পুনরুত্থান
لَآ أُقْسِمُ بِيَوْمِ ٱلْقِيَـٰمَةِ
আমি কসম করছি ক্বিয়ামতের দিনের,
وَلَآ أُقْسِمُ بِٱلنَّفْسِ ٱللَّوَّامَةِ
আমি আরো কসম করছি সেই মনের যে (অন্যায় কাজ ক’রে বসলে) নিজেকে ধিক্কার দেয় (যে তোমাদেরকে অবশ্যই আবার জীবিত করে উঠানো হবে)।
أَيَحْسَبُ ٱلْإِنسَـٰنُ أَلَّن نَّجْمَعَ عِظَامَهُۥ
মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার হাড়গুলোকে একত্রিত করতে পারব না।
بَلَىٰ قَـٰدِرِينَ عَلَىٰٓ أَن نُّسَوِّىَ بَنَانَهُۥ
কেন নয়, আমি তার আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত সঠিকভাবে বানিয়ে দিতে সক্ষম
بَلْ يُرِيدُ ٱلْإِنسَـٰنُ لِيَفْجُرَ أَمَامَهُۥ
কিন্তু মানুষ তার আগামী দিনগুলোতেও পাপাচার করতে চায়।
يَسْـَٔلُ أَيَّانَ يَوْمُ ٱلْقِيَـٰمَةِ
সে জিজ্ঞেস করে, ‘ক্বিয়ামত দিবস কবে?’
فَإِذَا بَرِقَ ٱلْبَصَرُ
যখন চোখ ধাঁধিয়ে যাবে,
وَخَسَفَ ٱلْقَمَرُ
চাঁদ হয়ে যাবে আলোকহীন
وَجُمِعَ ٱلشَّمْسُ وَٱلْقَمَرُ
সুরুজ আর চাঁদকে একত্রে জুড়ে দেয়া হবে,
يَقُولُ ٱلْإِنسَـٰنُ يَوْمَئِذٍ أَيْنَ ٱلْمَفَرُّ
সেদিন মানুষ বলবে- ‘আজ পালানোর জায়গা কোথায়?’
كَلَّا لَا وَزَرَ
মোটেই না, আশ্রয়ের কোন জায়গা নেই।
إِلَىٰ رَبِّكَ يَوْمَئِذٍ ٱلْمُسْتَقَرُّ
সেদিন ঠাঁই হবে (একমাত্র) তোমার প্রতিপালকেরই নিকট।
يُنَبَّؤُا۟ ٱلْإِنسَـٰنُ يَوْمَئِذٍۭ بِمَا قَدَّمَ وَأَخَّرَ
সেদিন মানুষকে জানিয়ে দেয়া হবে সে কী (‘আমাল) আগে পাঠিয়েছে আর কী পেছনে ছেড়ে এসেছে।
بَلِ ٱلْإِنسَـٰنُ عَلَىٰ نَفْسِهِۦ بَصِيرَةٌ
আসলে মানুষ নিজেই নিজের সম্পর্কে চাক্ষুসভাবে অবগত।
وَلَوْ أَلْقَىٰ مَعَاذِيرَهُۥ
যদিও সে নানান অজুহাত পেশ করে।
لَا تُحَرِّكْ بِهِۦ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِۦٓ
(এ সূরাহ অবতীর্ণ হওয়ার সময় আল্লাহর রসূল তা মুখস্থ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লে আল্লাহ অভয় দিয়ে বললেন) তুমি তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তোমার জিভ নাড়াবে না।
إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَهُۥ وَقُرْءَانَهُۥ
এর সংরক্ষণ ও পড়ানোর দায়িত্ব আমারই।
فَإِذَا قَرَأْنَـٰهُ فَٱتَّبِعْ قُرْءَانَهُۥ
কাজেই আমি যখন তা পাঠ করি, তখন তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর।
ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُۥ
অতঃপর তা (ওয়াহীয়ে খফী বা প্রচ্ছন্ন ওয়াহীর মাধ্যমে) বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা আমারই দায়িত্ব।
كَلَّا بَلْ تُحِبُّونَ ٱلْعَاجِلَةَ
(আবার পূর্বের প্রসঙ্গে ফিরে গিয়ে আল্লাহ বলছেন) না, প্রকৃতপক্ষে তোমরা ইহজীবনকেই ভালবাস,
وَتَذَرُونَ ٱلْـَٔاخِرَةَ
আর আখিরাতকে উপেক্ষা কর।
وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَّاضِرَةٌ
কতক মুখ সেদিন উজ্জ্বল হবে।
إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٌ
তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে।
وَوُجُوهٌ يَوْمَئِذٍۭ بَاسِرَةٌ
কতক মুখ সেদিন বিবর্ণ হবে।
تَظُنُّ أَن يُفْعَلَ بِهَا فَاقِرَةٌ
তারা ধারণা করবে যে, তাদের সঙ্গে কোমর-ভাঙ্গা আচরণ করা হবে।
كَلَّآ إِذَا بَلَغَتِ ٱلتَّرَاقِىَ
(তোমরা যে ভাবছ ক্বিয়ামত হবে না সেটা) কক্ষনো নয়, প্রাণ যখন কণ্ঠে এসে পৌঁছবে,
وَقِيلَ مَنْ ۜ رَاقٍ
তখন বলা হবে, (তাকে বাঁচানোর জন্য) ঝাড়ফুঁক দেয়ার কেউ আছে কি?
