As-Saffat

সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো

0:00 / 0:00

وَٱلصَّـٰٓفَّـٰتِ صَفًّا

শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো,

فَٱلزَّٰجِرَٰتِ زَجْرًا

অতঃপর যারা ধমক দিয়ে তিরস্কার করে তাদের শপথ,

فَٱلتَّـٰلِيَـٰتِ ذِكْرًا

আর যারা (আল্লাহর) যিকর আবৃত্তিতে লিপ্ত,

إِنَّ إِلَـٰهَكُمْ لَوَٰحِدٌ

তোমাদের প্রকৃত ইলাহ অবশ্য একজন।

رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ ٱلْمَشَـٰرِقِ

যিনি আসমান, যমীন আর এ দু’য়ের মাঝে যা আছে এবং সকল উদয় স্থলের মালিক।

إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِزِينَةٍ ٱلْكَوَاكِبِ

আমি নিকটবর্তী আসমানকে তারকারাজির সৌন্দর্য দ্বারা সুশোভিত করেছি,

وَحِفْظًا مِّن كُلِّ شَيْطَـٰنٍ مَّارِدٍ

আর (এটা করেছি) প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়ত্বান থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা হিসেবে।

لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى ٱلْمَلَإِ ٱلْأَعْلَىٰ وَيُقْذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٍ

যার ফলে তারা উচ্চতর জগতের কিছু শুনতে পারে না, চতুর্দিক থেকে তাদের প্রতি নিক্ষেপ করা হয় (উল্কাপিন্ড)

دُحُورًا ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ وَاصِبٌ

(তাদেরকে) তাড়ানোর জন্য। তাদের জন্য আছে বিরামহীন শাস্তি।

إِلَّا مَنْ خَطِفَ ٱلْخَطْفَةَ فَأَتْبَعَهُۥ شِهَابٌ ثَاقِبٌ

তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পিছু নেয়।

فَٱسْتَفْتِهِمْ أَهُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَم مَّنْ خَلَقْنَآ ۚ إِنَّا خَلَقْنَـٰهُم مِّن طِينٍ لَّازِبٍۭ

তাদেরকে জিজ্ঞেস কর- সৃষ্টির ক্ষেত্রে কি তারাই বেশি প্রবল, না আমি অন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছি তা (বেশি প্রবল)? আমি তো তাদেরকে সৃষ্টি করেছি (অতি নগণ্য) মাটি থেকে।

بَلْ عَجِبْتَ وَيَسْخَرُونَ

(আল্লাহর শক্তি-ক্ষমতা-মহিমা দেখে) তুমি কর বিস্ময়বোধ, আর তারা করে বিদ্রূপ।

وَإِذَا ذُكِّرُوا۟ لَا يَذْكُرُونَ

তাদেরকে উপদেশ দেয়া হলে তারা উপদেশ নেয় না।

وَإِذَا رَأَوْا۟ ءَايَةً يَسْتَسْخِرُونَ

তারা আল্লাহর কোন নিদর্শন দেখলে ঠাট্টা করে।

وَقَالُوٓا۟ إِنْ هَـٰذَآ إِلَّا سِحْرٌ مُّبِينٌ

আর তারা বলে- ‘এটা স্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই না।’

أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَـٰمًا أَءِنَّا لَمَبْعُوثُونَ

আমরা যখন মরব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব, তখনো কি আমাদেরকে আবার জীবিত করে উঠানো হবে?

أَوَءَابَآؤُنَا ٱلْأَوَّلُونَ

এবং আমাদের পূর্বপুরুষদেরকেও (উঠানো হবে)?’

قُلْ نَعَمْ وَأَنتُمْ دَٰخِرُونَ

তাদেরকে বল, ‘হাঁ, এবং তোমরা হবে লাঞ্ছিত।’

فَإِنَّمَا هِىَ زَجْرَةٌ وَٰحِدَةٌ فَإِذَا هُمْ يَنظُرُونَ

ওটা (হবে) মাত্র একটা প্রচন্ড শব্দ, আর তখনই তারা স্বচক্ষে (সব কিছু) দেখতে পাবে।

وَقَالُوا۟ يَـٰوَيْلَنَا هَـٰذَا يَوْمُ ٱلدِّينِ

তারা আরো বলবে- ‘‘হায় আমাদের দুর্ভাগ্য! এটাই তো কর্মফলের দিন।’

