Ash-Shu'ara

কবি

0:00 / 0:00

طسٓمٓ

ত্ব-সীন-মীম।

تِلْكَ ءَايَـٰتُ ٱلْكِتَـٰبِ ٱلْمُبِينِ

এগুলো সুস্পষ্ট (বা সুস্পষ্টকারী) কিতাবের আয়াত।

لَعَلَّكَ بَـٰخِعٌ نَّفْسَكَ أَلَّا يَكُونُوا۟ مُؤْمِنِينَ

তুমি হয়ত এ দুঃখে তোমার প্রাণনাশ করবে যে, তারা মু’মিন হচ্ছে না।

إِن نَّشَأْ نُنَزِّلْ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ ءَايَةً فَظَلَّتْ أَعْنَـٰقُهُمْ لَهَا خَـٰضِعِينَ

আমি ইচ্ছে করলে তাদের কাছে আসমান থেকে এমন নিদর্শন পাঠাতাম যে তার সামনে তাদের মাথা নত হয়ে যেত (অর্থাৎ তারা ঈমান আনতে বাধ্য হত)।

وَمَا يَأْتِيهِم مِّن ذِكْرٍ مِّنَ ٱلرَّحْمَـٰنِ مُحْدَثٍ إِلَّا كَانُوا۟ عَنْهُ مُعْرِضِينَ

তাদের কাছে যখনই দয়াময় আল্লাহর পক্ষ হতে নতুন কোন নসীহত আসে তখনই তারা তাত্থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

فَقَدْ كَذَّبُوا۟ فَسَيَأْتِيهِمْ أَنۢبَـٰٓؤُا۟ مَا كَانُوا۟ بِهِۦ يَسْتَهْزِءُونَ

তারা (আল্লাহর বাণীকে) অস্বীকারই করেছে, শীঘ্রই তাদের কাছে তার সত্য উদঘাটিত হবে যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত।

أَوَلَمْ يَرَوْا۟ إِلَى ٱلْأَرْضِ كَمْ أَنۢبَتْنَا فِيهَا مِن كُلِّ زَوْجٍ كَرِيمٍ

তারা কি যমীনের দিকে চেয়ে দেখে না, আমি তাতে সব ধরনের উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ পয়দা করেছি।

إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

অবশ্যই এতে নিদর্শন আছে (আল্লাহ সম্পর্কে চিন্তা ক’রে ঈমান আনার জন্য), কিন্তু তাদের অধিকাংশই ঈমান আনে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক মহা পরাক্রমশালী, অতি দয়ালু।

وَإِذْ نَادَىٰ رَبُّكَ مُوسَىٰٓ أَنِ ٱئْتِ ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ

স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক মূসাকে ডাক দিয়ে বললেন, ‘তুমি যালিম সম্প্রদায়ের কাছে যাও,

قَوْمَ فِرْعَوْنَ ۚ أَلَا يَتَّقُونَ

ফেরাউনের সম্প্রদায়ের কাছে। তারা কি ভয় করে না?

قَالَ رَبِّ إِنِّىٓ أَخَافُ أَن يُكَذِّبُونِ

সে বলেছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার ভয় হচ্ছে তারা আমাকে মিথ্যে মনে ক’রে প্রত্যাখ্যান করবে।

وَيَضِيقُ صَدْرِى وَلَا يَنطَلِقُ لِسَانِى فَأَرْسِلْ إِلَىٰ هَـٰرُونَ

আর আমার অন্তর সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে, আমার জিহ্বা সাবলীলভাবে কথা বলতে পারে না। কাজেই আপনি হারূনের প্রতি রিসালাত দিন।

وَلَهُمْ عَلَىَّ ذَنۢبٌ فَأَخَافُ أَن يَقْتُلُونِ

তদুপরি আমার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগও তাদের আছে, কাজেই আমার ভয় হচ্ছে তারা আমাকে হত্যা করবে।’

قَالَ كَلَّا ۖ فَٱذْهَبَا بِـَٔايَـٰتِنَآ ۖ إِنَّا مَعَكُم مُّسْتَمِعُونَ

আল্লাহ বললেন, ‘কক্ষনো না, তোমরা দু’জনে আমার (দেয়া) নিদর্শন নিয়ে যাও, আমি তোমাদের সঙ্গে থেকে সব কিছু শুনতে থাকব।

فَأْتِيَا فِرْعَوْنَ فَقُولَآ إِنَّا رَسُولُ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

কাজেই তোমরা দু’জনে ফেরাউনের কাছে যাও আর গিয়ে বল যে, আমরা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের প্রেরিত রসূল।

أَنْ أَرْسِلْ مَعَنَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ

বানী ইসরাঈলকে আমাদের সঙ্গে পাঠিয়ে দাও।’

قَالَ أَلَمْ نُرَبِّكَ فِينَا وَلِيدًا وَلَبِثْتَ فِينَا مِنْ عُمُرِكَ سِنِينَ

ফেরাউন বলল, ‘আমরা কি তোমাকে শিশুকালে আমাদের মধ্যে লালন পালন করিনি? আর তুমি কি তোমার জীবনের কতকগুলো বছর আমাদের মাঝে কাটাওনি?

وَفَعَلْتَ فَعْلَتَكَ ٱلَّتِى فَعَلْتَ وَأَنتَ مِنَ ٱلْكَـٰفِرِينَ

তুমি তোমার কর্ম যা করার করেছ (আমাদের একজন লোককে হত্যা ক’রে), তুমি বড় অকৃতজ্ঞ।’

قَالَ فَعَلْتُهَآ إِذًا وَأَنَا۠ مِنَ ٱلضَّآلِّينَ

মূসা বলল : ‘আমি তো তা করেছিলাম সে সময় যখন আমি ছিলাম (সঠিক পথ সম্পর্কে) অজ্ঞ।

فَفَرَرْتُ مِنكُمْ لَمَّا خِفْتُكُمْ فَوَهَبَ لِى رَبِّى حُكْمًا وَجَعَلَنِى مِنَ ٱلْمُرْسَلِينَ

অতঃপর তোমাদের ভয়ে ভীত হয়ে আমি তোমাদের থেকে পালিয়ে গেলাম। অতঃপর আমার রবব আমাকে প্রজ্ঞা দান করলেন, আর আমাকে করলেন রসূলদের একজন।

وَتِلْكَ نِعْمَةٌ تَمُنُّهَا عَلَىَّ أَنْ عَبَّدتَّ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ

তুমি আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের খোঁটা দিচ্ছ তাতো এই যে, তুমি বানী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ।’

قَالَ فِرْعَوْنُ وَمَا رَبُّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

ফেরাউন বলল : ‘বিশ্বজগতের প্রতিপালক আবার কী?’

