An-Najm

তারা

0:00 / 0:00

وَٱلنَّجْمِ إِذَا هَوَىٰ

শপথ তারকার যখন তা অস্ত যায়,

مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَىٰ

তোমাদের (মাঝে ছোট থেকে বড় হয়েছে সেই) সঙ্গী গুমরাহও নয় আর ভুলপথে পরিচালিতও নয়,

وَمَا يَنطِقُ عَنِ ٱلْهَوَىٰٓ

আর সে মনগড়া কথাও বলে না।

إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْىٌ يُوحَىٰ

তাতো ওয়াহী যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়,

عَلَّمَهُۥ شَدِيدُ ٱلْقُوَىٰ

তাকে শিক্ষা দেয় শক্তিশালী,

ذُو مِرَّةٍ فَٱسْتَوَىٰ

প্রজ্ঞার অধিকারী (জিবরাঈল) সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়ে ছিল,

وَهُوَ بِٱلْأُفُقِ ٱلْأَعْلَىٰ

আর সে ছিল ঊর্ধ্ব দিগন্তে,

ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ

অতঃপর সে (নবীর) নিকটবর্তী হল, অতঃপর আসলো আরো নিকটে,

فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ

ফলে [নবী (সাঃ) ও জিবরাঈলের মাঝে] দুই ধনুকের ব্যবধান রইল অথবা আরো কম।

فَأَوْحَىٰٓ إِلَىٰ عَبْدِهِۦ مَآ أَوْحَىٰ

তখন (আল্লাহ) তাঁর বান্দাহর প্রতি ওয়াহী করলেন যা ওয়াহী করার ছিল।

مَا كَذَبَ ٱلْفُؤَادُ مَا رَأَىٰٓ

(নবীর) অন্তঃকরণ মিথ্যে মনে করেনি যা সে দেখে ছিল।

أَفَتُمَـٰرُونَهُۥ عَلَىٰ مَا يَرَىٰ

সে যা দেখেছে সে বিষয়ে তোমরা কি তার সঙ্গে বিতর্ক করবে?

وَلَقَدْ رَءَاهُ نَزْلَةً أُخْرَىٰ

অবশ্যই সে [অর্থাৎ নবী (সা.)] তাকে [অর্থাৎ জিবরাঈল (আঃ)-কে] আরেকবার দেখেছিল

عِندَ سِدْرَةِ ٱلْمُنتَهَىٰ

শেষসীমার বরই গাছের কাছে,

عِندَهَا جَنَّةُ ٱلْمَأْوَىٰٓ

যার কাছে অবস্থিত বসবাসের জান্নাত।

إِذْ يَغْشَى ٱلسِّدْرَةَ مَا يَغْشَىٰ

যখন গাছটি যা দিয়ে ঢেকে থাকার তা দিয়ে ঢাকা ছিল, (যার বর্ণনা মানুষের বোধগম্য নয়)

مَا زَاغَ ٱلْبَصَرُ وَمَا طَغَىٰ

(নবীর) দৃষ্টি ভ্রমও ঘটেনি, সীমা ছাড়িয়েও যায়নি।

لَقَدْ رَأَىٰ مِنْ ءَايَـٰتِ رَبِّهِ ٱلْكُبْرَىٰٓ

সে তার প্রতিপালকের বড় বড় নিদর্শন দেখেছিল।

أَفَرَءَيْتُمُ ٱللَّـٰتَ وَٱلْعُزَّىٰ

তোমরা কি লাত ও উযযা সম্পর্কে ভেবে দেখেছ?

وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلْأُخْرَىٰٓ

আর তৃতীয় আরেকটি মানাৎ সম্পর্কে? (এ সব অক্ষম, বাকশক্তিহীন, নড়া-চড়ার শক্তিহীন মূর্তিগুলোর পূজা করা কতটা যুক্তিযুক্ত)

أَلَكُمُ ٱلذَّكَرُ وَلَهُ ٱلْأُنثَىٰ

কী! তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান আর আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান?

تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰٓ

তাহলে এটাতো খুবই অসঙ্গত ভাগ-বাঁটোয়ারা।

إِنْ هِىَ إِلَّآ أَسْمَآءٌ سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَـٰنٍ ۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا ٱلظَّنَّ وَمَا تَهْوَى ٱلْأَنفُسُ ۖ وَلَقَدْ جَآءَهُم مِّن رَّبِّهِمُ ٱلْهُدَىٰٓ

এগুলো তো কেবল কতকগুলো নাম যে নাম তোমরা আর তোমাদের পিতৃ পৃরুষরা রেখেছ, এর পক্ষে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। তারা তো শুধু অনুমান আর প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, যদিও তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে।

أَمْ لِلْإِنسَـٰنِ مَا تَمَنَّىٰ

মানুষ কি তাই পায় যা সে চায়? (আল্লাহ যাকে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে দেন ইহকালে আর পরকালে),