هَـٰذَا يَوْمُ ٱلْفَصْلِ ٱلَّذِى كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ

এটাই ফয়সালার দিন যাকে তোমরা মিথ্যে বলে অস্বীকার করতে।

۞ ٱحْشُرُوا۟ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ وَأَزْوَٰجَهُمْ وَمَا كَانُوا۟ يَعْبُدُونَ

(হুকুম দেয়া হবে) ‘একত্র কর যালিমদেরকে আর তাদের সঙ্গীদেরকে এবং তাদেরকেও, যাদের তারা ‘ইবাদাত করত

مِن دُونِ ٱللَّهِ فَٱهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَٰطِ ٱلْجَحِيمِ

আল্লাহর (‘ইবাদাতের) পরিবর্তে, আর তাদেরকে জাহান্নামের পথ দেখাও।

وَقِفُوهُمْ ۖ إِنَّهُم مَّسْـُٔولُونَ

অতঃপর ওদেরকে থামাও ওদেরকে তো প্রশ্ন করা হবে-

مَا لَكُمْ لَا تَنَاصَرُونَ

‘তোমাদের হয়েছে কী, তোমরা পরস্পরকে সাহায্য করছ না কেন?’

بَلْ هُمُ ٱلْيَوْمَ مُسْتَسْلِمُونَ

বরং আজ তারা (বিচারের সামনে) আত্মসমপর্ণ করবে।

وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَآءَلُونَ

তারা একে অপরের দিকে মুখ করে পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

قَالُوٓا۟ إِنَّكُمْ كُنتُمْ تَأْتُونَنَا عَنِ ٱلْيَمِينِ

তারা (তাদের ক্ষমতাশালীদেরকে) বলবে, ‘‘তোমরা তো তোমাদের ক্ষমতা নিয়ে আমাদের কাছে আসতে।’

قَالُوا۟ بَل لَّمْ تَكُونُوا۟ مُؤْمِنِينَ

তারা (অর্থাৎ ক্ষমতার অধিকারীরা) উত্তর দিবে- ‘‘তোমরা তো (বিচার দিবসের প্রতি) বিশ্বাসীই ছিলে না।

وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيْكُم مِّن سُلْطَـٰنٍۭ ۖ بَلْ كُنتُمْ قَوْمًا طَـٰغِينَ

আর তোমাদের উপর আমাদের কোন কর্তৃত্বও ছিল না, বরং তোমরা ছিলে সীমালঙ্ঘনকারী জাতি।

فَحَقَّ عَلَيْنَا قَوْلُ رَبِّنَآ ۖ إِنَّا لَذَآئِقُونَ

আমাদের বিপক্ষে আমাদের পালনকর্তার উক্তিই সত্য হয়েছে, আমাদেরকে অবশ্যই শাস্তির স্বাদ নিতে হবে।

فَأَغْوَيْنَـٰكُمْ إِنَّا كُنَّا غَـٰوِينَ

আসলে আমরাই তোমাদেরকে গোমরাহ করেছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও গোমরাহ ছিলাম।’

فَإِنَّهُمْ يَوْمَئِذٍ فِى ٱلْعَذَابِ مُشْتَرِكُونَ

সেদিন (দুর্বল আর সবল) সবাই ‘আযাবে শরীক হবে।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفْعَلُ بِٱلْمُجْرِمِينَ

অপরাধীদের প্রতি আমি এ রকমই (আচরণ) করে থাকি।

إِنَّهُمْ كَانُوٓا۟ إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ

তাদেরকে যখন ‘আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই’ বলা হত, তখন তারা অহংকার করত।

وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُوٓا۟ ءَالِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَّجْنُونٍۭ

আর তারা বলত, ‘‘আমরা কি এক পাগলা কবির কথা মেনে আমাদের ইলাহগুলোকে ত্যাগ করব?