قَالَ رَبُّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَآ ۖ إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ

মূসা বলল : ‘(যিনি) আসমান ও যমীন ও এ দু’য়ের মাঝে যা কিছু আছে সব কিছুর প্রতিপালক- যদি তোমরা নিঃসন্দেহে বিশ্বাসী হও।

قَالَ لِمَنْ حَوْلَهُۥٓ أَلَا تَسْتَمِعُونَ

ফেরাউন তার চারপাশের লোকেদেরকে বলল- ‘তোমরা শুনছ তো?’

قَالَ رَبُّكُمْ وَرَبُّ ءَابَآئِكُمُ ٱلْأَوَّلِينَ

মূসা বলল : ‘(তিনি) তোমাদের প্রতিপালক ও শুরু থেকে পূর্ববর্তী তোমাদের বাপ-দাদাদেরও প্রতিপালক।’

قَالَ إِنَّ رَسُولَكُمُ ٱلَّذِىٓ أُرْسِلَ إِلَيْكُمْ لَمَجْنُونٌ

(ফিরআউন) বলল: ‘তোমাদের রসূল যে তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছে সে নিশ্চিতই পাগল।’

قَالَ رَبُّ ٱلْمَشْرِقِ وَٱلْمَغْرِبِ وَمَا بَيْنَهُمَآ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْقِلُونَ

(মূসা) বললঃ ‘(তিনিই) পূর্ব ও পশ্চিমের প্রতিপালক, আর এ উভয় দিকের মাঝে যা আছে তারও- যদি তোমাদের বুদ্ধিসুদ্ধি থাকে।’

قَالَ لَئِنِ ٱتَّخَذْتَ إِلَـٰهًا غَيْرِى لَأَجْعَلَنَّكَ مِنَ ٱلْمَسْجُونِينَ

(ফেরাউন) বলল : ‘যদি তুমি আমাকে বাদ দিয়ে (অন্য কিছুকে) ইলাহ হিসেবে গ্রহণ কর, তাহলে আমি তোমাকে অবশ্য অবশ্যই কারারুদ্ধ করব।’

قَالَ أَوَلَوْ جِئْتُكَ بِشَىْءٍ مُّبِينٍ

(মূসা) বলল : ‘আমি যদি তোমার কাছে কোন স্পষ্ট জিনিস নিয়ে আসি তবুও?

قَالَ فَأْتِ بِهِۦٓ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِينَ

(ফেরাউন) বলল : ‘তাহলে তা আনো, যদি তুমি সত্যবাদী হও।’

فَأَلْقَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِىَ ثُعْبَانٌ مُّبِينٌ

তখন মূসা তার লাঠি ছুঁড়ে দিল আর সহসাই তা স্পষ্ট এক অজগর হয়ে গেল।

وَنَزَعَ يَدَهُۥ فَإِذَا هِىَ بَيْضَآءُ لِلنَّـٰظِرِينَ

আর মূসা (বগলের নীচ দিয়ে) নিজের হাত টেনে বের করল, আর তা দর্শকদের সামনে ঝকমক করতে লাগল।

قَالَ لِلْمَلَإِ حَوْلَهُۥٓ إِنَّ هَـٰذَا لَسَـٰحِرٌ عَلِيمٌ

ফেরাউন তার চারপাশের প্রধানদের বলল : ‘সে অবশ্যই এক দক্ষ যাদুকর।

يُرِيدُ أَن يُخْرِجَكُم مِّنْ أَرْضِكُم بِسِحْرِهِۦ فَمَاذَا تَأْمُرُونَ

যাদুর বলে সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দিতে চায়। এখন বল তোমাদের নির্দেশ কী?’

قَالُوٓا۟ أَرْجِهْ وَأَخَاهُ وَٱبْعَثْ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَـٰشِرِينَ

তারা বলল : ‘তাকে ও তার ভাইকে (কিছু সময়) অপেক্ষায় ফেলে রাখুন আর জড়ো করার জন্য ঘোষকদেরকে নগরে নগরে পাঠিয়ে দিন।

يَأْتُوكَ بِكُلِّ سَحَّارٍ عَلِيمٍ

তারা আপনার কাছে প্রত্যেকটি অভিজ্ঞ যাদুকরকে নিয়ে আসবে।’

فَجُمِعَ ٱلسَّحَرَةُ لِمِيقَـٰتِ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ

কাজেই যাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল একটি নির্দিষ্ট দিন ক্ষণের জন্য যা ছিল সুবিদিত।

وَقِيلَ لِلنَّاسِ هَلْ أَنتُم مُّجْتَمِعُونَ

আর জনগণকে বলা হল- ‘তোমরা কি সম্মিলিত হবে?

لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ ٱلسَّحَرَةَ إِن كَانُوا۟ هُمُ ٱلْغَـٰلِبِينَ

যাতে আমরা যাদুকরদের (এবং তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ফেরাউনের) দীন অনুসরণ করতে পারি যদি তারা বিজয়ী হয়।

فَلَمَّا جَآءَ ٱلسَّحَرَةُ قَالُوا۟ لِفِرْعَوْنَ أَئِنَّ لَنَا لَأَجْرًا إِن كُنَّا نَحْنُ ٱلْغَـٰلِبِينَ

যাদুকররা যখন আসলো, তারা ফেরাউনকে বলল : ‘আমরা জয়ী হলে আমাদেরকে পুরস্কার দেয়া হবে তো?’