فَلِلَّهِ ٱلْـَٔاخِرَةُ وَٱلْأُولَىٰ

কেননা আল্লাহই পরকাল আর ইহকালের মালিক।

۞ وَكَم مِّن مَّلَكٍ فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ لَا تُغْنِى شَفَـٰعَتُهُمْ شَيْـًٔا إِلَّا مِنۢ بَعْدِ أَن يَأْذَنَ ٱللَّهُ لِمَن يَشَآءُ وَيَرْضَىٰٓ

আকাশে কতই না ফেরেশতা আছে তাদের সুপারিশ কোনই কাজে আসবে না, তবে (কাজে আসবে) যদি তিনি অনুমতি দেন যার জন্য আল্লাহ ইচ্ছে করবেন এবং যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট।

إِنَّ ٱلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِٱلْـَٔاخِرَةِ لَيُسَمُّونَ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةَ تَسْمِيَةَ ٱلْأُنثَىٰ

যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তারাই ফেরেশতাদের স্ত্রীবাচক নামে নামকরণ করে থাকে।

وَمَا لَهُم بِهِۦ مِنْ عِلْمٍ ۖ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا ٱلظَّنَّ ۖ وَإِنَّ ٱلظَّنَّ لَا يُغْنِى مِنَ ٱلْحَقِّ شَيْـًٔا

অথচ এ বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই, তারা কেবল অনুমানেরই অনুসরণ করছে, আর প্রকৃত সত্যের মুকাবালায় অনুমান কোনই কাজে আসে না।

فَأَعْرِضْ عَن مَّن تَوَلَّىٰ عَن ذِكْرِنَا وَلَمْ يُرِدْ إِلَّا ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا

কাজেই যে আমার স্মরণ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় আর পার্থিব জীবন ছাড়া (অন্য কিছুই) কামনা করে না, তুমি তাকে এড়িয়ে চল।

ذَٰلِكَ مَبْلَغُهُم مِّنَ ٱلْعِلْمِ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِۦ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ ٱهْتَدَىٰ

তাদের জ্ঞানের দৌড় ঐ পর্যন্তই। তোমার প্রতিপালক খুব ভাল করেই জানেন কে তার পথ থেকে গুমরাহ হয়ে গেছে, আর তিনি ভালই জানেন কে সঠিক পথে আছে।

وَلِلَّهِ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ لِيَجْزِىَ ٱلَّذِينَ أَسَـٰٓـُٔوا۟ بِمَا عَمِلُوا۟ وَيَجْزِىَ ٱلَّذِينَ أَحْسَنُوا۟ بِٱلْحُسْنَى

যা আছে আকাশে আর যা আছে যমীনে সব আল্লাহরই- যাতে তিনি যারা মন্দ কাজ করে তাদেরকে তাদের কাজের প্রতিফল দেন আর যারা সৎকর্ম করে তাদেরকে দেন শুভ প্রতিফল।

ٱلَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَـٰٓئِرَ ٱلْإِثْمِ وَٱلْفَوَٰحِشَ إِلَّا ٱللَّمَمَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ وَٰسِعُ ٱلْمَغْفِرَةِ ۚ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ إِذْ أَنشَأَكُم مِّنَ ٱلْأَرْضِ وَإِذْ أَنتُمْ أَجِنَّةٌ فِى بُطُونِ أُمَّهَـٰتِكُمْ ۖ فَلَا تُزَكُّوٓا۟ أَنفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ ٱتَّقَىٰٓ

যারা বিরত থাকে বড় বড় পাপ আর অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে ছোট খাট দোষ-ত্রুটি ছাড়া; বস্তুতঃ তোমার প্রতিপালক ক্ষমা করার ব্যাপারে অতি প্রশস্ত। তিনি তোমাদের সম্পর্কে খুব ভালভাবেই জানেন যখন তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন আর যখন তোমরা তোমাদের মায়েদের পেটে ভ্রুণ অবস্থায় ছিলে। কাজেই নিজেদেরকে খুব পবিত্র মনে করো না। কে তাক্বওয়া অবলম্বন করে তা তিনি ভালভাবেই জানেন।

أَفَرَءَيْتَ ٱلَّذِى تَوَلَّىٰ

তুমি কি তাকে দেখেছ যে (আল্লাহ হতে) মুখ ফিরিয়ে নেয়?

وَأَعْطَىٰ قَلِيلًا وَأَكْدَىٰٓ

এবং সামান্য দান করে অতঃপর (হৃদয়) শক্ত করে ফেলে?

أَعِندَهُۥ عِلْمُ ٱلْغَيْبِ فَهُوَ يَرَىٰٓ

তার কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যার কারণে সে দেখতে পায়?