بَلْ جَآءَ بِٱلْحَقِّ وَصَدَّقَ ٱلْمُرْسَلِينَ

বরং সে [অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সা.)] সত্য নিয়ে এসেছে এবং (পূর্বে আগমনকারী) রসূলদেরকে সত্যায়িত করেছে।

إِنَّكُمْ لَذَآئِقُوا۟ ٱلْعَذَابِ ٱلْأَلِيمِ

(এখন তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা অবশ্যই মর্মান্তিক শাস্তির স্বাদ ভোগ করবে,

وَمَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ

তোমাদেরকে কেবল তারই প্রতিফল দেয়া হবে যা তোমরা করতে।’

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ

কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা নয় (তারা এ সব ‘আযাব থেকে রক্ষা পাবে)।

أُو۟لَـٰٓئِكَ لَهُمْ رِزْقٌ مَّعْلُومٌ

তাদের জন্য আছে নির্ধারিত রিযক-

فَوَٰكِهُ ۖ وَهُم مُّكْرَمُونَ

ফলমূল; আর তারা হবে সম্মানিত।

فِى جَنَّـٰتِ ٱلنَّعِيمِ

(তারা থাকবে) নি‘য়ামাতের ভরা জান্নাতে

عَلَىٰ سُرُرٍ مُّتَقَـٰبِلِينَ

উচ্চাসনে মুখোমুখী হয়ে

يُطَافُ عَلَيْهِم بِكَأْسٍ مِّن مَّعِينٍۭ

তাদের কাছে চক্রাকারে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ প্রবাহিত ঝর্ণার সুরাপূর্ণ পাত্র।

بَيْضَآءَ لَذَّةٍ لِّلشَّـٰرِبِينَ

নির্মল পানীয়, পানকারীদের জন্য সুপেয়, সুস্বাদু।

لَا فِيهَا غَوْلٌ وَلَا هُمْ عَنْهَا يُنزَفُونَ

নেই তাতে দেহের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু, আর তারা তাতে মাতালও হবে না।

وَعِندَهُمْ قَـٰصِرَٰتُ ٱلطَّرْفِ عِينٌ

তাদের কাছে থাকবে সংযত নয়না, সতী সাধ্বী, ডাগর ডাগর সুন্দর চক্ষু বিশিষ্টা সুন্দরীরা (হুরগণ)।

كَأَنَّهُنَّ بَيْضٌ مَّكْنُونٌ

তারা যেন সযত্নে ঢেকে রাখা ডিম।

فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَآءَلُونَ

অতঃপর তারা পরস্পরের মুখোমুখী হয়ে একে ‘অপরের খবর জিজ্ঞেস করবে।

قَالَ قَآئِلٌ مِّنْهُمْ إِنِّى كَانَ لِى قَرِينٌ

তাদের একজন বলবে- ‘‘(দুনিয়ায়) আমার ছিল একজন সাথী।

يَقُولُ أَءِنَّكَ لَمِنَ ٱلْمُصَدِّقِينَ

সে বলত- ‘‘তুমি কি বিশ্বাস কর যে,

أَءِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَعِظَـٰمًا أَءِنَّا لَمَدِينُونَ

আমরা যখন মরে যাব আর মাটি ও হাড্ডিতে পরিণত হব তখনো সত্যিই কি আমাদেরকে পুরস্কার ও শাস্তি দেয়া হবে?

قَالَ هَلْ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ

আল্লাহ বলবেন- ‘ তোমরা কি তাকে উঁকি দিয়ে দেখতে চাও?’

فَٱطَّلَعَ فَرَءَاهُ فِى سَوَآءِ ٱلْجَحِيمِ

তারপর সে উঁকি দিয়ে দেখবে এবং তাকে জাহান্নামের মাঝখানে দেখতে পাবে।

قَالَ تَٱللَّهِ إِن كِدتَّ لَتُرْدِينِ

সে বলবে, ‘আল্লাহর কসম! তুমি তো আমাকে প্রায় ধ্বংসই করে দিয়েছিলে,

وَلَوْلَا نِعْمَةُ رَبِّى لَكُنتُ مِنَ ٱلْمُحْضَرِينَ

আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ না হলে আমিও তো (জাহান্নামের ভিতর) হাজির করা লোকেদের মধ্যে শামিল থাকতাম।

أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ

এখন আমাদের আর মৃত্যু হবে না

إِلَّا مَوْتَتَنَا ٱلْأُولَىٰ وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ

আমাদের প্রথম মৃত্যুর পর, আর আমাদেরকে শাস্তিও দেয়া হবে না।

إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ ٱلْفَوْزُ ٱلْعَظِيمُ

এটাই তো মহাসাফল্য।

لِمِثْلِ هَـٰذَا فَلْيَعْمَلِ ٱلْعَـٰمِلُونَ

এ রকম সাফল্যের জন্যই ‘আমলকারীদের ‘আমল করা উচিত।

أَذَٰلِكَ خَيْرٌ نُّزُلًا أَمْ شَجَرَةُ ٱلزَّقُّومِ

আপ্যায়ন হিসেবে এটা উত্তম, না, (জাহান্নামের) জাক্কুম গাছ?