قَالَ نَعَمْ وَإِنَّكُمْ إِذًا لَّمِنَ ٱلْمُقَرَّبِينَ

ফেরাউন বলল- ‘হাঁ, তখন তোমরা অবশ্যই আমার নৈকট্যলাভকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’

قَالَ لَهُم مُّوسَىٰٓ أَلْقُوا۟ مَآ أَنتُم مُّلْقُونَ

মূসা তাদেরকে বলল- ‘নিক্ষেপ কর যা তোমরা নিক্ষেপ করবে।’

فَأَلْقَوْا۟ حِبَالَهُمْ وَعِصِيَّهُمْ وَقَالُوا۟ بِعِزَّةِ فِرْعَوْنَ إِنَّا لَنَحْنُ ٱلْغَـٰلِبُونَ

তখন তারা তাদের রশিগুলো ও লাঠিগুলো নিক্ষেপ করল আর তারা বলল- ‘ফেরাউনের ইযযতের শপথ! আমরা অবশ্যই জয়ী হব।’

فَأَلْقَىٰ مُوسَىٰ عَصَاهُ فَإِذَا هِىَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ

অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল। হঠাৎ তা তাদের অলীক কীর্তিগুলোকে গিলতে লাগল।

فَأُلْقِىَ ٱلسَّحَرَةُ سَـٰجِدِينَ

তখন যাদুকররা সিজদায় লুটিয়ে পড়ল।

قَالُوٓا۟ ءَامَنَّا بِرَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

তারা বলল- ‘আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম রাব্বুল ‘আলামীনের প্রতি,

رَبِّ مُوسَىٰ وَهَـٰرُونَ

যিনি মূসা ও হারুনের প্রতিপালক।’

قَالَ ءَامَنتُمْ لَهُۥ قَبْلَ أَنْ ءَاذَنَ لَكُمْ ۖ إِنَّهُۥ لَكَبِيرُكُمُ ٱلَّذِى عَلَّمَكُمُ ٱلسِّحْرَ فَلَسَوْفَ تَعْلَمُونَ ۚ لَأُقَطِّعَنَّ أَيْدِيَكُمْ وَأَرْجُلَكُم مِّنْ خِلَـٰفٍ وَلَأُصَلِّبَنَّكُمْ أَجْمَعِينَ

ফেরাউন বলল- ‘আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার আগেই তোমরা তাতে বিশ্বাস আনলে? নিশ্চয়ই সে তোমাদের ওস্তাদ যে তোমাদেরকে যাদু শিখিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা (এর পরিণাম) জানতে পারবে। আমি অবশ্য অবশ্যই তোমাদের হাত-পাগুলোকে বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলব আর তোমাদের সব্বাইকে অবশ্য অবশ্যই ‘শূলে চড়াব।

قَالُوا۟ لَا ضَيْرَ ۖ إِنَّآ إِلَىٰ رَبِّنَا مُنقَلِبُونَ

তারা বলল- কোনই ক্ষতি নেই, আমরা আমাদের প্রতিপালকের পানে প্রত্যাবর্তন করব।

إِنَّا نَطْمَعُ أَن يَغْفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطَـٰيَـٰنَآ أَن كُنَّآ أَوَّلَ ٱلْمُؤْمِنِينَ

আমাদের একমাত্র আশা এই যে, আমাদের প্রতিপালক আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করবেন, কারণ আমরা বিশ্বাস স্থাপনকারীদের মধ্যে প্রথম।’

۞ وَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنْ أَسْرِ بِعِبَادِىٓ إِنَّكُم مُّتَّبَعُونَ

আমি মূসাকে ওহীযোগে নির্দেশ দিলাম আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিকালে বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে।

فَأَرْسَلَ فِرْعَوْنُ فِى ٱلْمَدَآئِنِ حَـٰشِرِينَ

অতঃপর ফেরাউন শহরে নগরে সংগ্রাহক পাঠিয়ে দিল।

إِنَّ هَـٰٓؤُلَآءِ لَشِرْذِمَةٌ قَلِيلُونَ

(এই ব’লে যে) এরা (বানী ইসরাঈলরা) ক্ষুদ্র একটি দল।

وَإِنَّهُمْ لَنَا لَغَآئِظُونَ

তারা আমাদেরকে অবশ্যই ক্রোধান্বিত করেছে।

وَإِنَّا لَجَمِيعٌ حَـٰذِرُونَ

আর আমরা অবশ্যই সদা সতর্ক একটি দল।

فَأَخْرَجْنَـٰهُم مِّن جَنَّـٰتٍ وَعُيُونٍ

এভাবে আমি ফেরাউন গোষ্ঠীকে (তাদের নিজেদেরই) উদ্যানরাজি আর ঝর্ণাসমূহ থেকে বহিস্কার করলাম।

وَكُنُوزٍ وَمَقَامٍ كَرِيمٍ

আর ধনভন্ডারসমূহ ও সম্মানজনক অবস্থান থেকে।

كَذَٰلِكَ وَأَوْرَثْنَـٰهَا بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ

এভাবেই ঘটেছিল, আমি বানী ইসরাঈলকে এসব কিছুর উত্তরাধিকারী করে দিয়েছিলাম।

فَأَتْبَعُوهُم مُّشْرِقِينَ

কাজেই তারা (অর্থাৎ ফেরাউন গোষ্ঠী) সূর্যোদয়কালে তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।

فَلَمَّا تَرَٰٓءَا ٱلْجَمْعَانِ قَالَ أَصْحَـٰبُ مُوسَىٰٓ إِنَّا لَمُدْرَكُونَ

যখন দু‘দল পরস্পরকে দেখল তখন মূসার সঙ্গীরা বলল- ‘আমরা তো ধরা পড়েই গেলাম।’

قَالَ كَلَّآ ۖ إِنَّ مَعِىَ رَبِّى سَيَهْدِينِ

মূসা বলল- ‘কক্ষনো না, আমার রব আমার সঙ্গে আছেন, শীঘ্রই তিনি আমাকে পথ নির্দেশ করবেন।

فَأَوْحَيْنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنِ ٱضْرِب بِّعَصَاكَ ٱلْبَحْرَ ۖ فَٱنفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَٱلطَّوْدِ ٱلْعَظِيمِ

তখন আমি মূসার প্রতি ওয়াহী করলাম- ‘তোমার লাঠি দিয়ে সমুদ্রে আঘাত কর।’ ফলে তা বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক ভাগ সুবিশাল পর্বতের ন্যায় হয়ে গেল।

وَأَزْلَفْنَا ثَمَّ ٱلْـَٔاخَرِينَ

আমি সেখানে অপর দলটিকে পৌছে দিলাম।

وَأَنجَيْنَا مُوسَىٰ وَمَن مَّعَهُۥٓ أَجْمَعِينَ

আর মূসা ও তার সঙ্গী সবাইকে উদ্ধার করলাম।

ثُمَّ أَغْرَقْنَا ٱلْـَٔاخَرِينَ

অতঃপর অপর দলটিকে ডুবিয়ে মারলাম।

إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

তোমার পালনকর্তা অবশ্যই পরাক্রমশালী, বড়ই দয়ালু।

وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ إِبْرَٰهِيمَ

ওদেরকে ইবরাহীমের বৃত্তান্ত শুনিয়ে দাও।

إِذْ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦ مَا تَعْبُدُونَ

যখন সে তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বলেছিল- ‘তোমরা কিসের ইবাদত কর?’

قَالُوا۟ نَعْبُدُ أَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عَـٰكِفِينَ

তারা বলেছিল- ‘আমরা মূর্তির পূজা করি, আর আমরা সদা সর্বদা তাদেরকে আঁকড়ে থাকি।’

قَالَ هَلْ يَسْمَعُونَكُمْ إِذْ تَدْعُونَ

ইবরাহীম বলল- ‘তোমরা যখন (তাদেরকে) ডাক তখন কি তারা তোমাদের কথা শোনে?

أَوْ يَنفَعُونَكُمْ أَوْ يَضُرُّونَ

কিংবা তোমাদের উপকার করে অথবা অপকার?’

قَالُوا۟ بَلْ وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا كَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ

তারা বলল- ‘না তবে আমরা আমাদের পিতৃদেরকে এরকম করতে দেখেছি।’

قَالَ أَفَرَءَيْتُم مَّا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ

সে বলল-তোমরা কি ভেবে দেখেছ তোমরা কিসের পূজা করে যাচ্ছ?

أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُمُ ٱلْأَقْدَمُونَ

তোমরা আর তোমাদের আগের পিতৃপুরুষরা?

فَإِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِّىٓ إِلَّا رَبَّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

তারা সবাই আমার শত্রু, বিশ্বজগতের পালনকর্তা ছাড়া।

ٱلَّذِى خَلَقَنِى فَهُوَ يَهْدِينِ

তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তিনিই আমাকে পথ দেখান।

وَٱلَّذِى هُوَ يُطْعِمُنِى وَيَسْقِينِ

আর তিনিই আমাকে খাওয়ান ও পান করান।

وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ

আর আমি যখন পীড়িত হই তখন তিনিই আমাকে আরোগ্য করেন।

وَٱلَّذِى يُمِيتُنِى ثُمَّ يُحْيِينِ

যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, পুনরায় আমাকে জীবিত করবেন।

وَٱلَّذِىٓ أَطْمَعُ أَن يَغْفِرَ لِى خَطِيٓـَٔتِى يَوْمَ ٱلدِّينِ

আর যিনি, আমি আশা করি- কিয়ামাতের দিন আমার দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন।

رَبِّ هَبْ لِى حُكْمًا وَأَلْحِقْنِى بِٱلصَّـٰلِحِينَ

হে আমার পালনকর্তা! আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অর্ন্তভুক্ত কর।

وَٱجْعَل لِّى لِسَانَ صِدْقٍ فِى ٱلْـَٔاخِرِينَ

এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর।

وَٱجْعَلْنِى مِن وَرَثَةِ جَنَّةِ ٱلنَّعِيمِ

এবং আমাকে নি‘য়ামাতপূর্ণ জান্নাতের উত্তরাধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত কর।

وَٱغْفِرْ لِأَبِىٓ إِنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلضَّآلِّينَ

আর তুমি আমার পিতাকে ক্ষমা কর, তিনি তো গুমরাহদের অর্ন্তভুক্ত।

وَلَا تُخْزِنِى يَوْمَ يُبْعَثُونَ

এবং পুনরুত্থান দিবসে আমাকে অপমানিত করো না।

يَوْمَ لَا يَنفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ

যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি কোন কাজে আসবে না।

إِلَّا مَنْ أَتَى ٱللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ

কেবল (সাফল্য লাভ করবে) সে ব্যক্তি যে বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট আসবে।

وَأُزْلِفَتِ ٱلْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ

আর জান্নাতকে মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হবে।

وَبُرِّزَتِ ٱلْجَحِيمُ لِلْغَاوِينَ

এবং পথভ্রষ্টদের সম্মুখে জাহান্নামকে উন্মোচিত করা হবে।

وَقِيلَ لَهُمْ أَيْنَ مَا كُنتُمْ تَعْبُدُونَ

আর তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যার ‘ইবাদাত করতে তারা কোথায়

مِن دُونِ ٱللَّهِ هَلْ يَنصُرُونَكُمْ أَوْ يَنتَصِرُونَ

আল্লাহকে বাদ দিয়ে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে কিংবা তাদের নিজেদেরকে সাহায্য করতে পারে?