وَظَنَّ أَنَّهُ ٱلْفِرَاقُ
সে (অর্থাৎ মুমূর্ষু ব্যক্তি) মনে করবে যে, (দুনিয়া হতে) বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে।
وَٱلْتَفَّتِ ٱلسَّاقُ بِٱلسَّاقِ
আর জড়িয়ে যাবে এক পায়ের নলা আরেক পায়ের নলার সাথে।
إِلَىٰ رَبِّكَ يَوْمَئِذٍ ٱلْمَسَاقُ
সেদিন (সব কিছুর) যাত্রা হবে তোমার প্রতিপালকের পানে।
فَلَا صَدَّقَ وَلَا صَلَّىٰ
কিন্তু না, সে বিশ্বাসও করেনি, নামাযও আদায় করেনি।
وَلَـٰكِن كَذَّبَ وَتَوَلَّىٰ
বরং সে প্রত্যাখ্যান করেছিল আর মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
ثُمَّ ذَهَبَ إِلَىٰٓ أَهْلِهِۦ يَتَمَطَّىٰٓ
অতঃপর সে অতি দম্ভভরে তার পরিবারবর্গের কাছে ফিরে গিয়েছিল।
أَوْلَىٰ لَكَ فَأَوْلَىٰ
দুর্ভোগ তোমার জন্য, দুর্ভোগ,
ثُمَّ أَوْلَىٰ لَكَ فَأَوْلَىٰٓ
অতঃপর তোমার জন্য দুর্ভোগের উপর দুর্ভোগ।
أَيَحْسَبُ ٱلْإِنسَـٰنُ أَن يُتْرَكَ سُدًى
মানুষ কি মনে করে নিয়েছে যে তাকে এমনি ছেড়ে দেয়া হবে। (তাকে পুনর্জীবিত করাও হবে না, আর বিচারের জন্য হাজির করাও হবে না)?
أَلَمْ يَكُ نُطْفَةً مِّن مَّنِىٍّ يُمْنَىٰ
(তার মৃত্যুর পর আল্লাহ পুনরায় তাকে জীবিত করতে পারবেন না সে এটা কী ভাবে ধারণা করছে?) সে কি (মায়ের গর্ভে) নিক্ষিপ্ত শুক্রবিন্দু ছিল না?
ثُمَّ كَانَ عَلَقَةً فَخَلَقَ فَسَوَّىٰ
তারপর সে হল রক্তপিন্ড, অতঃপর আল্লাহ তাকে সৃষ্টি করলেন ও সুবিন্যস্ত করলেন।
فَجَعَلَ مِنْهُ ٱلزَّوْجَيْنِ ٱلذَّكَرَ وَٱلْأُنثَىٰٓ
অতঃপর তা থেকে তিনি সৃষ্টি করলেন জুড়ি- পুরুষ ও নারী।
أَلَيْسَ ذَٰلِكَ بِقَـٰدِرٍ عَلَىٰٓ أَن يُحْـِۧىَ ٱلْمَوْتَىٰ
এহেন স্রষ্টা কি মৃতকে আবার জীবিত করতে সক্ষম নন?