِّ شَىْءٍ رِّزْقًا مِّن لَّدُنَّا وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
তারা বলে- ‘আমরা যদি তোমার সাথে সৎপথের অনুসরণ করি তাহলে আমরা আমাদের দেশ থেকে উৎখাত হব।’ আমি কি তাদের জন্য এক নিরাপদ ‘হারাম’ প্রতিষ্ঠিত করিনি যেখানে সর্বপ্রকার ফলমূলের নজরানা আসে আমার পক্ষ থেকে রিযক স্বরূপ? কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
وَكَمْ أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍۭ بَطِرَتْ مَعِيشَتَهَا ۖ فَتِلْكَ مَسَـٰكِنُهُمْ لَمْ تُسْكَن مِّنۢ بَعْدِهِمْ إِلَّا قَلِيلًا ۖ وَكُنَّا نَحْنُ ٱلْوَٰرِثِينَ
আমি কত জনপদকে ধ্বংস করেছি যারা তাদের (ভোগবিলাসপূর্ণ) জীবনে চরম উৎকর্ষ সাধন করেছিল। এই তো তাদের বাসস্থান, তাদের পর এগুলোতে খুব অল্প লোকই বসবাস করেছে, অবশেষে আমিই মালিক রয়েছি।
وَمَا كَانَ رَبُّكَ مُهْلِكَ ٱلْقُرَىٰ حَتَّىٰ يَبْعَثَ فِىٓ أُمِّهَا رَسُولًا يَتْلُوا۟ عَلَيْهِمْ ءَايَـٰتِنَا ۚ وَمَا كُنَّا مُهْلِكِى ٱلْقُرَىٰٓ إِلَّا وَأَهْلُهَا ظَـٰلِمُونَ
তোমার প্রতিপালক কোন জনপদ ধ্বংস করেন না, যতক্ষণ না তিনি তার কেন্দ্রে রসূল প্রেরণ না করেন যে তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করে; আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করি না যতক্ষণ না তার বাসিন্দারা অত্যাচারী হয়।
وَمَآ أُوتِيتُم مِّن شَىْءٍ فَمَتَـٰعُ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَزِينَتُهَا ۚ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌ وَأَبْقَىٰٓ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তোমাদেরকে যে সব বস্তু দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ্যবস্তু ও তার শোভা মাত্র। আর আল্লাহর নিকট যা কিছু আছে তা সর্বশ্রেষ্ঠ ও চিরস্থায়ী, তবুও কি তোমরা বুঝবে না?
أَفَمَن وَعَدْنَـٰهُ وَعْدًا حَسَنًا فَهُوَ لَـٰقِيهِ كَمَن مَّتَّعْنَـٰهُ مَتَـٰعَ ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا ثُمَّ هُوَ يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ مِنَ ٱلْمُحْضَرِينَ
আমি যাকে ও‘য়াদা দিয়েছি, কল্যাণের ও‘য়াদা আর সেটা সে পাবেও, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান যাকে আমি পার্থিব জীবনের ভোগ-সম্ভার দিয়েছি, অতঃপর ক্বিয়ামতের দিন তাকে হাজির করা হবে (অপরাধীরূপে)?
وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ فَيَقُولُ أَيْنَ شُرَكَآءِىَ ٱلَّذِينَ كُنتُمْ تَزْعُمُونَ
সেদিন তাদেরকে ডাক দিয়ে তিনি বলবেন- ‘যাদেরকে তোমরা আমার শরীক গণ্য করতে তারা কোথায়?’
قَالَ ٱلَّذِينَ حَقَّ عَلَيْهِمُ ٱلْقَوْلُ رَبَّنَا هَـٰٓؤُلَآءِ ٱلَّذِينَ أَغْوَيْنَآ أَغْوَيْنَـٰهُمْ كَمَا غَوَيْنَا ۖ تَبَرَّأْنَآ إِلَيْكَ ۖ مَا كَانُوٓا۟ إِيَّانَا يَعْبُدُونَ
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তারা বলবে- ‘হে আমাদের পালনকর্তা! ওদেরকে আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম, ওদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলাম, যেমন আমরা নিজেরা বিভ্রান্ত হয়েছিলাম, আমরা তোমার কাছে দায়মুক্ত হচ্ছি (যে আমরা জোর ক’রে তাদেরকে বিভ্রান্ত করিনি)। এরা তো আমাদের ‘ইবাদাত করত না।
وَقِيلَ ٱدْعُوا۟ شُرَكَآءَكُمْ فَدَعَوْهُمْ فَلَمْ يَسْتَجِيبُوا۟ لَهُمْ وَرَأَوُا۟ ٱلْعَذَابَ ۚ لَوْ أَنَّهُمْ كَانُوا۟ يَهْتَدُونَ
তাদেরকে বলা হবে, ‘তোমাদের দেবতাগুলোকে ডাক, তখন তারা তাদেরকে ডাকবে’। কিন্তু তারা তাদের ডাকে সাড়া দিবে না। তারা শাস্তি দেখতে পাবে (তাদের সামনে)। তারা যদি সৎপথপ্রাপ্ত হত!
وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ فَيَقُولُ مَاذَآ أَجَبْتُمُ ٱلْمُرْسَلِينَ
আর সেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডাক দিবেন এবং বলবেন- ‘তোমরা রসূলদেরকে কী জওয়াব দিয়েছিলে?’
فَعَمِيَتْ عَلَيْهِمُ ٱلْأَنۢبَآءُ يَوْمَئِذٍ فَهُمْ لَا يَتَسَآءَلُونَ
সে দিন তাদের কথা বন্ধ হয়ে যাবে, অতঃপর পরস্পরকে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে না।
فَأَمَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحًا فَعَسَىٰٓ أَن يَكُونَ مِنَ ٱلْمُفْلِحِينَ
কিন্তু যে ব্যক্তি (তার জীবনে) তাওবাহ করেছিল আর ঈমান এনেছিল আর সৎকাজ করেছিল, আশা করা যায় সে সাফল্যমন্ডিতদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
وَرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ وَيَخْتَارُ ۗ مَا كَانَ لَهُمُ ٱلْخِيَرَةُ ۚ سُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ وَتَعَـٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ
তোমার প্রতিপালক যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন আর যাকে ইচ্ছে মনোনীত করেন। এতে তাদের কোন এখতিয়ার নেই, আল্লাহ পবিত্র, মহান। তারা যাকে শরীক করে তাত্থেকে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।
وَرَبُّكَ يَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُورُهُمْ وَمَا يُعْلِنُونَ
তোমার প্রতিপালক জানেন তাদের অন্তর যা গোপন করে আর যা প্রকাশ করে।
وَهُوَ ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ لَهُ ٱلْحَمْدُ فِى ٱلْأُولَىٰ وَٱلْـَٔاخِرَةِ ۖ وَلَهُ ٱلْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
আর তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ্ নেই, সমস্ত প্রশংসা তাঁরই- প্রথমেও আর শেষেও, বিধান তাঁরই, আর তোমাদেরকে তাঁর দিকেই ফিরিয়ে নেয়া হবে।
قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِن جَعَلَ ٱللَّهُ عَلَيْكُمُ ٱلَّيْلَ سَرْمَدًا إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ مَنْ إِلَـٰهٌ غَيْرُ ٱللَّهِ يَأْتِيكُم بِضِيَآءٍ ۖ أَفَلَا تَسْمَعُونَ
তোমরা কি ভেবে দেখেছ আল্লাহ যদি তোমাদের উপর রাতকে ক্বিয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করতেন তাহলে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ আছে কি যে তোমাদেরকে আলো এনে দিত? তবুও কি তোমরা কর্ণপাত করবে না?
قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِن جَعَلَ ٱللَّهُ عَلَيْكُمُ ٱلنَّهَارَ سَرْمَدًا إِلَىٰ يَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ مَنْ إِلَـٰهٌ غَيْرُ ٱللَّهِ يَأْتِيكُم بِلَيْلٍ تَسْكُنُونَ فِيهِ ۖ أَفَلَا تُبْصِرُونَ
তোমরা কি ভেবে দেখেছ আল্লাহ যদি তোমাদের উপর দিনকে ক্বিয়ামতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করতেন তাহলে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ আছে কি যে তোমাদের জন্য রাত্রি এনে দিত যাতে তোমরা আরাম করতে? তোমরা কি চিন্তা করে দেখবে না?
وَمِن رَّحْمَتِهِۦ جَعَلَ لَكُمُ ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ لِتَسْكُنُوا۟ فِيهِ وَلِتَبْتَغُوا۟ مِن فَضْلِهِۦ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
তিনিই স্বীয় রহমতে তোমাদের জন্য রাত ও দিন করেছেন যাতে তোমরা তাতে আরাম করতে পার আর তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ فَيَقُولُ أَيْنَ شُرَكَآءِىَ ٱلَّذِينَ كُنتُمْ تَزْعُمُونَ
সেদিন তিনি তাদেরকে ডাক দিবেন এবং বলবেন- ‘তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তারা কোথায়?’