فَكُبْكِبُوا۟ فِيهَا هُمْ وَٱلْغَاوُۥنَ

অতঃপর তাদেরকে ও পথভ্রষ্টদেরকে জাহান্নামে মুখের ভরে নিক্ষেপ করা হবে।

وَجُنُودُ إِبْلِيسَ أَجْمَعُونَ

আর ইবলীসের দলবল সবাইকে।

قَالُوا۟ وَهُمْ فِيهَا يَخْتَصِمُونَ

সেখানে তারা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে বলবে,

تَٱللَّهِ إِن كُنَّا لَفِى ضَلَـٰلٍ مُّبِينٍ

‘আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্য স্পষ্ট গুমরাহীতে ছিলাম।

إِذْ نُسَوِّيكُم بِرَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

যখন আমরা তোমাদেরকে সর্বজগতের পালনকর্তার সমকক্ষ স্থির করতাম।

وَمَآ أَضَلَّنَآ إِلَّا ٱلْمُجْرِمُونَ

অপরাধীরাই আমাদেরকে গোমরাহ্ করেছিল।

فَمَا لَنَا مِن شَـٰفِعِينَ

কাজেই আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই।

وَلَا صَدِيقٍ حَمِيمٍ

একজন অন্তরঙ্গ বন্ধুও নেই।

فَلَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَكُونَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ

আমাদের যদি একটিবার পৃথিবীতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ হত, তাহলে আমরা মু’মিনদের অর্ন্তভুক্ত হয়ে যেতাম।

إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

এতে অবশ্যই নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই ঈমান আনে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

তোমার প্রতিপালক, তিনি অবশ্যই মহা পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।

كَذَّبَتْ قَوْمُ نُوحٍ ٱلْمُرْسَلِينَ

নূহের কওম রসুলগণকে মিথ্যে ব’লে প্রত্যাখান করেছিল।

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ نُوحٌ أَلَا تَتَّقُونَ

যখন তাদের ভ্রাতা নূহ তাদেরকে বলেছিল- ‘তোমরা কি ভয় করবে না (আল্লাহকে)?

إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ

আমি তোমাদের জন্য (প্রেরিত) বিশ্বস্ত রাসুল।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমার অনুসরণ কর।

وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

আমি তার জন্য তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান একমাত্র বিশ্বজগতের প্রতিপালকের কাছেই আছে।’

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুসরণ কর।

۞ قَالُوٓا۟ أَنُؤْمِنُ لَكَ وَٱتَّبَعَكَ ٱلْأَرْذَلُونَ

তারা বলল- ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস করব যখন তোমার অনুসরণ করছে একেবারে নিম্নশ্রেণীর লোকেরা।’

قَالَ وَمَا عِلْمِى بِمَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ

নূহ বলল- ‘তারা কী করত সেটা আমার জানা নেই।

إِنْ حِسَابُهُمْ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّى ۖ لَوْ تَشْعُرُونَ

তাদের হিসাব নেয়া তো আমার প্রতিপালকের কাজ, যদি তোমরা বুঝতে!

وَمَآ أَنَا۠ بِطَارِدِ ٱلْمُؤْمِنِينَ

মু’মিনদেরকে তাড়িয়ে দেয়া আমার কাজ নয়।

إِنْ أَنَا۠ إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

আমি তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’

قَالُوا۟ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ يَـٰنُوحُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمَرْجُومِينَ

তারা বলল- ‘হে নূহ! তুমি যদি বিরত না হও, তাহলে তুমি নিশ্চিতই প্রস্তরাঘাতে নিহত হবে।’

قَالَ رَبِّ إِنَّ قَوْمِى كَذَّبُونِ

নূহ বলল- ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় আমাকে প্রত্যাখান করছে।

فَٱفْتَحْ بَيْنِى وَبَيْنَهُمْ فَتْحًا وَنَجِّنِى وَمَن مَّعِىَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ

কাজেই তুমি আমার ও তাদের মধ্যে ফয়সালা ক’রে দাও, আর আমাকে ও আমার সঙ্গী মু’মিনদেরকে ক্ষমা কর।’

فَأَنجَيْنَـٰهُ وَمَن مَّعَهُۥ فِى ٱلْفُلْكِ ٱلْمَشْحُونِ

অতঃপর আমি তাকে ও তার সঙ্গে যারা ছিল তাদেরকে বোঝাই নৌযানে রক্ষা করলাম।

ثُمَّ أَغْرَقْنَا بَعْدُ ٱلْبَاقِينَ

তারপর অবশিষ্ট সবাইকে ডুবিয়ে দিলাম।

إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

অবশ্যই এতে নিদর্শন আছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

তোমার প্রতিপালক, অবশ্যই তিনি প্রবল পরাক্রান্ত, পরম দয়ালু।

كَذَّبَتْ عَادٌ ٱلْمُرْسَلِينَ

‘আদ সম্প্রদায় রসূলগণকে মিথ্যে সাব্যস্ত করেছিল।

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ هُودٌ أَلَا تَتَّقُونَ

যখন তাদের ভাই হূদ তাদেরকে বলল- ‘তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?

إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ

আমি তোমাদের জন্য (প্রেরিত) এক বিশ্বস্ত রসুল।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে মান্য কর।

وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

আর এ জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান আছে কেবল বিশ্বজগতের প্রতিপালকের নিকট।

أَتَبْنُونَ بِكُلِّ رِيعٍ ءَايَةً تَعْبَثُونَ

তোমরা কি প্রতিটি উচ্চস্থানে অনর্থক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করছ?

وَتَتَّخِذُونَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمْ تَخْلُدُونَ

আর বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণ করছ. যেন তোমরা চিরদিন থাকবে?

