পাহাড়
وَٱلطُّورِ
শপথ তূর (পর্বত) এর,
وَكِتَـٰبٍ مَّسْطُورٍ
শপথ কিতাবের যা লিখিত
فِى رَقٍّ مَّنشُورٍ
খোলা পৃষ্ঠায়,
وَٱلْبَيْتِ ٱلْمَعْمُورِ
শপথ বেশি বেশি আবাদকৃত ঘরের,
وَٱلسَّقْفِ ٱلْمَرْفُوعِ
শপথ সুউচ্চ ছাদের,
وَٱلْبَحْرِ ٱلْمَسْجُورِ
শপথ তরঙ্গায়িত সমুদ্রের,
إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَٰقِعٌ
তোমার প্রতিপালকের ‘আযাব অবশ্যই সংঘটিত হবে।
مَّا لَهُۥ مِن دَافِعٍ
তার প্রতিরোধকারী কেউ নেই।
يَوْمَ تَمُورُ ٱلسَّمَآءُ مَوْرًا
যেদিন আকাশ প্রচন্ডভাবে কাঁপবে,
وَتَسِيرُ ٱلْجِبَالُ سَيْرًا
আর পর্বত হবে দ্রুত চলমান,
فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ
ধ্বংস সেদিন সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য।
ٱلَّذِينَ هُمْ فِى خَوْضٍ يَلْعَبُونَ
যারা নিরর্থক কথার খেলায় মগ্ন আছে।
يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَىٰ نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
যেদিন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে তাড়িয়ে নেয়া হবে ধাক্কাতে ধাক্কাতে,
هَـٰذِهِ ٱلنَّارُ ٱلَّتِى كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
(বলা হবে) এটা হল জাহান্নামের সেই আগুন তোমরা যাকে মিথ্যে জানতে।
أَفَسِحْرٌ هَـٰذَآ أَمْ أَنتُمْ لَا تُبْصِرُونَ
এটা কি যাদু, নাকি তোমরা দেখতে পাচ্ছ না?
ٱصْلَوْهَا فَٱصْبِرُوٓا۟ أَوْ لَا تَصْبِرُوا۟ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْ ۖ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
এখন এর ভিতর জ্বলতে থাক, অতঃপর ধৈর্য ধর কিংবা ধৈর্য না ধর, তোমাদের জন্য দুই-ই সমান। তোমাদেরকে সেই প্রতিফলই দেয়া হবে যা তোমরা ‘আমাল করতে।
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّـٰتٍ وَنَعِيمٍ
মুত্তাক্বীরা থাকবে জান্নাতে আর নি‘মাত সম্ভারের মাঝে,
فَـٰكِهِينَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَىٰهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ
তারা ভোগ করবে তাদের প্রতিপালক যা তাদেরকে দিবেন, আর তাদের প্রতিপালক তাদেরকে জাহান্নামের ‘আযাব থেকে রক্ষা করবেন।
كُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ هَنِيٓـًٔۢا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
(তাদেরকে বলা হবে) খাও আর পান কর খুব মজা করে- তোমরা যে ‘আমাল করতে তার প্রতিফল হিসেবে।
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍ ۖ وَزَوَّجْنَـٰهُم بِحُورٍ عِينٍ
তারা সারিবদ্ধভাবে সাজানো আসনে হেলান দিয়ে বসবে, আর আমি তাদের বিয়ে দিয়ে দেব সুন্দর বড় বড় উজ্জ্বল চক্ষু বিশিষ্টা কুমারীদের সঙ্গে।
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَـٰنٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَآ أَلَتْنَـٰهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَىْءٍ ۚ كُلُّ ٱمْرِئٍۭ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
যারা ঈমান আনে আর তাদের সন্তান সন্ততিরা ঈমানের সাথে পিতামাতাকে অনুসরণ করে, আমি তাদের সাথে তাদের সন্তান সন্ততিকে মিলিত করব। তাদের ‘আমালের কোন কিছু থেকেই আমি তাদেরকে বঞ্চিত করব না। প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়বদ্ধ।
وَأَمْدَدْنَـٰهُم بِفَـٰكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
আমি তাদেরকে দিব ফলমূল আর গোশত যা তারা পছন্দ করবে।
يَتَنَـٰزَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ
তারা সেখানে পরস্পরের মধ্যে বিনিময় করবে পানপাত্র, থাকবে না সেখানে কোন বেহুদা বকবকানি, থাকবে না কোন পাপের কাজ।
۞ وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ
তাদের চতুর্দিকে ঘুর ঘুর ক’রে তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে কিশোরেরা (যারা এতই সুন্দর) যেন সযত্নে লুকিয়ে রাখা মণিমুক্তা।
وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَآءَلُونَ
তারা পরস্পরের নিকট এগিয়ে গিয়ে একে অপরকে জিজ্ঞেস করবে,
قَالُوٓا۟ إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِىٓ أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ
তারা বলবে, ‘পূর্বে আমরা আমাদের পরিবারে (দুনিয়াবী নানা কারণে ও আখিরাতের ‘আযাবের আশংকায়) ভয় ভীতির মধ্যে ছিলাম।
فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَىٰنَا عَذَابَ ٱلسَّمُومِ
অবশেষে আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন আর আমাদেরকে ঝলসে দেয়া বাতাসের ‘আযাব থেকে রক্ষা করেছেন।
إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُ ۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْبَرُّ ٱلرَّحِيمُ
পূর্বে আমরা তাঁর কাছেই দু‘আ করতাম, তিনি অতি অনুগ্রহকারী, পরম দয়াবান।
فَذَكِّرْ فَمَآ أَنتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ
কাজেই তুমি উপদেশ দিতে থাক, তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি গণকও নও, আর পাগলও নও।
أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهِۦ رَيْبَ ٱلْمَنُونِ
তারা কি বলে সে একজন কবি, যার জন্য আমরা কালচক্রের (বিপদাপদের) অপেক্ষা করছি।
قُلْ تَرَبَّصُوا۟ فَإِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُتَرَبِّصِينَ
ওদেরকে বল- তোমরা অপেক্ষা কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে অপেক্ষা করছি। (অতঃপর উভয় পক্ষই দেখতে পাবে কার কী পরিণতি হয়)।
أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَـٰمُهُم بِهَـٰذَآ ۚ أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
তাদের বুদ্ধি বিবেক কি তাদেরকে এ নির্দেশ দেয়, নাকি তারা মূলতঃই এক সীমালঙ্ঘনকারী জাতি?
أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُۥ ۚ بَل لَّا يُؤْمِنُونَ
তারা কি বলে- ‘সে নিজেই (কুরআন) রচনা করে নিয়েছে? আসলে তারা ঈমানই আনেনি।
فَلْيَأْتُوا۟ بِحَدِيثٍ مِّثْلِهِۦٓ إِن كَانُوا۟ صَـٰدِقِينَ
তারা সত্যবাদী হলে এ রকম একটা কালাম তারা নিয়ে আসুক না কেন।
أَمْ خُلِقُوا۟ مِنْ غَيْرِ شَىْءٍ أَمْ هُمُ ٱلْخَـٰلِقُونَ
তারা কি সৃষ্টি হয়েছে, নাকি তারা নিজেরাই সৃষ্টিকর্তা?
أَمْ خَلَقُوا۟ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ ۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ
নাকি তারা আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? আসলে তারা নিশ্চিত বিশ্বাসী নয়।
أَمْ عِندَهُمْ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ ٱلْمُصَۣيْطِرُونَ
নাকি তোমার প্রতিপালকের ধনভান্ডারগুলো তাদের হাতে, না তারা এর নিয়ন্ত্রক?
أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِ ۖ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُم بِسُلْطَـٰنٍ مُّبِينٍ
নাকি তাদের কাছে, সিঁড়ি আছে যাতে তারা (আকাশে উঠে যায় আর গোপন কথা) শুনে থাকে? থাকলে তাদের (সেই) শ্রোতা স্পষ্ট প্রমাণ হাজির করুক।
أَمْ لَهُ ٱلْبَنَـٰتُ وَلَكُمُ ٱلْبَنُونَ
নাকি আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান, আর তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান?
أَمْ تَسْـَٔلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
নাকি তুমি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চাচ্ছ, যার ফলে তারা ঋণে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছে?
أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
নাকি তাদের কাছে অদৃশ্যের জ্ঞান আছে, আর তারা তা লিখছে?
أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًا ۖ فَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ هُمُ ٱلْمَكِيدُونَ
নাকি তারা (তোমার বিরুদ্ধে) চক্রান্ত করতে চায়? তাহলে কিন্তু কাফিররাই চক্রান্তের ফাঁদে আটকা পড়বে।
أَمْ لَهُمْ إِلَـٰهٌ غَيْرُ ٱللَّهِ ۚ سُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
নাকি আল্লাহ ছাড়া তাদের জন্য ইলাহ্ আছে? তারা যাকে শরীক গণ্য করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র।
وَإِن يَرَوْا۟ كِسْفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ سَاقِطًا يَقُولُوا۟ سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
আকাশের কোন খন্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলে তারা বলত- ‘এটা তো পুঞ্জীভূত মেঘ। (তাদেরকে আল্লাহর যতই বিস্ময়কর নিদর্শন দেখানো হোক না কেন, তারা ঈমান আনবে না।)
فَذَرْهُمْ حَتَّىٰ يُلَـٰقُوا۟ يَوْمَهُمُ ٱلَّذِى فِيهِ يُصْعَقُونَ
কাজেই তাদেরকে উপেক্ষা কর যতক্ষণ না তারা সাক্ষাৎ করে তাদের সেদিনের যেদিন তারা হবে বজ্রাহত।
يَوْمَ لَا يُغْنِى عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْـًٔا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
সেদিন তাদের ষড়যন্ত্র তাদের কোন কাজে আসবে না, আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।
وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ عَذَابًا دُونَ ذَٰلِكَ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
যালিমদের জন্য এছাড়া আরো ‘আযাব রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
وَٱصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا ۖ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ
তুমি ধৈর্য ধরে তোমার প্রতিপালকের হুকুমের অপেক্ষায় থাক, কারণ তুমি আমার চোখের সামনেই আছ। আর তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা ঘোষণা কর যখন তুমি উঠ (মাজলিস শেষে, অথবা বিছানা ছেড়ে কিংবা নামাযের জন্য)।
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَـٰرَ ٱلنُّجُومِ
আর রাত্রিকালে তাঁর প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা কর আর (রাতের শেষভাগে যখন) তারকারাজি অস্তমিত হয়ে যায়।