وَنَزَعْنَا مِن كُلِّ أُمَّةٍ شَهِيدًا فَقُلْنَا هَاتُوا۟ بُرْهَـٰنَكُمْ فَعَلِمُوٓا۟ أَنَّ ٱلْحَقَّ لِلَّهِ وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَفْتَرُونَ
আমি প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে একজন সাক্ষী বের করে আনব, অতঃপর বলব- ‘তোমাদের (নির্দোষিতার পক্ষে) প্রমাণ হাজির কর। তখন তারা জানতে পারবে যে, ইলাহ হওয়ার অধিকার আল্লাহরই আর তারা যা উদ্ভাবন করত তা তাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে যাবে।
۞ إِنَّ قَـٰرُونَ كَانَ مِن قَوْمِ مُوسَىٰ فَبَغَىٰ عَلَيْهِمْ ۖ وَءَاتَيْنَـٰهُ مِنَ ٱلْكُنُوزِ مَآ إِنَّ مَفَاتِحَهُۥ لَتَنُوٓأُ بِٱلْعُصْبَةِ أُو۟لِى ٱلْقُوَّةِ إِذْ قَالَ لَهُۥ قَوْمُهُۥ لَا تَفْرَحْ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْفَرِحِينَ
কারূন ছিল মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের প্রতি উদ্ধত আচরণ করেছিল। তাকে আমি এমন ধনভান্ডার দিয়েছিলাম যে, তার চাবিগুলো বহন করা মাত্র একদল বলবান লোকের পক্ষে কষ্টকর ছিল। স্মরণ কর যখন তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিল (ধনের) গর্ব করো না, আল্লাহ গর্বিতদেরকে ভালবাসেন না।
وَٱبْتَغِ فِيمَآ ءَاتَىٰكَ ٱللَّهُ ٱلدَّارَ ٱلْـَٔاخِرَةَ ۖ وَلَا تَنسَ نَصِيبَكَ مِنَ ٱلدُّنْيَا ۖ وَأَحْسِن كَمَآ أَحْسَنَ ٱللَّهُ إِلَيْكَ ۖ وَلَا تَبْغِ ٱلْفَسَادَ فِى ٱلْأَرْضِ ۖ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْمُفْسِدِينَ
আল্লাহ তোমাকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে তুমি আখিরাতে (স্থায়ী সুখভোগের) আবাস অনুসন্ধান কর, আর দুনিয়ায় তোমার অংশের কথা ভুলে যেও না, (মানুষের) কল্যাণ সাধন কর, যেমন আল্লাহ তোমার কল্যাণ করেছেন, দেশে বিপর্যয় সৃষ্টির কামনা কর না, নিশ্চয় আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।
قَالَ إِنَّمَآ أُوتِيتُهُۥ عَلَىٰ عِلْمٍ عِندِىٓ ۚ أَوَلَمْ يَعْلَمْ أَنَّ ٱللَّهَ قَدْ أَهْلَكَ مِن قَبْلِهِۦ مِنَ ٱلْقُرُونِ مَنْ هُوَ أَشَدُّ مِنْهُ قُوَّةً وَأَكْثَرُ جَمْعًا ۚ وَلَا يُسْـَٔلُ عَن ذُنُوبِهِمُ ٱلْمُجْرِمُونَ
সে বলল- ‘এ সম্পদ তো আমাকে দেয়া হয়েছে যেহেতু আমার কাছে জ্ঞান আছে।’ সে কি জানে না যে, আল্লাহ তার পূর্বে অনেক মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দিয়েছেন যারা শক্তিতে তার চেয়ে ছিল প্রবল আর জনসংখ্যায় ছিল অধিক? অপরাধীদেরকে (তাদের অপরাধ সম্পর্কে মুখে) কিছুই জিজ্ঞেস করা হবে না।
فَخَرَجَ عَلَىٰ قَوْمِهِۦ فِى زِينَتِهِۦ ۖ قَالَ ٱلَّذِينَ يُرِيدُونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا يَـٰلَيْتَ لَنَا مِثْلَ مَآ أُوتِىَ قَـٰرُونُ إِنَّهُۥ لَذُو حَظٍّ عَظِيمٍ
কারূন শান-শওকাতের সাথে তার সম্প্রদায়ের সামনে হাজির হল। যারা পার্থিব জীবন কামনা করে তারা বলে উঠল- ‘হায়! কারূনকে যা দেয়া হয়েছে আমাদের জন্যও যদি তা হত! সত্যই সে মহা ভাগ্যবান ব্যক্তি।’
وَقَالَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْعِلْمَ وَيْلَكُمْ ثَوَابُ ٱللَّهِ خَيْرٌ لِّمَنْ ءَامَنَ وَعَمِلَ صَـٰلِحًا وَلَا يُلَقَّىٰهَآ إِلَّا ٱلصَّـٰبِرُونَ
যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিল তারা বলল- ‘ধিক তোমাদের প্রতি, আল্লাহর পুরস্কারই শ্রেষ্ঠতর তাদের জন্য যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, আর সত্যপথে অবিচল ধৈর্যশীল ছাড়া অন্য কেউ তা প্রাপ্ত হয় না।