وَإِذَا بَطَشْتُم بَطَشْتُمْ جَبَّارِينَ

আর যখন তোমরা (দুর্বল শ্রেণীর লোকদের উপর) আঘাত হান, তখন আঘাত হান নিষ্ঠুর মালিকের মত।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে মান্য কর।

وَٱتَّقُوا۟ ٱلَّذِىٓ أَمَدَّكُم بِمَا تَعْلَمُونَ

ভয় কর তাঁকে যিনি তোমাদেরকে যাবতীয় বস্তু দান করেছেন যা তোমাদের জানা আছে।

أَمَدَّكُم بِأَنْعَـٰمٍ وَبَنِينَ

যিনি তোমাদেরকে দান করেছেন গবাদি পশু ও সন্তান-সন্তুতি।

وَجَنَّـٰتٍ وَعُيُونٍ

আর উদ্যানরাজি ও ঝর্ণাসমূহ।

إِنِّىٓ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ

আমি তোমাদের জন্য মহা দিবসের শাস্তির ভয় করছি।’

قَالُوا۟ سَوَآءٌ عَلَيْنَآ أَوَعَظْتَ أَمْ لَمْ تَكُن مِّنَ ٱلْوَٰعِظِينَ

তারা বলল- ‘তুমি নসীহত কর আর না কর, আমাদের জন্য দু’ই সমান।

إِنْ هَـٰذَآ إِلَّا خُلُقُ ٱلْأَوَّلِينَ

এসব (কথাবার্তা বলা) পূর্ববর্তী লোকেদের অভ্যাস ছাড়া আর অন্য কিছুই না।

وَمَا نَحْنُ بِمُعَذَّبِينَ

আমাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে না।’

فَكَذَّبُوهُ فَأَهْلَكْنَـٰهُمْ ۗ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

অতঃপর তারা তাকে মিথ্যে ব’লে প্রত্যাখ্যান করল। তখন আমি তাদেরকে ধ্বংস করে দিলাম। অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

এবং তোমার প্রতিপালক, তিনি মহা প্রতাপশালী, বড়ই দয়ালু।

كَذَّبَتْ ثَمُودُ ٱلْمُرْسَلِينَ

সামূদ জাতি রসূলগণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ صَـٰلِحٌ أَلَا تَتَّقُونَ

যখন তাদের ভাই সালিহ তাদেরকে বলেছিল- তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?

إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ

আমি তোমাদের জন্য (প্রেরিত) বিশ্বস্ত রসূল।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমাকে মান্য কর।

وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

আর এজন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো আছে একমাত্র বিশ্বজগতের প্রতিপালকের নিকট।

أَتُتْرَكُونَ فِى مَا هَـٰهُنَآ ءَامِنِينَ

তোমাদেরকে কি এখানে যে সব (ভোগ বিলাস) আছে তাতেই নিরাপদে রেখে দেয়া হবে?

فِى جَنَّـٰتٍ وَعُيُونٍ

উদ্যানরাজি আর ঝার্ণাসমূহে।

وَزُرُوعٍ وَنَخْلٍ طَلْعُهَا هَضِيمٌ

আর শষ্যক্ষেতে ও ফুলে আচ্ছাদিত (ফলে ভারাক্রান্ত) খেজুর বাগানে?

وَتَنْحِتُونَ مِنَ ٱلْجِبَالِ بُيُوتًا فَـٰرِهِينَ

এবং তোমরা দক্ষতার সাথে পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করছ।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমাকে মান্য কর।

وَلَا تُطِيعُوٓا۟ أَمْرَ ٱلْمُسْرِفِينَ

এবং সীমালঙ্ঘনকারীদের নির্দেশ মান্য কর না।

ٱلَّذِينَ يُفْسِدُونَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَا يُصْلِحُونَ

যারা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, সংস্কার করে না।’

قَالُوٓا۟ إِنَّمَآ أَنتَ مِنَ ٱلْمُسَحَّرِينَ

তারা বলল- ‘তুমি তো কেবল যাদুগ্রস্তদের একজন।

مَآ أَنتَ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا فَأْتِ بِـَٔايَةٍ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِينَ

তুমি আমাদের মত মানুষ ছাড়া আর কিছুই না। কাজেই তুমি সত্যবাদী হলে একটা নিদর্শন হাজির কর।

قَالَ هَـٰذِهِۦ نَاقَةٌ لَّهَا شِرْبٌ وَلَكُمْ شِرْبُ يَوْمٍ مَّعْلُومٍ

সালিহ বলল- ‘এই একটি উটনি, এর জন্য আছে পানি পানের পালা আর তোমাদের জন্য আছে পানি পানের পালা নির্ধারিত দিনে।

وَلَا تَمَسُّوهَا بِسُوٓءٍ فَيَأْخُذَكُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَظِيمٍ

অনিষ্ট সাধনের নিমিত্তে তাকে স্পর্শ কর না, তাহলে তোমাদেরকে মহা দিবসের আযাব পাকড়াও করবে।

فَعَقَرُوهَا فَأَصْبَحُوا۟ نَـٰدِمِينَ

কিন্তু তারা তাকে বধ করল, ফলে তারা অনুতপ্ত হল।

فَأَخَذَهُمُ ٱلْعَذَابُ ۗ إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

অতঃপর আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

আর তোমার প্রতিপালক তিনি তো মহা পরাক্রমশালী, বড়ই দয়ালু।

كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوطٍ ٱلْمُرْسَلِينَ

লূতের সম্প্রদায় রসুলদেরকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذْ قَالَ لَهُمْ أَخُوهُمْ لُوطٌ أَلَا تَتَّقُونَ

যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বলেছিল- ‘তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?

إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ

আমি তো তোমাদের জন্য (প্রেরিত) একজন বিশ্বস্ত রসূল।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমাকে মান্য কর।

وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

আমি এজন্য তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান একমাত্র জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে।

أَتَأْتُونَ ٱلذُّكْرَانَ مِنَ ٱلْعَـٰلَمِينَ

জগতের সকল প্রাণীর মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের সঙ্গে উপগত হও,

وَتَذَرُونَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُم مِّنْ أَزْوَٰجِكُم ۚ بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ عَادُونَ

এবং তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্য যে স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে ত্যাগ কর? রবং তোমরা এক সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়।’

قَالُوا۟ لَئِن لَّمْ تَنتَهِ يَـٰلُوطُ لَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمُخْرَجِينَ

তারা বলল- ‘হে লূত! তুমি যদি বিরত না হও তবে তুমি অবশ্য অবশ্যই বহিস্কৃত হবে।’