إِنَّا جَعَلْنَـٰهَا فِتْنَةً لِّلظَّـٰلِمِينَ

এ গাছটাকে আমি যালিমদের পরীক্ষা করার জন্য (একটা উপকরণ) বানিয়েছি (কেননা, যালিমরা বলে যে, জাহান্নামের ভিতর আবার গাছ হয় কী করে?)

إِنَّهَا شَجَرَةٌ تَخْرُجُ فِىٓ أَصْلِ ٱلْجَحِيمِ

এটা এমন একটা গাছ যা জাহান্নামের তলদেশ থেকে বের হয়।

طَلْعُهَا كَأَنَّهُۥ رُءُوسُ ٱلشَّيَـٰطِينِ

এর চূড়াগুলো যেন শয়ত্বানের মাথা (অর্থাৎ দেখতে খুবই খারাপ।)

فَإِنَّهُمْ لَـَٔاكِلُونَ مِنْهَا فَمَالِـُٔونَ مِنْهَا ٱلْبُطُونَ

জাহান্নামের অধিবাসীরা তাত্থেকে খাবে আর তা দিয়ে পেট পূর্ণ করবে।

ثُمَّ إِنَّ لَهُمْ عَلَيْهَا لَشَوْبًا مِّنْ حَمِيمٍ

এর উপর তাদেরকে দেয়া হবে ফুটন্ত পানির (পূঁজ সম্বলিত) মিশ্রণ।

ثُمَّ إِنَّ مَرْجِعَهُمْ لَإِلَى ٱلْجَحِيمِ

অতঃপর তাদের প্রত্যাবর্তন হবে জ্বলন্ত আগুনের দিকে।

إِنَّهُمْ أَلْفَوْا۟ ءَابَآءَهُمْ ضَآلِّينَ

তারা তাদের পিতৃপুরুষদেরকে বিপথগামী পেয়েছিল।

فَهُمْ عَلَىٰٓ ءَاثَـٰرِهِمْ يُهْرَعُونَ

অতঃপর তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে ছুটে চলেছিল।

وَلَقَدْ ضَلَّ قَبْلَهُمْ أَكْثَرُ ٱلْأَوَّلِينَ

এদের আগের লোকেদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ

আমি তাদের মাঝে সতর্ককারী (রসূল) পাঠিয়েছিলাম।

فَٱنظُرْ كَيْفَ كَانَ عَـٰقِبَةُ ٱلْمُنذَرِينَ

এখন দেখ, এই সতর্ক করে দেয়া লোকেদের পরিণাম কী হয়েছিল!

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ

কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ট বান্দাদের কথা ভিন্ন (এ সব খারাপ পরিণতি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিল।)

وَلَقَدْ نَادَىٰنَا نُوحٌ فَلَنِعْمَ ٱلْمُجِيبُونَ

(ইতোপূর্বে) নূহ আমাকে ডেকেছিল, অতঃপর (দেখ) আমি কতই না উত্তম সাড়াদাতা ছিলাম!

وَنَجَّيْنَـٰهُ وَأَهْلَهُۥ مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ

তাকে আর তার পরিবারবর্গকে আমি মহা বিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলাম।

وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُۥ هُمُ ٱلْبَاقِينَ

আর তার বংশধরদেরকেই আমি বংশানুক্রমে বিদ্যমান রাখলাম।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْـَٔاخِرِينَ

আর আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম।

سَلَـٰمٌ عَلَىٰ نُوحٍ فِى ٱلْعَـٰلَمِينَ

বিশ্বজগতে নূহের প্রতি সালাম/শান্তি বর্ষিত হোক।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ

সৎকর্মশীলদেরকে আমি এভাবেই প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ

সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের একজন।

ثُمَّ أَغْرَقْنَا ٱلْـَٔاخَرِينَ

অতঃপর অন্যদের আমি ডুবিয়ে দিয়েছিলাম।

۞ وَإِنَّ مِن شِيعَتِهِۦ لَإِبْرَٰهِيمَ

অবশ্যই ইবরাহীম ছিল তারই দলের লোক।

إِذْ جَآءَ رَبَّهُۥ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ

সে যখন তার প্রতিপালকের কাছে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে হাজির হল,

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦ مَاذَا تَعْبُدُونَ

সে তখন তার পিতাকে ও তার জাতিকে বলল, ‘তোমরা কিসের ‘ইবাদাত কর?