أَمْ لَمْ يُنَبَّأْ بِمَا فِى صُحُفِ مُوسَىٰ

নাকি মূসার কিতাবের তথ্য তার কাছে পৌঁছানো হয়নি,

وَإِبْرَٰهِيمَ ٱلَّذِى وَفَّىٰٓ

আর ইবরাহীমের (কিতাবের খবর) যে (ইবরাহীম) ছিল পুরোপুরি দায়িত্ব পালনকারী।

أَلَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ

(সে খবর এই) যে, কোন বোঝা বহনকারী বইবে না অপরের বোঝা।

وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَـٰنِ إِلَّا مَا سَعَىٰ

আর এই যে, মানুষ যা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে তাছাড়া কিছুই পায় না,

وَأَنَّ سَعْيَهُۥ سَوْفَ يُرَىٰ

আর এই যে, তার চেষ্টা সাধনার ফল শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে,

ثُمَّ يُجْزَىٰهُ ٱلْجَزَآءَ ٱلْأَوْفَىٰ

অতঃপর তাকে দেয়া হবে পূর্ণ প্রতিফল

وَأَنَّ إِلَىٰ رَبِّكَ ٱلْمُنتَهَىٰ

আর এই যে, শেষ গন্তব্য হল তোমার প্রতিপালক পর্যন্ত,

وَأَنَّهُۥ هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَىٰ

আর এই যে, তিনিই হাসান, তিনিই কাঁদান।

وَأَنَّهُۥ هُوَ أَمَاتَ وَأَحْيَا

আর এই যে, তিনিই মারেন, তিনিই বাঁচান।

وَأَنَّهُۥ خَلَقَ ٱلزَّوْجَيْنِ ٱلذَّكَرَ وَٱلْأُنثَىٰ

আর এই যে, তিনিই সৃষ্টি করেন জোড়া- পুরুষ আর নারী,

مِن نُّطْفَةٍ إِذَا تُمْنَىٰ

এক ফোঁটা শুক্র হতে যখন তা নিক্ষিপ্ত হয়

وَأَنَّ عَلَيْهِ ٱلنَّشْأَةَ ٱلْأُخْرَىٰ

আর এই যে, পুনরায় সৃষ্টির দায়িত্বভার তাঁরই উপর,

وَأَنَّهُۥ هُوَ أَغْنَىٰ وَأَقْنَىٰ

আর এই যে, তিনিই অভাবমুক্ত করেন আর সম্পদ দেন,

وَأَنَّهُۥ هُوَ رَبُّ ٱلشِّعْرَىٰ

আর এই যে, শি‘রা (অর্থাৎ লুব্ধক নক্ষত্র)’র তিনিই প্রতিপালক,

وَأَنَّهُۥٓ أَهْلَكَ عَادًا ٱلْأُولَىٰ

আর এই যে, তিনিই প্রাচীন ‘আদ জাতিকে ধ্বংস করেছিলেন,

وَثَمُودَا۟ فَمَآ أَبْقَىٰ

আর সামূদ জাতিকেও, তাদের একজনকেও বাকী রাখেননি।

وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ هُمْ أَظْلَمَ وَأَطْغَىٰ

আর তার পূর্বে নূহের জাতিকেও, তারা ছিল অত্যধিক যালিম ও সীমালঙ্ঘনকারী।

وَٱلْمُؤْتَفِكَةَ أَهْوَىٰ

তিনি (লূত জাতির) উল্টানো আবাস ভূমিকে উঠিয়ে নিক্ষেপ করেছিলেন,

فَغَشَّىٰهَا مَا غَشَّىٰ

অতঃপর তাকে আচ্ছন্ন করল যা তাকে আচ্ছন্ন করেছে।

فَبِأَىِّ ءَالَآءِ رَبِّكَ تَتَمَارَىٰ

অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের কোন নি‘মাতে সন্দেহ পোষণ করবে?

هَـٰذَا نَذِيرٌ مِّنَ ٱلنُّذُرِ ٱلْأُولَىٰٓ

অতীতের সতর্ককারীদের মত এ (নবীও) একজন সতর্ককারী।

أَزِفَتِ ٱلْـَٔازِفَةُ

আগমনকারী মুহূর্ত (ক্বিয়ামত) নিকটবর্তী।

لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ ٱللَّهِ كَاشِفَةٌ

আল্লাহ ছাড়া কেউ তা সরাতে পারে না (বা প্রকাশ করতে পারে না)।

أَفَمِنْ هَـٰذَا ٱلْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ

তোমরা কি এ কথায় বিস্মিত হচ্ছ?

وَتَضْحَكُونَ وَلَا تَبْكُونَ

আর হাসছ, কাঁদছ না?

وَأَنتُمْ سَـٰمِدُونَ

বৃথা খেল-তামাশায় সময় ক্ষেপন করছ,

فَٱسْجُدُوا۟ لِلَّهِ وَٱعْبُدُوا۟ ۩

তাই, আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাজদায় পতিত হও আর তাঁর বন্দেগী কর।[সাজদাহ]