قَالَ إِنِّى لِعَمَلِكُم مِّنَ ٱلْقَالِينَ

লূত বলল- ‘আমি তোমাদের এ কাজকে ঘৃণা করি।

رَبِّ نَجِّنِى وَأَهْلِى مِمَّا يَعْمَلُونَ

হে আমার প্রতিপালক! তারা যা করে তা থেকে তুমি আমাকে ও আমার পরিবারবর্গকে রক্ষা কর।’

فَنَجَّيْنَـٰهُ وَأَهْلَهُۥٓ أَجْمَعِينَ

অতঃপর আমি তাকে ও তার পরিবারবর্গের সকলকে রক্ষা করলাম

إِلَّا عَجُوزًا فِى ٱلْغَـٰبِرِينَ

এক বৃদ্ধা ছাড়া। সে ছিল পেছনে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

ثُمَّ دَمَّرْنَا ٱلْـَٔاخَرِينَ

অতঃপর অন্যদের সকলকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিলাম।

وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًا ۖ فَسَآءَ مَطَرُ ٱلْمُنذَرِينَ

তাদের উপর বর্ষণ করলাম (শাস্তির) বৃষ্টি, ভয় প্রদর্শিতদের জন্য এ বৃষ্টি ছিল কতই না মন্দ!

إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

তোমার প্রতিপালক, তিনি মহা প্রতাপশালী, বড়ই দয়ালু।

كَذَّبَ أَصْحَـٰبُ لْـَٔيْكَةِ ٱلْمُرْسَلِينَ

বনের অধিবাসীরা রসূলদেরকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

إِذْ قَالَ لَهُمْ شُعَيْبٌ أَلَا تَتَّقُونَ

যখন শু‘আয়ব তাদেরকে বলেছিল- ‘তোমরা কি (আল্লাহকে) ভয় করবে না?

إِنِّى لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ

আমি তোমাদের জন্য (প্রেরিত) বিশ্বস্ত রাসুল।

فَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُونِ

কাজেই তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে মান্য কর।

وَمَآ أَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ ۖ إِنْ أَجْرِىَ إِلَّا عَلَىٰ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

এ জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আমার প্রতিদান তো রয়েছে একমাত্র জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট।

۞ أَوْفُوا۟ ٱلْكَيْلَ وَلَا تَكُونُوا۟ مِنَ ٱلْمُخْسِرِينَ

মাপে পূর্ণ মাত্রায় দাও আর যারা মাপে কম দেয় তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

وَزِنُوا۟ بِٱلْقِسْطَاسِ ٱلْمُسْتَقِيمِ

সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করবে।

وَلَا تَبْخَسُوا۟ ٱلنَّاسَ أَشْيَآءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا۟ فِى ٱلْأَرْضِ مُفْسِدِينَ

মানুষকে তাদের প্রাপ্যবস্তু কম দিবে না। আর পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না।

وَٱتَّقُوا۟ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ وَٱلْجِبِلَّةَ ٱلْأَوَّلِينَ

এবং ভয় কর তাঁকে যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তী বংশাবলীকে সৃষ্টি করেছেন।’

قَالُوٓا۟ إِنَّمَآ أَنتَ مِنَ ٱلْمُسَحَّرِينَ

তারা বলল- ‘তুমি তো কেবল যাদুগ্রস্তদের একজন।

وَمَآ أَنتَ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَإِن نَّظُنُّكَ لَمِنَ ٱلْكَـٰذِبِينَ

তুমি আমাদের মতই মানুষ বৈ নও, আমরা মনে করি তুমি অবশ্য মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।

فَأَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ إِن كُنتَ مِنَ ٱلصَّـٰدِقِينَ

তুমি সত্যবাদী হলে আকাশের এক টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও।’

قَالَ رَبِّىٓ أَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُونَ

শু‘আয়ব বলল- ‘তোমরা যা কর, আমার প্রতিপালক সে সম্পর্কে বেশি অবগত।’

فَكَذَّبُوهُ فَأَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ ٱلظُّلَّةِ ۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ

কিন্তু তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল। ফলে তাদেরকে এক মেঘাচ্ছন্ন দিবসের শাস্তি পাকড়াও করল। তা ছিল এক মহা দিবসের ‘আযাব।

إِنَّ فِى ذَٰلِكَ لَـَٔايَةً ۖ وَمَا كَانَ أَكْثَرُهُم مُّؤْمِنِينَ

এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلرَّحِيمُ

আর তোমার প্রতিপালক, তিনি অবশ্যই মহা প্রতাপশালী, বড়ই দয়ালু।

وَإِنَّهُۥ لَتَنزِيلُ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ

অবশ্যই এ কুরআন জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট হতে অবতীর্ণ।

نَزَلَ بِهِ ٱلرُّوحُ ٱلْأَمِينُ

বিশ্বস্ত আত্মা (জিবরাঈল) একে নিয়ে অবতরণ করেছে

عَلَىٰ قَلْبِكَ لِتَكُونَ مِنَ ٱلْمُنذِرِينَ

তোমার অন্তরে যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।

بِلِسَانٍ عَرَبِىٍّ مُّبِينٍ

সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।

وَإِنَّهُۥ لَفِى زُبُرِ ٱلْأَوَّلِينَ

পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেও নিশ্চয় এর উল্লেখ আছে।

أَوَلَمْ يَكُن لَّهُمْ ءَايَةً أَن يَعْلَمَهُۥ عُلَمَـٰٓؤُا۟ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ

এটা কি তাদের জন্য নিদর্শন নয় যে, বানী ইসরাঈলের পন্ডিতগণ তা জানত (যে তা সত্য)।

وَلَوْ نَزَّلْنَـٰهُ عَلَىٰ بَعْضِ ٱلْأَعْجَمِينَ

আমি যদি তা কোন অনারবের প্রতি অবতীর্ণ করতাম,

فَقَرَأَهُۥ عَلَيْهِم مَّا كَانُوا۟ بِهِۦ مُؤْمِنِينَ

অতঃপর সে তা তাদের নিকট পাঠ করত, তাহলে তারা তাতে বিশ্বাস আনত না।

كَذَٰلِكَ سَلَكْنَـٰهُ فِى قُلُوبِ ٱلْمُجْرِمِينَ

এভাবে আমি অপরাধীদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।

لَا يُؤْمِنُونَ بِهِۦ حَتَّىٰ يَرَوُا۟ ٱلْعَذَابَ ٱلْأَلِيمَ

তারা এর প্রতি ঈমান আনবে না যতক্ষণ না তারা ভয়াবহ শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।

فَيَأْتِيَهُم بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ

কাজেই তা তাদের কাছে হঠাৎ এসে পড়বে, তারা কিছুই বুঝতে পারবে না।

فَيَقُولُوا۟ هَلْ نَحْنُ مُنظَرُونَ

তারা তখন বলবে- ‘আমাদেরকে কি অবকাশ দেয়া হবে?’

أَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُونَ

তারা কি আমার শাস্তি দ্রুত কামনা করে?

أَفَرَءَيْتَ إِن مَّتَّعْنَـٰهُمْ سِنِينَ

তুমি কি ভেবে দেখেছ আমি যদি তাদেরকে কতক বছর ভোগ বিলাস করতে দেই,

ثُمَّ جَآءَهُم مَّا كَانُوا۟ يُوعَدُونَ

অতঃপর তাদেরকে যে বিষয়ের ও‘য়াদা দেয়া হত তা তাদের কাছে এসে পড়ে।

مَآ أَغْنَىٰ عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يُمَتَّعُونَ

তখন তাদের বিলাসের সামগ্রী তাদের কোন উপকারে আসবে না।

وَمَآ أَهْلَكْنَا مِن قَرْيَةٍ إِلَّا لَهَا مُنذِرُونَ

আমি এমন কোন জনপদ ধ্বংস করিনি যার জন্য কোন ভয় প্রদর্শনকারী ছিল না

ذِكْرَىٰ وَمَا كُنَّا ظَـٰلِمِينَ

স্মরণ করানোর জন্য। আমি কখনো অন্যায়কারী নই।

وَمَا تَنَزَّلَتْ بِهِ ٱلشَّيَـٰطِينُ

শয়ত্বানরা তা (অর্থাৎ কুরআন) নিয়ে অবতরণ করেনি।

وَمَا يَنۢبَغِى لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ

তারা এ কাজের যোগ্য নয় আর তারা এর সামর্থ্যও রাখে না।

إِنَّهُمْ عَنِ ٱلسَّمْعِ لَمَعْزُولُونَ

তাদেরকে এটা শোনা থেকে অবশ্যই দূরে রাখা হয়েছে।

فَلَا تَدْعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَـٰهًا ءَاخَرَ فَتَكُونَ مِنَ ٱلْمُعَذَّبِينَ

কাজেই তুমি অন্য কোন ইলাহ্কে আল্লাহর সঙ্গে ডেক না। ডাকলে তুমি শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ ٱلْأَقْرَبِينَ

আর তুমি সতর্ক কর তোমার নিকটাত্মীয় স্বজনদের

وَٱخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلْمُؤْمِنِينَ

যে সকল বিশ্বাসীরা তোমার আনুগত্য করে তাদের জন্য তুমি তোমার অনুকম্পার বাহু প্রসারিত কর।

فَإِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ إِنِّى بَرِىٓءٌ مِّمَّا تَعْمَلُونَ

তারা যদি তোমার অবাধ্যতা করে তাহলে তুমি বলে দাও- তোমরা যা কর তার সঙ্গে আমি সম্পর্কহীন।

وَتَوَكَّلْ عَلَى ٱلْعَزِيزِ ٱلرَّحِيمِ

আর তুমি প্রবল পরাক্রান্ত পরম দয়ালুর উপর নির্ভর কর;

ٱلَّذِى يَرَىٰكَ حِينَ تَقُومُ

যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (নামাযের জন্য) দন্ডায়মান হও।

وَتَقَلُّبَكَ فِى ٱلسَّـٰجِدِينَ

আর (তিনি দেখেন) সাজদাকারীদের সঙ্গে তোমার চলাফিরা।

إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ

তিনি সব কিছু শোনেন, সব কিছু জানেন।

هَلْ أُنَبِّئُكُمْ عَلَىٰ مَن تَنَزَّلُ ٱلشَّيَـٰطِينُ

আমি কি তোমাদেরকে জানাব কাদের নিকট শয়ত্বানরা অবতীর্ণ হয়।

تَنَزَّلُ عَلَىٰ كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ

তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেকটি চরম মিথ্যুক ও পাপীর নিকট।

يُلْقُونَ ٱلسَّمْعَ وَأَكْثَرُهُمْ كَـٰذِبُونَ

ওরা কান পেতে থাকে আর তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।

وَٱلشُّعَرَآءُ يَتَّبِعُهُمُ ٱلْغَاوُۥنَ

বিভ্রান্তরাই কবিদের অনুসরণ করে,

أَلَمْ تَرَ أَنَّهُمْ فِى كُلِّ وَادٍ يَهِيمُونَ

তুমি কি দেখ না যে, তারা প্রতি ময়দানেই উদভ্রান্ত হয়ে ফিরে?

وَأَنَّهُمْ يَقُولُونَ مَا لَا يَفْعَلُونَ

আর তারা যা বলে তা তারা নিজেরা করে না।

إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَذَكَرُوا۟ ٱللَّهَ كَثِيرًا وَٱنتَصَرُوا۟ مِنۢ بَعْدِ مَا ظُلِمُوا۟ ۗ وَسَيَعْلَمُ ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓا۟ أَىَّ مُنقَلَبٍ يَنقَلِبُونَ

কিন্তু ওরা ব্যতীত যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে আর আল্লাহকে খুব বেশি স্মরণ করে আর নির্যাতিত হওয়ার পর নিজেদের প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করে। যালিমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কোন্ (মহা সংকটময়) জায়গায় তারা ফিরে যাচ্ছে।