أَئِفْكًا ءَالِهَةً دُونَ ٱللَّهِ تُرِيدُونَ

তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে মিথ্যে মা’বুদ পেতে চাও?

فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

বিশ্ব জগতের প্রতিপালক সম্পর্কে তোমরা কী ধারণা পোষণ কর?

فَنَظَرَ نَظْرَةً فِى ٱلنُّجُومِ

অতঃপর তারকারাজির দিকে সে একবার তাকাল (অর্থাৎ চিন্তে ভাবনা করল)

فَقَالَ إِنِّى سَقِيمٌ

তারপর বলল, ‘‘আমি অসুস্থ।’’

فَتَوَلَّوْا۟ عَنْهُ مُدْبِرِينَ

অতঃপর তারা তাকে পেছনে রেখে চলে গেল।

فَرَاغَ إِلَىٰٓ ءَالِهَتِهِمْ فَقَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ

তারপর সে চুপে চুপে তাদের উপাস্যদের কাছে ঢুকে পড়ল আর বলল, (আপনাদের সম্মুখে রাখা এত উপাদেয় খাবার) আপনারা খাচ্ছেন না কেন?

مَا لَكُمْ لَا تَنطِقُونَ

কী হয়েছে আপনাদের, কথা বলছেন না কেন?

فَرَاغَ عَلَيْهِمْ ضَرْبًۢا بِٱلْيَمِينِ

অতঃপর সে তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সজোরে আঘাত করল।

فَأَقْبَلُوٓا۟ إِلَيْهِ يَزِفُّونَ

তখন লোকেরা (ফিরে এসে) তার দিকে ছুটে আসল।

قَالَ أَتَعْبُدُونَ مَا تَنْحِتُونَ

সে বলল, ‘‘তোমরা (পাথর) খোদাই করে সেগুলো নিজেরা বানাও, সেগুলোরই আবার ‘ইবাদাত কর?

وَٱللَّهُ خَلَقَكُمْ وَمَا تَعْمَلُونَ

আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে আর তোমরা যা তৈরি কর সেগুলোকেও।

قَالُوا۟ ٱبْنُوا۟ لَهُۥ بُنْيَـٰنًا فَأَلْقُوهُ فِى ٱلْجَحِيمِ

তারা বলল, ‘তার জন্য একটা অগ্নিকুন্ড তৈরি কর, অতঃপর তাকে আগুনে নিক্ষেপ কর।’

فَأَرَادُوا۟ بِهِۦ كَيْدًا فَجَعَلْنَـٰهُمُ ٱلْأَسْفَلِينَ

তারা তার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি তাদেরকে এক্কেবারে হীন করে ছাড়লাম।

وَقَالَ إِنِّى ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّى سَيَهْدِينِ

সে বলল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চললাম, তিনি আমাকে অবশ্যই সঠিক পথ দেখাবেন।

رَبِّ هَبْ لِى مِنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ

হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে এক সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান কর।

فَبَشَّرْنَـٰهُ بِغُلَـٰمٍ حَلِيمٍ

অতঃপর আমি তাকে এক অতি ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।

فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعْىَ قَالَ يَـٰبُنَىَّ إِنِّىٓ أَرَىٰ فِى ٱلْمَنَامِ أَنِّىٓ أَذْبَحُكَ فَٱنظُرْ مَاذَا تَرَىٰ ۚ قَالَ يَـٰٓأَبَتِ ٱفْعَلْ مَا تُؤْمَرُ ۖ سَتَجِدُنِىٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّـٰبِرِينَ

অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে চলাফিরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন ইবরাহীম (আঃ) বলল, ‘বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যবেহ করছি, এখন বল, তোমার অভিমত কী? সে বলল, ‘হে পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন, আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন।

فَلَمَّآ أَسْلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلْجَبِينِ

দু’জনেই যখন আনুগত্যে মাথা নুইয়ে দিল। আর ইবরাহীম তাকে উপুড় ক’রে শুইয়ে দিল।

وَنَـٰدَيْنَـٰهُ أَن يَـٰٓإِبْرَٰهِيمُ

তখন আমি তাকে ডাক দিলাম, ‘হে ইবরাহীম!