فَخَسَفْنَا بِهِۦ وَبِدَارِهِ ٱلْأَرْضَ فَمَا كَانَ لَهُۥ مِن فِئَةٍ يَنصُرُونَهُۥ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَمَا كَانَ مِنَ ٱلْمُنتَصِرِينَ
অতঃপর আমি ভূগর্ভে প্রোথিত করলাম কারূনকে ও তার প্রাসাদকে। আল্লাহর ব্যতীত তাকে সাহায্য করার কোন দল ছিল না, আর সে নিজেও নিজেকে রক্ষা করতে পারল না।
وَأَصْبَحَ ٱلَّذِينَ تَمَنَّوْا۟ مَكَانَهُۥ بِٱلْأَمْسِ يَقُولُونَ وَيْكَأَنَّ ٱللَّهَ يَبْسُطُ ٱلرِّزْقَ لِمَن يَشَآءُ مِنْ عِبَادِهِۦ وَيَقْدِرُ ۖ لَوْلَآ أَن مَّنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَا لَخَسَفَ بِنَا ۖ وَيْكَأَنَّهُۥ لَا يُفْلِحُ ٱلْكَـٰفِرُونَ
গতকাল যারা তার মর্যাদার ন্যায় কামনা করেছিল তারা সকলে বলতে লাগল, ‘হায়, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের যার জন্য ইচ্ছে রিযক বর্ধিত করেন আর যার জন্য ইচ্ছে হ্রাস করেন। আল্লাহ যদি আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন তবে তিনি আমাদেরকেও ভূগর্ভে প্রোথিত করে দিতেন। হায়! অবিশ্বাসীরা সাফল্যমন্ডিত হয় না।
تِلْكَ ٱلدَّارُ ٱلْـَٔاخِرَةُ نَجْعَلُهَا لِلَّذِينَ لَا يُرِيدُونَ عُلُوًّا فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا فَسَادًا ۚ وَٱلْعَـٰقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ
সেই আখিরাতের ঘর আমি তাদের জন্য করেছি যারা পৃথিবীর বুকে ঔদ্ধত্য প্রকাশ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। শুভ পরিণাম আল্লাহভীরুদের জন্য।
مَن جَآءَ بِٱلْحَسَنَةِ فَلَهُۥ خَيْرٌ مِّنْهَا ۖ وَمَن جَآءَ بِٱلسَّيِّئَةِ فَلَا يُجْزَى ٱلَّذِينَ عَمِلُوا۟ ٱلسَّيِّـَٔاتِ إِلَّا مَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
যে কেউ সৎকর্ম নিয়ে হাজির হবে তার জন্য আছে আরো উত্তম প্রতিদান। আর যে মন্দ কাজ নিয়ে হাজির হবে তাহলে যারা মন্দকর্ম করে তাদেরকে তাদের কাজ অনুপাতেই শাস্তি দেয়া হবে।
إِنَّ ٱلَّذِى فَرَضَ عَلَيْكَ ٱلْقُرْءَانَ لَرَآدُّكَ إِلَىٰ مَعَادٍ ۚ قُل رَّبِّىٓ أَعْلَمُ مَن جَآءَ بِٱلْهُدَىٰ وَمَنْ هُوَ فِى ضَلَـٰلٍ مُّبِينٍ
যিনি তোমার প্রতি কুরআন বিধিবদ্ধ করেছেন তিনি অবশ্যই তোমাকে মূলভূমিতে (মাক্কায়) ফিরিয়ে আনবেন। বল, আমার প্রতিপালক ভাল করেই জানেন কে সৎপথের নির্দেশ নিয়ে এসেছে আর কে আছে সুস্পষ্ট গুমরাহীতে।
وَمَا كُنتَ تَرْجُوٓا۟ أَن يُلْقَىٰٓ إِلَيْكَ ٱلْكِتَـٰبُ إِلَّا رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ ۖ فَلَا تَكُونَنَّ ظَهِيرًا لِّلْكَـٰفِرِينَ
তুমি তো প্রত্যাশা করনি যে, তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করা হবে। এটা তোমার প্রতিপালকের রহমত বিশেষ। কাজেই তুমি কক্ষনো কাফিরদের সমর্থনকারী হয়ো না।
وَلَا يَصُدُّنَّكَ عَنْ ءَايَـٰتِ ٱللَّهِ بَعْدَ إِذْ أُنزِلَتْ إِلَيْكَ ۖ وَٱدْعُ إِلَىٰ رَبِّكَ ۖ وَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ
তোমার প্রতি আল্লাহর আয়াত নাযিল হওয়ার পর তারা যেন তোমাকে তাত্থেকে কক্ষনো বিমুখ না করতে পারে। তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে আহবান জানাও, আর কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
وَلَا تَدْعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ ۘ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُۥ ۚ لَهُ ٱلْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তাঁর (সত্তা) ছাড়া সকল কিছুই ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই, আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।