قَدْ صَدَّقْتَ ٱلرُّءْيَآ ۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ

স্বপ্নে দেয়া আদেশ তুমি সত্যে পরিণত করেই ছাড়লে। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّ هَـٰذَا لَهُوَ ٱلْبَلَـٰٓؤُا۟ ٱلْمُبِينُ

অবশ্যই এটা ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা।

وَفَدَيْنَـٰهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ

আমি এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে পুত্রটিকে ছাড়িয়ে নিলাম।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْـَٔاخِرِينَ

আর আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম।

سَلَـٰمٌ عَلَىٰٓ إِبْرَٰهِيمَ

ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক!

كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ

সৎকর্মশীলদেরকে আমি এভাবেই প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ

সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত।

وَبَشَّرْنَـٰهُ بِإِسْحَـٰقَ نَبِيًّا مِّنَ ٱلصَّـٰلِحِينَ

আর তাকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের- যে ছিল সৎকর্মশীল বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত একজন নবী।

وَبَـٰرَكْنَا عَلَيْهِ وَعَلَىٰٓ إِسْحَـٰقَ ۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحْسِنٌ وَظَالِمٌ لِّنَفْسِهِۦ مُبِينٌ

আর আমি বরকত দিলাম তাকে আর ইসহাককে; (তাদের দু’জনের) বংশধরদের কতক সৎকর্মশীল, আর কতক নিজেদের প্রতি সুস্পষ্ট যুলুমকারী।

وَلَقَدْ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَـٰرُونَ

আমি মূসা ও হারূনের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম।

وَنَجَّيْنَـٰهُمَا وَقَوْمَهُمَا مِنَ ٱلْكَرْبِ ٱلْعَظِيمِ

আর তাদের দু’জনকে এবং তাদের জাতিকে মহা বিপদ থেকে রক্ষা করেছিলাম।

وَنَصَرْنَـٰهُمْ فَكَانُوا۟ هُمُ ٱلْغَـٰلِبِينَ

আর আমি তাদেরকে সাহায্য করেছিলাম, যার ফলে তারাই বিজয়ী হয়েছিল।

وَءَاتَيْنَـٰهُمَا ٱلْكِتَـٰبَ ٱلْمُسْتَبِينَ

আমি উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব।

وَهَدَيْنَـٰهُمَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ

আর তাদের উভয়কে সরল সঠিক পথে পরিচালিত করেছিলাম।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِمَا فِى ٱلْـَٔاخِرِينَ

আমি তাদের উভয়কে পরবর্তীদের জন্য স্মরণীয় করে রাখলাম।

سَلَـٰمٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَـٰرُونَ

মূসা ও হারূনের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ

এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّهُمَا مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ

তারা দু’জন ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত।

وَإِنَّ إِلْيَاسَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ

ইলিয়াসও ছিল অবশ্যই রসূলদের একজন।

إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِۦٓ أَلَا تَتَّقُونَ

স্মরণ কর, যখন সে তার জাতিকে বলেছিল, ‘তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?

أَتَدْعُونَ بَعْلًا وَتَذَرُونَ أَحْسَنَ ٱلْخَـٰلِقِينَ

‘তোমরা কি বা‘য়ালকে ডাক, আর পরিত্যাগ কর সর্বোত্তম সৃষ্টিকারী

ٱللَّهَ رَبَّكُمْ وَرَبَّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ

আল্লাহকে, যিনি তোমাদের প্রতিপালক আর তোমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষদেরও প্রতিপালক।

فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ

কিন্তু তারা তাকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করল, কাজেই তাদেরকে অবশ্যই (শাস্তির জন্য) হাজির করা হবে।

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ

কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাহদেরকে নয়।

وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِى ٱلْـَٔاخِرِينَ

আমি তাকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম।

سَلَـٰمٌ عَلَىٰٓ إِلْ يَاسِينَ

ইলিয়াসের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।

إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ

এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُؤْمِنِينَ

সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাহদের অন্তুর্ভুক্ত।

وَإِنَّ لُوطًا لَّمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ

লূতও ছিল অবশ্যই রসূলদের একজন।

إِذْ نَجَّيْنَـٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ أَجْمَعِينَ

স্মরণ কর যখন আমি তাকে আর তার পরিবারের সকলকে উদ্ধার করেছিলাম

إِلَّا عَجُوزًا فِى ٱلْغَـٰبِرِينَ

এক বৃদ্ধা ছাড়া- সে ছিল পিছ-পড়াদের একজন।

ثُمَّ دَمَّرْنَا ٱلْـَٔاخَرِينَ

অতঃপর অন্য সব্বাইকে আমি পুরোপুরি ধ্বংস করে ছিয়েছিলাম।

وَإِنَّكُمْ لَتَمُرُّونَ عَلَيْهِم مُّصْبِحِينَ

তোমরা তো তাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বসতিগুলোর উপর দিয়ে অবশ্যই চলাচল কর সকালে

وَبِٱلَّيْلِ ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ

ও সন্ধ্যায়, তোমরা কি বুঝবে না?

وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ

ইউনুসও ছিল রসূলদের একজন।

إِذْ أَبَقَ إِلَى ٱلْفُلْكِ ٱلْمَشْحُونِ

স্মরণ কর, যখন সে পালিয়ে বোঝাই নৌকায় পৌঁছেছিল।

فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ ٱلْمُدْحَضِينَ

অতঃপর (দোষী খুঁজার জন্য যে লটারী করা হল সেই) লটারীতে সে অংশ নিল আর তাতে হেরে গেল।

فَٱلْتَقَمَهُ ٱلْحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٌ

পরে একটা বড় মাছে তাকে গিলে ফেলল, সে কাজ করেছিল ধিক্কারযোগ্য।

فَلَوْلَآ أَنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلْمُسَبِّحِينَ

সে যদি (অনুতপ্ত হয়ে) আল্লাহর তাসবীহকারী না হত,

لَلَبِثَ فِى بَطْنِهِۦٓ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ

তাহলে নিশ্চিতই তাকে পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত মাছের পেটে থাকতে হত।

۞ فَنَبَذْنَـٰهُ بِٱلْعَرَآءِ وَهُوَ سَقِيمٌ

অতঃপর আমি তাকে তৃণলতাহীন প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম, আর সে ছিল রুগ্ন।

وَأَنۢبَتْنَا عَلَيْهِ شَجَرَةً مِّن يَقْطِينٍ

অতঃপর আমি তার উপর লাউ-কুমড়া জাতীয় লতা-পাতাযুক্ত একটা গাছ বের করে দিলাম।

وَأَرْسَلْنَـٰهُ إِلَىٰ مِا۟ئَةِ أَلْفٍ أَوْ يَزِيدُونَ

অতঃপর তাকে এক লাখ বা তার চেয়ে বেশি লোকের কাছে পাঠালাম।

فَـَٔامَنُوا۟ فَمَتَّعْنَـٰهُمْ إِلَىٰ حِينٍ

তারা ঈমান আনল, কাজেই আমি তাদেরকে কিছুকাল পর্যন্ত জীবন উপভোগ করতে দিলাম।

فَٱسْتَفْتِهِمْ أَلِرَبِّكَ ٱلْبَنَاتُ وَلَهُمُ ٱلْبَنُونَ

এখন তুমি তাদেরকে (অর্থাৎ মক্কার কাফিরদেরকে) জিজ্ঞেস কর ‘কন্যাগুলোই কি তোমাদের প্রতিপালকের জন্য, আর তাদের নিজেদের জন্য পুত্রগণ?

أَمْ خَلَقْنَا ٱلْمَلَـٰٓئِكَةَ إِنَـٰثًا وَهُمْ شَـٰهِدُونَ

নাকি আমি ফেরেশতাদেরকে মেয়ে হিসেবে সৃষ্টি করেছিলাম আর তারা (অর্থাৎ মক্কার কাফিররা সেখানে) হাজির ছিল?

أَلَآ إِنَّهُم مِّنْ إِفْكِهِمْ لَيَقُولُونَ

দেখ, তারা অবশ্যই তাদের মন-গড়া কথা বলে যে,

وَلَدَ ٱللَّهُ وَإِنَّهُمْ لَكَـٰذِبُونَ

আল্লাহ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তারা অবশ্যই মিথ্যেবাদী।

أَصْطَفَى ٱلْبَنَاتِ عَلَى ٱلْبَنِينَ

তিনি কি পুত্রদের চেয়ে কন্যাদেরকেই বেশি পছন্দ করেছেন?

مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ

তোমাদের কী হয়েছে, তোমরা কেমন ফয়সালা করছ?

أَفَلَا تَذَكَّرُونَ

তাহলে কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?

أَمْ لَكُمْ سُلْطَـٰنٌ مُّبِينٌ

(তোমরা যা বলছ তার স্বপক্ষে) তোমাদের কি সুস্পষ্ট দলীল-প্রমাণ আছে?

فَأْتُوا۟ بِكِتَـٰبِكُمْ إِن كُنتُمْ صَـٰدِقِينَ

তোমরা সত্যবাদী হলে নিয়ে এসো তোমাদের কিতাব।

وَجَعَلُوا۟ بَيْنَهُۥ وَبَيْنَ ٱلْجِنَّةِ نَسَبًا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ ٱلْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ

তারা আল্লাহ ও জ্বিন জাতির মাঝে একটা বংশ সম্পর্ক সাব্যস্ত করেছে, অথচ জ্বিনেরা ভালভাবে জানে যে, তাদেরকেও শাস্তির জন্য অবশ্যই হাজির করা হবে।

سُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ

তারা যা বলে আল্লাহ সে সব (দোষ-ত্রুটি) থেকে পবিত্র।

إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ

কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা এসব কথা বলে না।

فَإِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ

তোমরা আর তোমরা যাদের ‘ইবাদাত কর তারা

مَآ أَنتُمْ عَلَيْهِ بِفَـٰتِنِينَ

আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে তোমরা কাউকেও ফিতনায় ফেলতে পারবে না।

إِلَّا مَنْ هُوَ صَالِ ٱلْجَحِيمِ

পারবে কেবল তাকে, যে জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশকারী।

وَمَا مِنَّآ إِلَّا لَهُۥ مَقَامٌ مَّعْلُومٌ

আমাদের (ফেরেশতাদের) প্রত্যেকের জন্য একটা নির্দিষ্ট স্থান আছে।

وَإِنَّا لَنَحْنُ ٱلصَّآفُّونَ

আমরা সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান (খেদমত দেয়ার জন্য)।

وَإِنَّا لَنَحْنُ ٱلْمُسَبِّحُونَ

আমরা অবশ্যই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণাকারী।

وَإِن كَانُوا۟ لَيَقُولُونَ

এ লোকেরা তো বলত

لَوْ أَنَّ عِندَنَا ذِكْرًا مِّنَ ٱلْأَوَّلِينَ

আগের লোকেদের মত আমাদের কাছে যদি কোন কিতাব থাকত

لَكُنَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلْمُخْلَصِينَ

তাহলে আমরা অবশ্যই আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাহ হতাম।

فَكَفَرُوا۟ بِهِۦ ۖ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ

কিন্তু (এখন কুরআন আসার পর) তারা সেটা অমান্য ও অস্বীকার করল। তারা শীঘ্রই জানতে পারবে (এর পরিণাম)।

وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا ٱلْمُرْسَلِينَ

আমার প্রেরিত বান্দাহদের সম্পর্কে আমার এ কথা আগেই বলা আছে যে,

إِنَّهُمْ لَهُمُ ٱلْمَنصُورُونَ

তাদেরকে অবশ্যই সাহায্য করা হবে।

وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ ٱلْغَـٰلِبُونَ

আর আমার সৈন্যরাই বিজয়ী হবে

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ

কাজেই কিছু সময়ের জন্য তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর।

وَأَبْصِرْهُمْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ

আর তাদেরকে দেখতে থাক, তারা শীঘ্রই দেখতে পাবে (ঈমান ও কুফুরীর পরিণাম)।

أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ

তারা কি আমার শাস্তি তরান্বিত করতে চায়?

فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمْ فَسَآءَ صَبَاحُ ٱلْمُنذَرِينَ

শাস্তি যখন তাদের উঠানে নেমে আসবে, তখন কতই না মন্দ হবে ঐ লোকেদের সকালটি যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল!

وَتَوَلَّ عَنْهُمْ حَتَّىٰ حِينٍ

কাজেই কিছু সময়ের জন্য তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর।

وَأَبْصِرْ فَسَوْفَ يُبْصِرُونَ

আর দেখতে থাক, শীঘ্রই তারা দেখতে পাবে (ঈমান ও কুফুরীর পরিণাম)।

سُبْحَـٰنَ رَبِّكَ رَبِّ ٱلْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ

সকল সম্মান ও ক্ষমতার রব্ব, তোমার প্রতিপালক পবিত্র ও মহান সে সকল কথাবার্তা হতে যা তারা আরোপ করে।

وَسَلَـٰمٌ عَلَى ٱلْمُرْسَلِينَ

শান্তি বর্ষিত হোক রসূলদের প্রতি।

وَٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

আর যাবতীয় প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই।